সুশান্ত সরকারের তিনটি কবিতা

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার

দ্বিধাদ্বন্দ্ব

এত ভালোবাসা, এত মুগ্ধতায়

মাঝে মাঝে বিভ্রান্ত হয়ে যাই।

একি আমি যোগ্য

নাকি মহা দুর্যোগের লক্ষণ!

মুখ ও মুখোশের আড়ালে

নেই তো কোনো দূরভিসন্ধি?

এত বেশি ভালোবাসা, এত মায়া মমতা

ভাগ্যে জোটেনি কখনো,

একি আমি যোগ্য

মন ভুলিয়ে অন্য পথে নিয়ে যাবে না তো?

এতটা বিশ্বাস আর আন্তরিকতায়

কেন জড়ালে তুমি?

একি যোগ্য আমি

নাকি সবটুকু বিশ্বাস ঢেকে যাবে ঘোর অমানিশায়?

 

শুদ্ধতা

বেঁচে থাকা হোক সগৌরবে

শুদ্ধতার সাথে মাথা উঁচু করে

হীনমন্যতা যেন না হয় সম্বল

মৌনতা ভেঙে হোক কথা

অন্যায়ের বিরুদ্ধে সমস্বরে

বেঁচে থাকা হোক সগৌরবে শুদ্ধতার সাথে

দুঃসহ বেদনাকে করে আলিঙ্গন

হাসিমুখে হোক তা বরণ

এমন শুদ্ধতা আসুক সত্যের পথে

জাগ্রত বিবেক আসুক চিন্তার গভীরে

অশুভ শক্তি যেন মাথা চাড়া না দিতে পারে

শুদ্ধতা আসুক চিত্ত ও মননে

জীবনের জয়গান হোক প্রাণে।

 

হাতে হাত রেখে নৌকার পাটাতনে বসে

এসো উপভোগ করি জ্যোৎস্না,

সুখে-দুঃখ, মিল-অমিলের সমন্বয়ে

এসো উপভোগ করি জীবনটাকে।

প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিতে, সম্পূর্ণ-অসম্পূর্ণতায়

এসো সহজ করি জীবনটাকে,

পাওয়া না পাওয়ার বেদনায়

নিজেকে না হারিয়ে

এসো মিলি উল্লাসে, খুঁজি প্রাণের স্পন্দন।

এসো উপভোগ করি জীবনটাকে।

 

শব্দমায়া

শব্দগুলো এখন আমায় পাহারা দিয়ে রাখে,

আমাকে একা হতে দেয় না।

আমি পরিবেষ্টিত হয়ে আছি

শব্দগুচ্ছোর মায়াময় ভালোবাসায়।

কোনো হতাশা নয়,

নয় কোনো বিষন্নতা।

শব্দগুলো শান্তি খুঁজতে সাহায্য করে আমায়,

নির্মম নিরালায়।

শব্দগুলো

আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে আমায়,

বিষন্নতা গ্রাস করতে পারে না তাই।


কবিঃ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

কবি সুশান্ত সরকার বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত। তিনি পড়াশুনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে। শৈশব এবং কৈশর কেটেছে ঠাকুরগাঁও-এ টাঙ্গন নদীর তীরে পৈতৃক নিবাসে। এসএসসি ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে, এইচএসসি ঢাকা কলেজ থেকে। ছোট বেলা থেকেই তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি সংস্কৃতির সাথে যোগ রেখেছেন। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে সুনামের সাথে কাজ করার পাশাপাশি সুশান্ত সরকার বর্তমানে কাব্যচর্চায় মনোনিবেশ করেছেন। ভ্রমণপ্রিয় এ মানুষটি শিশুদের সাথে সময় কাটাতে পছন্দ করেন। ছিন্নমূল এবং তৃণমূলের মানুষের প্রতি তার রয়েছে বিশেষ ভালোবাসা এবং দায়বদ্ধতা।