সরকারি টাকায় মসজিদ-মাদ্রাসা হতে পারে না: শাহরিয়ার কবির

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি

সরকারের ‘মডেল মসজিদ’ প্রকল্পের সমালোচনা করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, সরকারিভাবে কখনো মসজিদ-মাদ্রাসা হয় না। ইসলামে আছে মসজিদ করবে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। সরকারের টাকায় দেশে মাদ্রাসা হতে পারে না। এটা সংবিধানেও নেই, ইসলামেও নেই। চট্টগ্রামের মুসলিম ইন্সটিটিউট হলে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘দুই জেনারেল’ এর কাজের ফল পুরো জাতি ভোগ করছে দাবি করে শাহরিয়ার কবির বলেন, একাত্তরে কী আমরা যুদ্ধ করেছি স্বাধীন বাংলাদেশে ‘রাষ্ট্রধর্ম’ রাখার জন্য? এখনো যদি রাষ্ট্রধর্ম থাকে তাহলে পাকিস্তান ভাঙ্গার কী দরকার ছিল?

তিনি বলেন, সবাই ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে, কে করছে না? বরং এ নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে। মৌলবাদী চেতনা বিস্তারের ক্ষেত্র তৈরি করছেন আর দাবি করবেন মৌলবাদ-সন্ত্রাসবাদ নেই, তা তো হয় না।”

শাহরিয়ার কবির বলেন, অনেকের জন্য নির্বাচন উৎসবমুখর। কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য নির্বাচন উৎসবের নয়, আতঙ্কের। অতীতেও নির্বাচনের পর তারা সহিংসতার শিকার হয়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ২০১৮ সালে বেশি সহিংসতা হবে। এর শিকার হবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।

আশঙ্কার কথা বলছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখিনি। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আমরা বলেছি। এটা তাদেরই নিশ্চিত করতে হবে যেন একটিও সহিংসতার ঘটনা না ঘটে। সবাই বলছে প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচনের কথা। ষড়যন্ত্র হচ্ছে, বলা হচ্ছে- বিএনপি-জামায়াত না এলে ইনক্লুসিভ নির্বাচন হবে না।

আমি প্রশ্ন করি এই দুই কোটি সংখ্যালঘু মানুষকে বাদ দিয়ে কিভাবে ইনক্লুসিভ নির্বাচন হবে? সরকারের উদ্দেশ্যে শাহরিয়ার কবির বলেন, চার মূলনীতি রাখবেন আবার রাষ্ট্রধর্মও রাখবেন, তা হবে না। গোঁজামিল দিয়ে বাংলাদেশ চলবে না। যতই আস্থাভাজন হতে চান বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত আপনাদের ভোট দেবে না। কারণ আওয়ামী লীগ পাকিস্তান ভেঙ্গেছে।

আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, আমাদের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাও আছে আবার ধর্মতন্ত্রও আছে। সংবিধানকে হিপোক্রেটিক রূপে রেখে দেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে প্রচার করা হাস্যকর ও প্রতারণার সামিল। ৪৭ বছর পর আমরা অস্তিত্বের সংকটে পড়েছি। কারণ এই দেশে কোনো রাজনৈতিক দলের ওপর ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা আস্থা রাখতে পারছে না।

তিনি বলেন, আমাদের ৫ দফা ও ৭ দফা দলগুলোকে নির্বাচনী ইশতেহারে রাখতে হবে। যে দল রাখবে তাদের ভোট দেব। যদি কেউই তা পূরণে প্রতিশ্র“তি না দেয় তাহলে ভোট বর্জন ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।