জর্জ ফ্লয়েডে হত্যকাণ্ডের ঘটনা এবং বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভের রেশ কাটতে না কাটতেই ১২ জুন রেশার্ড ব্রুকস্ নামে একজন ৩৭ বছর বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিককে আটলান্টা পুলিশ গুলি করে হত্যা করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক রেশার্ড ব্রুকস্ হত্যার ঘটনায় গুলিবর্ষণকারী পুলিশ কর্মকর্তা গারেট রোলফের বিরুদ্ধে হত্যা ও লাঞ্ছনার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ইতোমধ্যে বরখাস্ত হওয়া গারেট রোলফের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত ১১টি অভিযোগ আনা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন।
১২ জুন শুক্রবার রাতে স্থানীয় সময় সাড়ে় ১০টার দিকে ওয়েন্ডি নামে একটি ফাস্টফুড রেস্তোরাঁর সামনে রেশার্ড ব্রুককসকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ব্রুকস্কে গুলি করে হত্যার একটি ভিডিও এরইমধ্যে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে ব্রুকসের সঙ্গে দুই পুলিশকর্মীকে ধস্তাধস্তি করতে দেখা গেছে। তাদের হাত থেকে পালাতেও দেখা গেছে ব্রুকসকে। তাকে লক্ষ্য করে পুলিশের গুলি ছোড়ার শব্দও শোনা যায়।
জর্জিয়ার তদন্ত ব্যুরো বলেছে, গত শুক্রবার (১২ জুন) ওয়েন্ডির রেস্টুরেন্টের সামনে অপেক্ষা করার সময় গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ব্রুকস। গাড়িটির কারণে রেস্টুরেন্ট সংলগ্ন রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফোনে পুলিশকে অভিযোগ জানান এর এক কর্মী।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্রকসের মাদক পরীক্ষা করেন। এ সময় তিনি মাদক সেবন করেছেন বলে প্রমাণিত হয়। দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশের গুলিতে মারা যান এই কৃষ্ণাঙ্গ যুবক।
এর পরপরই ব্রুকসের মৃত্যুর বিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে শত শত মানুষ। শনিবার সন্ধ্যার দিকে আটলান্টার ইন্টারস্টেট-৭৫ এলাকার একটি প্রধান মহাসড়ক বন্ধ করে দেয় বিক্ষোভকারীরা। যে রেস্টুরেন্টের সামনে পুলিশের গুলিতে মারা যান ব্রুকস, সেটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা।
আটলান্টার মেয়র কেইশা ল্যান্স বটমস, যিনি নিজেও একজন কৃষ্ণাঙ্গ, এ হত্যাকাণ্ডকে সর্বোচ্চ শক্তির অযৌক্তিক ব্যবহার হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, আমার আশা যে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে— কেবল তা ব্রুকসের পরিবারের জন্য নয়, ক্ষতিগ্রস্থ এ ধরনের সকল পরিবার ও অন্যান যেসব বল প্রয়োগের মামল জেলা অ্যাটর্নি দ্বারা সমাধানের অপেক্ষায় রয়েছে সব ক্ষেত্রেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। (এবিসি নিউজ, ১৮ জুন ২০২০)
জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনে গতি সঞ্চারিত করেছে আটলান্টায় রেশার্ড ব্রুকস হত্যাকাণ্ড। পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে চলমান এই আন্দোলনে প্রবাসীরাও জড়িয়ে পড়েছেন ওতপ্রোতভাবে। নিউইয়র্ক, লসএঞ্জেলেস, আটলান্টা, ফিলাডেলফিয়া, মিশিগানের বাংলাদেশিরা একাকার হয়ে পড়েছেন “ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার”র সাথে। নাগরিক অধিকার ও মর্যাদার প্রশ্নে সোচ্চার সর্বস্তরের আমেরিকানদের এসব বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিতেও দেখা যাচ্ছে বাঙালিদের।