ধর্মসভার কোটি টাকা আত্মসাৎ, ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

follow-upnews
0 0

বগুড়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে উন্নয়নের নামে সরকারি বরাদ্দ এবং বিভিন্ন খাতের কোটির অধিক টাকা আত্মসাৎ করায় শহরের জলেশ্বরীতলায় হিন্দু ধর্মসভা পরিচালনা কমিটির ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নূর আলম মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে এ মামলা করেন।

আসামিরা হলেন- হিন্দু ধর্মসভার পরিচালনা কমিটির সদস্য বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলার মৃত তুলশীরাম বাহাদুর ছেত্রীর ছেলে হরিলাল বাহাদুর ছেত্রী (৫৮), একই এলাকার মৃত হরি লাহিড়ীর ছেলে সৌমা লাহিড়ী (৪৯), মৃত বাঁধন কুমার দাসের ছেলে অজয় কুমার দাস (৪৭), জয়পুরপাড়ার মৃত সুভাষ চন্দ্র রায়ের ছেলে দেবাশীষ রায় (৫০), জলেশ্বরীতলার প্রফুল্ল কুমার সাহার ছেলে প্রদীপ কুমার সাহা (৪৮) ও মৃত অরবিন্দ সিনহার ওরফে মটরবলের মেয়ে অদিতী সিনহা ওরফে আগমনী (৪৬)।

বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন, বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলায় কালী মন্দির নামক স্থানে হিন্দু ধর্মসভা নামে একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে সাড়ে ২২ শতাংশ সম্পত্তিতে ২০টি দোকান ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া হয়। এ ভাড়ার টাকা ধর্মসভার ফান্ডে জমা হয়। পুরোহিত থাকা সত্ত্বেও সাবেক কমিটির কোষাধ্যক্ষ ২ নম্বর আসামি সৌমা লাহিড়ী নিজে পুরোহিত সেজে প্রতি সপ্তাহে শ্রী শ্রী শনি দেবীর পূজা পরিচালনা করেন। মাসে ১৫ হাজার টাকা হিসেবে দশ বছরে প্রায় ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।

১ নম্বর আসামি ধর্মসভার সাবেক সাধারণ সম্পাদক হরিলাল বাহাদুর ছেত্রী বগুড়া জেলা পরিষদের মাস্টার রোলে নৈশ প্রহরী। ৩ নম্বর আসামি অজয় কুমার দাস সাবেক সদস্য। আসামিরা সুকৌশলে ও ইচ্ছামত হিন্দু ধর্মসভার পরিচালনা করেন। কমিটির সদস্য নিখিল চন্দ্র কর্মকার গত ২০১১ সালের ৪ এপ্রিল জেলা পরিষদের সরকারি তহবিল/ফান্ডের রাজস্ব খাত থেকে ৩০ হাজার ২৫০ টাকা, ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর ৬১ হাজার ৫০০ টাকাসহ মোট ৯১ হাজার ৭৫০ টাকা নেন।

১ নম্বর আসামি হরিলাল বাহাদুর ছেত্রী জেলা পরিষদের ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মন্দির উন্নয়নের নামে জেলা পরিষদের এডিপি খাত হতে ছয়টি বরাদ্দ উত্তোলন করে নয় লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। হিন্দু ধর্মসভার জমিতে নির্মিত তিনতলা ভবনের ২০টি দোকানের ১০ বছরে ভাড়া বাবদ ১৯ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য উন্নয়নের নামে মোট এক কোটি ছয় লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

এ ব্যাপারে শহরের জলেশ্বরীতলার অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাসুদেব চন্দ্র বর্মণ গত ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করতে দুদক প্রধান কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়। আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে উল্লিখিত অংকের টাকা আত্মসাৎ করায় মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ে মামলা করা হয়।

বাদী দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নূর আলম জানান, বুধবার এজাহারটি আদালতে প্রেরণ করা হবে।


নিউজটি ৫ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

Next Post

কক্সবাজারে কর্মচারী সমিতির নামে গণপূর্তের ৩০ শতাংশ জমি দখল

কক্সবাজার বনবিভাগ ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের (এসপি) মাঝামাঝি এলাকায় গণপূর্ত বিভাগের প্রায় ৩০ শতাংশ মূল্যবান জমি দখল করে দোকানপাট ও বাড়িঘর নির্মাণ করেছেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে গত সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সেখানে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের […]
জমিদখল