হাফিজ সম্মানজনক ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স করেন। আমেরিকান সাহিত্য, আলোকচিত্র ও থিয়েটার বিষয়ে তাঁর বিশেষত্ব রয়েছে।
গত ২১ ডিসেম্বর পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার (ব্লাসফেমি) মামলায় দেশটির বাহাউদ্দিন জাকারিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক জুনায়েদ হাফিজকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয় মুলতানের একটি আদালত।
তথাকথিত ব্লাসফেমির মামলায় দণ্ডিত জুনায়েদ হাফিজের মুক্তির জন্য অনলাইনে স্বাক্ষরের আবেদন জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। সোমবার বিকেলে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মৃত্যুদণ্ডাদেশ রহিতের জন্য আগামী এক মাসে ১ লক্ষ স্বাক্ষর সংগ্রহ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করবে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। সকলকে স্বাক্ষর কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য তারা অনলাইনে স্বাক্ষরের আহ্বান জানিয়েছেন।
https://www.ipetitions.com/petition/release-of-pakistani-professor
প্রসঙ্গত, হাফিজ সম্মানজনক ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স করেন। আমেরিকান সাহিত্য, আলোকচিত্র ও থিয়েটার বিষয়ে তাঁর বিশেষত্ব রয়েছে। জুনায়েদ হাফিজকে ২০১৩ সালের মার্চে গ্রেপ্তার করা হয়। জুনায়েদ হাফিজের প্রথম আইনজীবী ছিলেন রশিদ রেহমান। হাফিজের পক্ষে মামলা লড়তে রাজি হওয়ার পর ২০১৪ সালে রশিদকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর কারাগারে একাধিকবার অন্য বন্দীদের হামলার শিকার হন হাফিজ। পরে তাঁকে একটি সেলে একাকী অবস্থায় বন্দী রাখা হয়। দ্য ডন অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলায় হাফিজের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ আনা হয়। তিনটি অভিযোগেই তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন আদালত।
একটি অভিযোগে হাফিজকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আরেকটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। অপর একটি অভিযোগে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। এ ছাড়া তাঁকে ছয় লাখ রুপি জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই রায়ে ‘চরম হতাশা’ ও ‘বিস্ময়’ প্রকাশ করেছে। এই রায়কে ‘ন্যায়বিচারের চরম ব্যর্থতা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে সংগঠনটি।
পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইনে মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন প্রায় ৪০ ব্যক্তি। তবে দেশটিতে এখন পর্যন্ত এই আইনে কারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি।
পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইনে খ্রিষ্টান নারী আয়শা বিবিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হলে তা বিশ্বব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তোলে। মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে আট বছর কারাগারে ছিলেন আয়শা বিবি। দেশটির সুপ্রিম কোর্ট খালাস দিলে আয়শা বিবি গত বছর কারাগার থেকে মুক্তি পান।