খেজুরের গুড়ে মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত হাইড্রোজ

খেজুরের রস

অজয় মণ্ডল


স্বপ্নের এবং স্বাদের খেজুরের গুড়ে চিনি আর বিষ ঢুকেছে, এবং এটা হচ্ছে প্রায় বাজারের সব গুড়ে। অনেক আগে থেকেই চিনি কেড়ে নিয়েছে খেজুরের রসের যশ, তবুও যারা গুড় খেতে চাচ্ছে তাদের সে গুড়ে বালি দিচ্ছে কিছু বাজে লোকেরা, আর এই বাজেদের দাপটই এখন এক্ষেত্রে বেশি।

লালচে রঙের কথিত খেজুরের গুড় কিনে ঠকছে ক্রেতারা এবং ক্রমেই তারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে গুড় কেনা থেকে, তবে আগে একবার ঠকে নিচ্ছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, ভেজাল গুড়ে সয়লাব বাজার। ফলোআপনিউজ থেকে যশোরের খাজুরা থেকে নিয়ামুল ইসলাম ঘুরে এসে জানালেন, আসলেই সেখানেই এখন সবচে বেশি সমস্যা। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি গাছিরাও ভেজাল দিচ্ছে, ফলে নিজেরা তদারকি করে না আনলে আসল খেজুরের গুড় সংগ্রহ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
নিয়ামুলের কথার সত্যতা মিলল এই কলেজ শিক্ষকের বক্তব্যে। যশোর খাজুরার বাসিন্দা, খাজুরা সরকারি সিরাজুদ্দীন কলেজের (সদ্য সরকারি) শিক্ষক অজয় মণ্ডল জানালেন, নিজেরা থেকে বিশ্বস্ত লোকের কাছ থেকে সংগ্রহ না করলে আসলেই প্রকৃত খেজুরের গুড় সংগ্রহ করা অসম্ভব। 
বাজারে সোনালী, হালকা লাল, চকচকে, উজ্জ্বল সাদাটে গুড় দেখে সবাই আকৃষ্ট হয়। কিন্তু এই গুড়েই যে হাইড্রোজ নামক বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ আছে তা আমরা অনেকেই জানি না। আখ, খেজুর, তাল রসের গুড়ের রঙ হাইড্রোজ দিয়ে আকর্ষণীয় সোনালী করা হয়। অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে চিনি, ময়দা ক্ষতিকর চিটাগুড় এবং রং করার জন্য বিষাক্ত কেমিক্যাল হাইড্রোজ ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে ভেজাল পাটালি গুড়। এই গুড় তৈরির প্রণালী হলো-চিনি, ময়দা, আলু, ঝোলা গুড়, চিটাগুড় খেজুরের পাটালি গুড় মিশিয়ে বিশাল আকৃতির কড়াইতে জ্বাল দেয়া হয়।
১০০ কেজির ভেজাল গুড়ের মধ্যে ৫০০ গ্রাম বিষাক্ত কেমিক্যাল হাইড্রোজ ও সালফেট মিশিয়ে আকর্ষণীয় রং তৈরি করে ‘খেজুরের পাটালি গুড়’ বানানো হয়। চিনির মূল্য পাইকারি হিসাবে প্রতি কেজি ৫৫ টাকা। আর গুড় প্রতি কেজি পাইকারি বিক্রি করা হয় ৬০-১২০ টাকায়, ক্ষেত্র বিশেষ আরও বেশি। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই ভেজাল গুড়ে সয়লাব দেশের বাজার।
শীত মৌসুমকে সামনে রেখে অসাধু ব্যবসায়ীরা এক থেকে দেড় মাস আগে থেকেই ভেজাল গুড় তৈরি শুরু করেন। 
https://www.youtube.com/watch?v=UBnOxIkXs-k&t=805s