মি. শিপন হাবিব, আমি ভীষণ লজ্জিত, আপনি নিশ্চিয়ই আনন্দিত, নাকি?

7


8
9
আপনি খুব আবেগ দিয়ে লিখেছেন শিশুটির কথা। আমি গত কিছুদিন ধরে শিশুটি সম্পর্কে খোঁজখবর রাখছিলাম। আপনি লিখেছেন, শিশুটির বুকের দুধ খাওয়া প্রয়োজন, ঢাকা মেডিকেলে অন্তত একশোজন মাকে অনুরোধ করা হয়েছে, কিন্তু কেউ রাজি হয়নি। বিষয়টা আমার একেবারেই বিশ্বাস হয়নি। তবুও বিশ্বাস করেছি এই বিশ্বাস থেকে যে, এরকম একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে আপনি নিশ্চয়ই মিথ্যাচার করবেন না। তারপরেও এতটা নিষ্ঠুর আমি মায়েদের ভাবতে পারেনি, এমনটি সাধারণত হয় না। পিজি হাসপাতালে আমার বাবুকে বুকের দুধ ধার করে খাওয়াতে হয়েছিল। দুইজনে একজন রাজি হয়েছিল। আর এরকম একটি ইস্যুতে কেউ রাজি হল না! সব যুক্তি বিসর্জন দিয়ে তবু মেনে নিয়েছিলাম আপনার বার্তা। আমার দ্বিতীয় সন্দেহের কারণ ছিল- আপনি সহায়তা চেয়েছেন, কিন্তু কোন মোবাইল নম্বর সেখানে দেননি। তাহলে, সহয়তাকারী কার সাথে যোগাযোগ করবে? সদ্যজাত শিশু নিয়ে একজন মা ঢাকা মেডিকেল পর্যন্ত হারা উদ্দেশ্যে যাবে? যদি সেই মুহূর্তে কেউ রিসিভ করার মত না থাকে?
সব যুক্তির মাথা খেয়ে শেষ পর্যন্ত গেলাম, সুবর্ণার আগ্রহ এবং আর এক বন্ধুর (অতশী) অনুরোধে আমি গিয়েছি, নিজে তো দুর্বল ছিলামই। গিয়ে আপনার দেওয়া তথ্যের সাথে কোনকিছুর মিল পেলাম না। যে বিভ্রান্তি আপনি ছড়িয়েছেন-
১। ভুল ঠিকানা দিয়েছেন, শিশুটি আছে সার্জারি বিভাগের ২১২ নম্বর রুমে, কিন্তু আপনি বলেছেন ২০৫ নম্বর রুমের কথা;
২। একশোজন মাকে অনুরোধ করা সত্ত্বেও দুধ খাওয়ায়নি বলে যে তথ্যটি দিয়েছেন সেটিও আপনার মন গড়া;
৩। সমস্যা হলেও বুকের দুধ মিলানোটা আপনি যেভাবে বলেছেন সেভাবে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়নি;
৪। মি। শিপন হাবিব, আপনি নিজে কিন্তু স্পটে যাননি, আপনি যে স্পটে যাননি তার প্রমাণ আ্পনার পোস্টে করা আপনার একটি কমেন্ট রয়েছে;
৫। যে ভয়াবহ কাজ, বলা যেতে পারে, গুণ্ডামি আপনি করেছেন, আপনি ভুয়া ছবি দিয়ে এ ধরনের একটি লেখা পোস্ট করেছেন!

আপনি নিজে একজনকে লিখছেন যে, আপনি আপনার স্ত্রীকে নিয়ে গিয়ে শিশুটিকে বুকের দুধ খাওয়াতে চান কিন্তু ডাক্তার আজকে আর দুধ খাওয়াতে মানা করেছে।
শিপন হাবিব, আপনি নিজে স্পটে যাননি এবং অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য জানা সত্ত্বেও মানুষের সফট্ কর্নার নিতে সেগুলো গোপন করেছন, তার প্রমাণ হিসেবে নিচের স্ক্রিন শটটি দেওয়া হল ।
10
11
সর্বশেষ (রাত নয়টায়) পোস্টে উনি শেয়ারকারীদের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, উনি শেয়ারকারীদের কাছে ঋণী? কেন তিনি ঋণী? যেহেতু স্পটে যাওয়ার প্রয়োজন তিনি নিজেই বোধ করেননি, তাই এ ধরনের একটি বিভ্রান্তিমূলক এবং ভুল তথ্যসম্বলিত আহ্বান তিনি করতে পারেন না, পারেন কি?
12
স্ক্রিনশটে দেওয়া ছবিগুলো মিলিয়ে দেখুন, সহজেই বোঝা যাবে- এগুলো একই শিশুর ছবি নয়। অর্থাৎ উনি ধারাবাহিতভাবে মেনিপুলেশন করেছেন।

শিপন হাবিব, কেন আপনি এটা করেছেন? প্রচারের লোভে? প্রচার আপনার হয়েছে বিস্তর, প্রায় ৪০০০ শেয়ার। আপনি সন্তুষ্ট নিশ্চয়্ই?
আমি লজ্জিত! ভীষণ লজ্জিত আমি!! একইসাতে আমি একজন ভুক্তভোগীও।
[মাগুরায় যুগলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে হামলায় গর্ভবতী মায়ের পেটে থাকা আহত শিশুর চিকিৎসার কথা উল্লেখ্ করে শিপন হাবিব যে মর্মস্পর্শী লেখাটি লিখেছেন, সেটি বহুলাংশে মিথ্যা। আমি নিজে একজন তার মিথ্যা প্রচারণার শিকার। আমার মত আরো অনেকে সেখানে ছিল।