কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসাবে রাজপথে ব্যবহার করছে জন প্রশাসন

আয়োজন দেখলেই বোঝা যায়, শিক্ষকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামানোর জঘন্য খেলায় নেমেছে জনপ্রশাসন বিভাগ। বিচারিক ক্ষমতা হারানোয় পাগল হয়ে উঠেছে এরা। বিচারিক কাজের প্রতি কী মাত্রায় তীব্র লোভ লালসা! জনমত সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে যৌন হয়রানির বিচার করার একমাত্র ক্ষমতা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমাণ আদালতের। তাহলে পুলিশ প্রশাসন ও বিচার বিভাগের কী কাজ?

বিচারক হতে চায়! উচ্চ আদালত বলছে বিচারক হওয়ার প্রক্রিয়া ও বিচার করার জন্য যে আদালত নেতৃত্ব দিচ্ছে সে আদালত অবৈধ, অসাংবিধানিক। শিশু কিশোরীদের রাজপথে না নামিয়ে উচ্চ আদালতের সামনেই তুলে ধরতে পারত এটি বৈধ ও সাংবিধানিক। সে মুরোদ তাদের নাই, তাই কাপুরুষের মত শিশু-কিশোরীদের রাজপথে নামিয়েছে এ অবৈধ অসাংবিধানিক কাজের পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য।

এরা নিশ্চয়ই জানে, একই অপরাধে বিচার করার জন্য দ্বৈত আইন সংবিধানের মৌলিক অধিকার পরিপন্থী, এ অবৈধ বিচারকরা জানে না, আইন ও বিচার কার্যালয় থাকলেই বিচার করা যায় না, বিচারকের বৈধতা , ন্যায্যতা ও নিরপক্ষেতা থাকতে হয়। এ সবের কোন বালাই নাই অথচ নিজেদের স্বার্থে ঔপনিবেশিক ক্ষমতার আধিপত্য বিস্তারের মানসে রাষ্ট্রের সংবিধান ও বৈধতাকে অগ্রাহ্য করে উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে অবজ্ঞা প্রদর্শন আরেকটি বিচারকের মনস্তাত্ত্বিক হীনতার বহিঃপ্রকাশ। বিচারক সাজা আর বিচারক হওয়া দুটি এক নয়। জনপ্রশাসনের কর্মচারীরা বিচারের জন্য নিয়োগ-কৃত নয়।

এ স্পর্ধা উচ্চাভিলাষী, নির্লজ্জ অভিপ্রায়ের বিরুদ্ধে পেশাজীবী, নাগরিক ও উচ্চ আদালতের আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। সামরিক স্বৈরশাসকের অক্ষমতা ব্যর্থতার সুযোগ নিয়ে এরা এখন এমন স্তরে পৌঁচেছে যে রাষ্ট্র রাজনীতি ও সরকারকে নির্ভরশীল করে তুলেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, জনপ্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেসির ভূত জাতির স্কন্ধ থেকে নামানো কষ্টকর। এদের নির্লজ্জতা-ই বেপরোয়া হওয়ার শক্তির উৎস। রাষ্ট্র রাজনীতি কঠোর হলেই এদের ধ্বংস অনিবার্য।

মুক্তিযুদ্ধ এদের ধ্বংস করেছিল, বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে এদের জাগিয়েছি। এদের দৃষ্টিভঙ্গি আচরণ, মনস্তাত্ত্বিক জগত সবই মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী। সর্বাগ্রে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী-র এ উপলব্ধি ও বিশ্বাস অর্জন করা প্রয়োজন ।

ভারতবর্ষে ব্রিটিশ উপনিবেশের অস্তিত্ব, আধিপত্য, শোষণ ও নির্যাতন টিকেয়ে রাখার জন্য ব্রিটিশরা এদের চরিত্রের ডিএনএ-তে যে পরিবর্তন এনে দিয়েছে, সেই আইসিএস-এর ডিএনএ থেকে আজকের জনপ্রশাসনের ডিএনএ-র উৎপত্তি। কেবল এদের নয়, এদেরকে ডিএনএ সহ সমূলে ধ্বংস করতে না পারলে আবার জন্ম হবে।

সঠিক নেতৃত্বের অনুপস্থিতিতে নাগরিকরা কী মাত্রায় ভোগে তার উদাহরণ আজকের জনপ্রশাসন। বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকলে এদের পুনর্জন্ম হওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না।


ডা. বাহারুল আলম