দিব্যেন্দু দ্বীপের কবিতা: জন্মাব আমি কারবালায়

দিব্যেন্দু দ্বীপ

লড়াই

বিদ্রোহ নয়, এ লড়াই বাঁচবার

বিক্ষোভ নয়, এ লড়াই বাঁচাবার

বিদ্বেষ নয়, এ লড়াই ভালবাসার

বিপন্নতা নয়, এ লড়াই জেগে উঠবার

ক্রোধ নয়, এ লড়াই শান্ত হবার

হারাবার নয়, এ লড়াই স্বপ্ন বাঁচাবার

লুব্ধ হৃদয়ে লস্থির নয়,

এ লড়াই নির্লিপ্ত নয়নে জীবনের গান গাইবার।

 

জন্মাব আমি কারবালায়

জন্ম নিও তুমি সিন্দুতীরে

না হয় জন্মাব আমি কারবালায়।

মা আমার কালি নয়, সত্যি মাতা।

গলা টিপে সীতার সংস্কার হয়, মাতার হয় না।

হিন্দু বলে মুসলিম অপভ্রংস,

মুসলিম বলে হিন্দুরা কাফের।

হিন্দু মুসলিম বৈদ্ধ খৃষ্টান নই,

আমি মাটির মানুষ।

আমার মসজিদে মন্দিরা বাজে, মন্দিরে মুয়াজ্জিন।

আমার পুজা সৃষ্টিতে, ওদের স্রষ্টায়।

জন্ম নিও তুমি সিন্ধুতীরে

না হয় জন্মাব আমি কারবালায়।

 

আলেয়ার আলো

সে সব চোখের বোবা চাহনি আমি দেখেছি।

ও চোখগুলোর আকার প্রকার এক নয়

অথচ লক্ষ্য ওদের একই!

 

কোথাও কেউ নেই

শুধু আমি একা ছুটে চলেছি ঐ চোখগুলোর পিছে পিছে।

 

দেখছি জোড়ায় জোড়ায় চোখগুলো ধেয়ে চলেছে।

সহস্র জোড়া, লক্ষ জোড়া;

বৃদ্ধরা ঝাপসা চোখে হাল ছেড়ে দেয়।

বৃদ্ধের জন্য ঝরে পড়া

করুণার অশ্রু আমার সদ্য রক্তিম

স্তনের কালো দাগগুলো ধুঁইয়ে দেয়।

 

সম্বিত ফিরে পাই সুখের বেদনায়।

দেখি

সে আমার সম্মুখে

বৈঠা হাতে ভালবাসার অভিনয়ে।

 

আবার ঘুমিয়ে পড়ি ঐ চোখগুলোর নেশায়।

এবার

ধেয়ে আসছে জোড়ায় জোড়ায় হাত;

চেনা, স্বল্প চেনা, অচেনা; ওরা।

 

বুঝেছি

আমি থাকি রঙ্গালয়ে, তোমরা থাক রঙ্গমঞ্চে।

 

কল্পতরু

ইন্দুমতি অপ্সরা সতি

কোমর কুন্তল হরিণী

শীরীন অধর অদ্রব্য,—গৌরী,

শক্য পয়োধরে চুচুক শাণিত,

কোমর তনূ, নাভিতে পদ্মরাগ,

নির্বিদার গিরি নিতম্বে দেহাত্বপ্রত্যয়,

পরাগে পরাগত নিতল যোনী রক্তোৎপল।

নিরুদ্বেগ যোগীনী, প্রণায়াশাক্ত নিলম্বন।

দস্যু নির্জীত, নির্ধন আশ্রিত, নিরপেক্ষ নিয়ন্ত্রী।