বিশ্বের ২ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ২২০ কোটি মানুষ দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত৷ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ৷
এটি বেশ পুরনো একটি প্রতিবেদন। এরপর এরকম আর কোনো প্রতিবেদন চোখে পড়েনি।
প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)৷ জাপানের রাজধানী টোকিওতে ‘২০১৪ সালের মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন‘ প্রকাশের অনুষ্ঠানে ইউএনডিপির প্রধান হেলেন ক্লার্ক দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসরত মানুষদের অবস্থার উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে করণীয় কিছু বিষয়ের ওপর আলোকপাত করেন৷
আর্থিক সংকট, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, খাদ্যদ্রব্যের উচ্চমূল্য এবং নানা ধরনের সংঘাত দরিদ্রদের আরো গভীর দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, এ মুহূর্তে ৯১টি উন্নয়নশীল দেশের দেড়শ কোটি মানুষ দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করছেন এবং আরো ৮০ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমা ছুঁই ছুঁই করছেন৷ বিশ্বের প্রায় ১২০ কোটি মানুষের দৈনিক ক্রয়ক্ষমতা মাত্র সোয়া এক ডলার বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে৷
প্রতিবেদনের অন্যতম রচয়িতা খালিদ মালিক দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অসহায়ত্বের চিত্র ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে বলেন, ‘‘যিনি দরিদ্র তাঁর অনেক রকমের আঘাত সামলানোর ক্ষমতাই খুব কম৷ অনেক দরিদ্র মানুষ আবার প্রতিবন্ধী, কেউ বা বয়সে প্রবীণ৷ সব মিলিয়ে তাঁদের প্রতিকূলতা অনেক বেশি৷”
ইউএনডিপি-র এ প্রতিবেদন প্রকাশের অনুষ্ঠানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেও উপস্থিত ছিলেন৷ জাতিসংঘের ‘মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস’- কর্মসূচির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘‘লক্ষ্য অর্জনের সময় দ্রুত শেষ হয়ে আসছে৷” বুধবার প্রকাশ করা প্রতিবেদনে ইউএনডিপি অবশ্য নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচিতে কাঙ্খিত সাফল্য প্রাপ্তি সম্ভব হবে বলেই আশা প্রকাশ করেছে৷
উল্লেখ্য, ‘জাতিসংঘ মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস’ এর সময়সীমা ইতিমধ্যে অতিক্রান্ত হয়েছে, এবংজাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) হচ্ছে নতুন লক্ষ্যমাত্রা।
সংক্ষেপে এসডিজি:
১. দারিদ্র্য বিমোচন;
২. ক্ষুধামুক্তি;
৩. সুস্বাস্থ্য;
৪. মানসম্মত শিক্ষা;
৫. জেন্ডার সমতা;
৬. বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন;
৭. ব্যয়সাধ্য ও টেকসই জ্বালানি;
৮. সবার জন্য ভালো কর্মসংস্থান;
৯. উদ্ভাবন ও উন্নত অবকাঠামো;
১০. বৈষম্য হ্রাসকরণ;
১১. টেকসই শহর ও সম্প্রদায়;
১২. (সম্পদের) দায়িত্বশীল ব্যবহার;
১৩. জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধ;
১৪. সমুদ্রের সুরক্ষা;
১৫. ভূমির সুরক্ষা;
১৬. শান্তি ও ন্যায়বিচার;
১৭. লক্ষ্য অর্জনের জন্য অংশিদারিত্ব।
১৭টি লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করার জন্য বিশ্বের প্রায় সকল দেশ একমত হয়েছে জাতিসক্সেঘর অতিসাম্প্রতিক এক সাধারণ সভায়।