জঙ্গিবাদের সাথে ইসলাম ধর্মকে গুলিয়ে ফেলার কোনো সুযোগ নেই। ইসলাম ধর্ম আর ওয়াহাবীবাদ এক কথা নয়। ওয়াহাবীবাদ, মওদুদীবাদ বা উগ্রবাদ ইসলামের অনুষঙ্গ নয়, এটা ইসলামের বিকৃত ব্যাখ্যা। ইসলামের এই ভুল ব্যাখ্যার ফাঁদে পা দিয়ে অনেক তরুণ/তরুণী জঙ্গীবাদের দিকে আকৃষ্ট হয়। এবং সে সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব তথা যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্র কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার নীতি নিয়েছে। অর্থাত তারা বামপন্থী এবং ডানপন্থী এই দুই মতবাদকে, বিশেষ করে এই দুইয়ের উগ্রবাদী অংশকে মুখোমুখী দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। মূলত শান্তিময় হলেও মার্কসবাদ এবং ইসলাম দুটোকেই পশ্চিমা বিশ্ব সমান ভয় করে, তাই তারা কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার নীতি নিয়েছে সেই আশির দশক থেকে।
তারই ফলাফল সারা বিশ্বে আজকের এই জঙ্গিবাদ। একথা সবাই জানে যে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী ফাঁদে পা দেয়, তাই যেহেতু ধর্মের নামে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর অনেক মানুষ উগ্রমতবাদে বিশ্বাসী হয়ে যায় অশিক্ষা এবং ভুল শিক্ষার ফলে, ঠিক সেই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
যদিও মার্কসবাদীরা পড়াশুনা জানা এবং প্রগতিশীলতা এবং শান্তিতে বিশ্বাসী, তবুও যেহেতু ইতিহাসে ক্ষেত্রবিশেষ উগ্রবাদের উদাহরণ তাদের দিক থেকেও রয়েছে তাই গণতান্ত্রিক বিশ্ব মার্কসবাদীদের মোটেও বিশ্বাস করে না। সবচে বেশি অবিশ্বাস করে কোম্পানিগুলো, তারা বিশ্বব্যাপী যে পুঁজির শাসন কায়েম করেছে তার কোনোভাবে অবসান হোক এটা তারা মানতে পারে না। তাই যেখানেই সে সম্ভাবনা একটুও দেখা দেয় সেখানেই একইসাথে জঙ্গিবাদের কালো থাবা চলে আসে।
মুসলমান তরুণ/তরুণীদের জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়া থেকে বিরত রাখতে সবচে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে আলেম, ওলামা এবং সুফিবাদে বিশ্বাসী মুসাফিরগণ। তারা ইসলামের শান্তিময় ব্যাখ্যা সবার সামনে তুলে ধরতে পারে। ধর্ম এবং রাজনীতির বুৎপত্তিগত মিল থাকলেও এটা যে কখনও পরিপূরক হতে পারে না -সে দিকটি সঠিকভাবে বুঝাতে পারে তারাই যারা সঠিকভাবে এবং শান্তির জন্য ইসলামের চর্চা করছে, বা মনে করে যে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার জন্য এ ধরনের ধর্মের এখনও প্রয়োজন আছে।
সরকারের উচিত মসজিদে মসজিদে, বিশেষ করে শুক্রবার সে ধরনের বয়ানের ব্যবস্থা করা। একটা কথা বারে বারে বলা যে—জঙ্গিবাদ মানে সম্রাজ্যবাদ, পশ্চিমা সম্রাজ্যবাদ, না বুঝে তাতেই ইন্ধন যোগাচ্ছে মুসলমান তরুণ/তরুণীরা। সতর্ক হওয়ার এখনই সময়, না হলে পৃথিবীর দরিদ্র এবং পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর কখনই প্রকৃতপক্ষে জাগরণ হবে না।
শেকস্ রাসেল
লন্ডন, যুক্তরাজ্য