তবু তুমি থাকো আমার প্রতিটি নিঃশ্বাসে // শেকস্ রাসেল

শাহিদা সুলতানা
সব চেষ্টা বিফলে যায়,
কেন যে মানুষ
এভাবে নিজেকে হারায়!
আতিপাতি করে খুঁজে বেড়াই,
এই অসময়, তোমায়।
ঘুম চাইলেই তুমি আসো,
তোমাকে চাইলে শূন্যতা আসে,
সত্য এসে চোখ রাঙায়,
তুমি কোথায়, আর আমি কোথায়!
কাল থেকে অফিসে যাব,
ভাত কাপড়ের কাজে ডুব দিলে
নিশ্চয়ই তোমাকে ভুলে যাব।
ভুলতে হবে, ভুলতে চাই,
এভাবে আর নয়—
মানুষের এমনও হয়!
তোমাকে ঘিরে
অদ্ভুত সব চিন্তার কারখানা,
কত কী যে আকাশ কুসুম কল্পনা!
এ এক নতুন সত্তা,
মরুভূমিও তবে হতে পারে
তোমায় দেখে এমন প্রমত্তা!
কালকে স্বপ্নে তোমায় বলেছিলাম,
চলো পালাই!
জেগে উঠে আমি হেসে আর নাই।
কী খাও, কী পরো,
ঘুমাও, নাকি জেগে থাকো,
অন্ধকারে, নাকি আলোতে,
কথা বলছো, নাকি চুপ করে আছো,
ভাবছো, নাকি ভাবলেশহীন হয়ে
জানালার বাইরে তাকাচ্ছো—
এইসব সাত সতেরো,
তুমি বলতে পারো
আমার বয়স কি মাত্র আঠারো?
তুমি কি সবসময় শাড়ি পরো?
আটপৌর শাড়ীতে
তোমায় কেমন দেখায়?
শাড়িটা যখন অনিয়মে
এমনি পেঁচিয়ে পরো
তখন তোমায় কেমন দেখায়?
চুল বাঁধলে কেমন দেখায়,
ভাঙলে কেমন দেখায়,
রাগ হলে কেমন দেখায়, দুঃখ হলে?
আচ্ছা তোমার কী কান্না পায়?
কাঁদলে কেমন দেখায়?
শত শত প্রশ্ন—
এরকম লক্ষ তোমায় কেমন দেখায়।
শব্দ দিয়ে ধরে রাখা যায় না
সেসব তোমায়,
আমার ইচ্ছা, আমারই দায়,
তোমার কী তাতে কিছু আসে যায়?
চাঁদ সূর্য কী জানতে চায়
কী হয় সমুদ্রে জোয়ার ভাটায়?
কত ফুল রোজ নীরবে ঝরে যায়
পথ চেয়ে তোমার প্রতিক্ষায়।
তোমার চাকরি কবে শেষ হবে,
তখন তুমি কী করবে, কোথায় থাকবে—
এভাবে একটা গলি পথও খুঁজি তোমায় পাবার,
পাই না, তাতেও সন্দিগ্ধ হই
তখনো একই ভয় হারাবার।
তোমার সুখ্যাতির সম্ভোগে
তখনও ওরা ভীড় করে থাকে,
তোমাকে ব্যস্ত রাখে।
তোমাকে কেড়ে নিয়ে যায় সভায়,
আমি একইভাবে দূরে অপেক্ষায়।
পৌছে যাও এমন উচ্চতায়,
যেখান থেকে
সূর্যের মতো কীরণ দিলে সবাই সমান পায়।
তোমার প্রতি আমার এ অনুরাগ
কিছুটা ভগ্ন হয় বাস্তব অবিঃশ্বাসে,
তবু তুমি থাকো আমার প্রতিটি নিঃশ্বাসে!
তোমার নাম ধরে
ডাকতে ইচ্ছে করে প্রাণভরে!
খাঁচার পাখিও তো গান গায় কত প্রকারে,
ডেকে ডেকে খুন হয়, কত কী করে।
কী সে পায়?
অবশেষে খাঁচাতেই সে ঘুমায়।

কবি: লন্ডন প্রবাসী সাহিত্যিক