সন্তানের সামনে মাকে বিবস্ত্র ও মাথা ন্যাড়া করে উল্লাস

1

লক্ষীপুর: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে সন্তানের সামনে মাকে বিবস্ত্র করে গাছের সাথে হাত-পা বেঁধে বর্বর নির্যাতন চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। পরে মাথা ন্যাড়া করে গলায় জুতার মালা পরিয়ে উল্লাস করার অভিযোগ উঠেছে এলাকার নুর হোসেন, তার ছেলে আজিজ ও মেয়ে হাসিনা বেগমের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা। নির্যাতিত ওই নারী বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় তিন জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়,  লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের পশ্চিম বিগা এলাকার হতদরিদ্র আবদুল কাদেরের স্ত্রী (খুরশিদা বেগম) নির্মান শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালান। গত কয়েকদিন ধরে কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তার মাটি কাটার কাজ করেন তিনি। প্রতিদিনের মত মঙ্গলবারও রাস্তার মাটি কাটার কাজ করার জন্য সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান ওই নারী। ওইদিন দুপুর বারোটার দিকে একই ইউনিয়নের ব্রক্ষ্মপাড়া গ্রামের মনা মিয়ার স্ত্রী হাসিনা বেগম ওই নারী নির্মান শ্রমিককে (খুরশিদা বেগম) ডেকে নেয় ব্রক্ষপাড়া এলাকায়। পরে তার স্বামী মনা মিয়ার সাথে ওই নারী নির্মান শ্রমিক প্রায়ই মোবাইল ফোনে কথা বার্তা বলে অভিযোগ তুলে এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

এসময় ওই নারী শ্রমিক তা অস্বীকার করলে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে টানা হেচড়া করে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে হাসিনা বেগমের বাবা নুর হোসেন ও ভাই আজিজসহ তিনজন একত্রিত হয়ে ব্রক্ষ্মপাড়া এলাকায় ১২ বছরের মাদ্রাসা পড়–য়া ছেলের সামনে নারিকেল গাছের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে বিবস্ত্র করে বর্বর নির্যাতন চালায়। পরে ব্লেড দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে গলায় জুতার মালায় পরিয়ে আনন্দ উল্লাস করে তারা।

এসময় ওই নারীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ওই নির্যাতিত নারীকে উদ্ধার করে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই নারী।

এ ঘটনার পর থেকে ভেঙ্গে পড়েছে সে। তার কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে ওই গ্রাম। রাতে ওই নির্যাতিত নারী বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় নুর হোসেন,তার ছেলে আজিজ ও মেয়ে হাসিনা বেগমকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে হাসিনা বেগমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করে এলাকাবাসী। এ নিয়ে এলাকায় সাধারন মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।