সেই ভয়ঙ্কর যৌন নির্যাতনকারী শিক্ষক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে

1
যৌন হয়রানির মামলায় আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (এইউএসটি) শিক্ষক মাহফুজুর রশিদ ফেরদৌস আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

দুইদিনের রিমান্ড শেষে শনিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিম (সিএমএম) কাজী কামরুল ইসলাম ওই শিক্ষকের জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) উপপরিদর্শক পার্থ চ্যাটার্জী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘তিনি (শিক্ষক) ওই কর্মকাণ্ডের কথা স্বীকার করে আদালতের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার শিক্ষক মাহফুজুর রশিদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে আদালতে জবানবন্দি দেন নির্যাতিত ৫ ছাত্রী। এদের মধ্যে দুজন ঢাকা মহানগর হাকিম নুরুননাহার ইয়াসমিনের আদালতে এবং অপর ৩ জন ঢাকা মহানগর হাকিম মো. গোলাম নবী, মারুফ হোসেন ও সাদবির ইয়াসির আহসান চৌধুরীর আদালতে জবানবন্দি দেন।এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপ-পরিদর্শক আফরোজা আইরিন কলি এই নির্যাতিত ছাত্রীদের ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে ডেকে জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ২২ ধারায় এই জবানবন্দি নেওয়া হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরে ওই ৫ ছাত্রীকে নিজ জিম্মায় ফিরে যাওয়ার জন্য আদেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম মো. মাহমুদুল হাসান। এ সময় বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির আইনজীবী ফাহমিদা আক্তার রিংকি বাদী পক্ষের হয়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তড়িৎ কৌশল বিভাগের ওই শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বেও রয়েছেন। তিনি প্রক্টোরিয়াল ক্ষমতা ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন। ছাত্রীদের নানাভাবে যৌন হয়রানি করতেন। বিভাগে তার নিজের কক্ষে ছাত্রীদের ডাকতেন এবং না আসলে নম্বর কম দেওয়ার হুমকিও দিতেন। সম্প্রতি একজন তরুণ বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধন ২০০৩) এর ১০ ধারায় যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে কলাবাগান থানায় একটি মামলা করেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে বাধ্য হয়ে  গত ৩০ এপ্রিল মাহফুজুর রশিদ ফেরদৌসকে বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত বুধবার (৪ মে) ভোরে কলাবাগান থানা পুলিশের একটি দল রাজধানীর ইস্কাটনের বাসায় অভিযান চালিয়ে ফেরদৌসকে গ্রেফতার করে। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম আহমেদ শিক্ষক ফেরদৌসকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করলে দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম দেলোয়ার হোসেন।