মরীচিকা নও, তুমি ঠিকই মরুদ্যান

শাহিদা সুলতানা

তুমি কি বিশ্বাস করবে

যদি বলি— কোনো নারীকে

কিন্তু আমার সহ্য হয় না,

তাই বলে কোনো বিদ্বেষ আছে ভেবো না,

এমনিতেই, কেন জানি!

আমি যে বিভাগে পড়েছি

সেখানে ছাত্রীই বেশি ছিল,

এমনকি সবার সাথে আমার

কথাই বলা হয়নি,

কারো কারো সাথে হয়ত

দুই চার দশবার।

কারো প্রেমে পড়ার

প্রশ্নই ওঠে না,

অহংকারী, বোকা, বদরাগী

কত কী উপাধি যে ছিল আমার!

আমি ফরমাল কথা ছাড়া বলতেই পারি না,

বলিওনি কারো সাথে কোনোদিন।

‘ভালোবাসি’ বলব, সে তো অসম্ভব!

 

কিন্তু আমার কিছু একটা হয়েছে,

তোমার ছবি দেখে দেখে

তোমাকে ভেবে ভেবে

আমি একটা সুখকর বঞ্চনার মধ্যে

ফেলে দিয়েছি নিজেকে!

তোমাকে ছাড়া এক মুহূর্তও

আমার কাটে না—

আবার তুমি তো আমার কেউ না,

এ এক ভীষণ দ্বান্দ্বিকতা!

তুমি বুঝতে পারো?

হয়ত পরো,

কিন্তু আমি চাই না

তুমি বুঝতে পারো,

তাহলে তোমার মায়া হবে,

পরাজিত পথিকের সাথে

কোনোদিন প্রেম হবে না।

অনেক মায়ার বন্ধন আমার,

আর ভালো লাগে না!

এই মাত্র ফোন করে

একজন কত কী বলল—

পুরোটাই তা মায়ায় ভরা,

আমার ভালো লাগেনি।

কত কত মলিন মুখ চারিদিকে

তাদের রেখে

আমাকে কেন করুণা করবে কেউ?

আমি কি চেয়েছি কিছু কোনোদিন?

 

আমি জানি

ময়ুরের চেয়ে পেখম দামী,

তাই বলে

ও অভ্যেস আর করি কী করে!

জীবন ঠিকই আকাশ সীমা ছুঁয়েছে

হয়ত তা অন্তরালে,

ফুরিয়ে যাবে আমার দিন ফুরালে,

কেউ জানবে না তা।

না জানুক, তাই বলে

অন্য মানুষ তো হতে পারি না আর,

এই ‘আমি’ এমনই,

এর চেয়ে বেশি আর

কী হতে পারি বলো?

হতে পারে আমার অনেক কিছু,

কিন্তু আমি কি আর কিছু

এর চেয়ে বেশি হতে পারি?

 

আমার মরুভূমির মরুদ্যান,

নাকি তুমি মরীচিকা?

মরীচিকা তোমায় আমি বলতে পারি না,

তুমি মরুদ্যান ঠিকই,

হয়ত দূরে বহুদূরে,

আমি দেখছি তা সোজা পথে

সহজে।

ভীষণ ক্লান্ত আমি,

একটু জিরিয়ে আবার—

এভাবে ছুটতে থাকব

আমার অন্তিম লক্ষ্যে।

জানি কোনোদিন আমি

পৌঁছুতে পারব না,

সামনে পর্বত, পারাবার,

তুমি তো থাকো

কত পথ পেরিয়ে তারও ওপার!


শেকস্ রাসেল

লন্ডন প্রবাসী সাহিত্যিক