রূপম রোহান-এর প্রত্যেক কবিতার মধ্যে আরেকটি অদৃশ্য কবিতা আছে। “সেতু শুয়ে আছে চুপে/সেতু শুয়ে আছে তার ছায়ার উপর”—বিনয় মজুমদার-এর এই সেতুর মতো রূপমের প্রতিটি কবিতার ছায়ার উপর ভেসে আছে আরেকটি কবিতা।
মানে, ভাসমান কবিতার তলে মগ্ন আরেকটি কবিতা আছে। একটি আরেকটির সাথে লগ্ন, কিন্তু নিমজ্জিত; অতএব অদৃশ্য। একটি আরেকটি থেকে পৃথক নয়, বরং পরিপূরক। ডুবুরীর মতো ডুব দিয়ে এই দ্বিতীয় কবিতাটিকে ধরা যায়। মূদ্রীত কবিতার আড়ালে থাকা এই কবিতাটিই রূপমের আসল কবিতা।
কাব্যের মূল পাঠ বা সাবটেক্সট্ ধরে আসল বক্তব্যে পৌঁছুনো যায়। পাঠকের এই মনোজাগতিক যাত্রায় কোনো বেগ পেতে হয় না। এর কারণ, পরিচ্ছন্ন, সহজ ও সাবলীল ছন্দের এক নম্বর ইটে এই যাত্রাপথ বাঁধানো। সেইদিক থেকে রূপম রোহান লিরিক্যাল পোয়েট। সহজিয়া গীতিময়তার কবি।
তার গীতিময় ছন্দ পাঠককে প্রাত্যহিক প্রথাগত নাগরিক জীবন থেকে নি:সঙ্গ অথচ মাদকতাপূর্ণ নৈসর্গিক জীবনের সপ্নীল ভূবনে সেচ্ছা নির্বাসনে ঠেলে দেয়। সেই নির্বাসন পাঠক ভোগ করেন—অন্তর আত্মা দিয়ে উঠভোগ করেন।