শুধু আতঙ্ক ছড়ানো কোনো কাজের কথা নয়, ডেঙ্গু সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করাটা বেশি জরুরী …

ডেঙ্গু প্রতিরোদ, প্রতিকার, টিপস্

ডেঙ্গু প্রতিরোধ


ভয়াবহ ডেঙ্গু জ্বরে কাঁপছে সারা দেশ। প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে মানুষ, সঙ্গত কারণেই সবার মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ডেঙ্গু জ্বর স্বভাবতই প্রাণঘাতী নয়, কিন্তু ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার এবং শক সিনড্রোম দেখা দিলে তখন মানুষ মারা যেতে পারে। মারা যাওয়ার সংখ্যা মোট আক্রান্তের সংখ্যার তুলনায় অনেক কম হলেও মানুষ যেহেতু মারা যাচ্ছে, ফলে মানুষ ভয় পাচ্ছে।

স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারা যাওয়ার খবর রয়েছে। আজকেও যে ছিল স্বাভাবিক প্রাণচঞ্চল একজন শিক্ষার্থী মাত্র এক বা দুই দিনের মাথায় কেউ মারা যাচ্ছে, এটা মানতে পারছে না অন্য শিক্ষার্থীরা। এই লেখাটি যখন লিখতে বসেছি তখনও পড়তে হলো মোহাম্মদপুর স্কুল এন্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর। ডেঙ্গু ধরা পড়ার মাত্র এক দিনের মাথায় রাইয়ান সরকার নামের এই শিক্ষার্থী স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে। মারা গিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

প্রতিদিন মারা যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এমতাবস্থায় মশক নিধনে যথেষ্ট তৎপর হওয়া ছাড়া সরকারের কাছে কোনো বিকল্প নেই। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কোলকাতা শহর মশক নিধনে গত এক দশকে দৃশ্যমান সফলতা অর্জন করেছে। গত কয়েক বছরে সেখানে ডেঙ্গু রোগীর দেখা মিলছে খুবই কম। এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক যে মশা না থাকলে ডেঙ্গু মশাও থাকবে না। তাই সকল সামার্থ এবং সদিচ্ছা এক করে মশা মারতে ঝাপিয়ে পড়তে হবে দেশের সকল সিটি কর্পোরেশন এবং পৌরসভাগুলোকে।

সমস্যাটা ঢাকায় বেশি, কিন্তু এখন আর ঢাকা শহরে সীমাবদ্ধ নেই, ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে, ফলে স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা তৈরি করে একযোগে সারাদেশে মশক নিধনে কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে সরকারকে। পাশাপাশি নাগরিক সমাজকে সচেতন হতে হবে, নিজের বাড়িঘর এবং বাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, কোথাও পানি জমতে দেওয়া যাবে না।

ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা এবং প্রাথমিক চিকিৎসা পদ্ধতি প্রতিটি নাগরিকের জানা থাকা জরুরী। এজন্যই এ বইটি। এখান থেকে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যাবে। পাশাপাশি বিভ্রান্তি সৃষ্টিাকারী বিষয়গুলোর বিপরীতে সত্য ঘটনাটি জানা যাবে। বইটি এডিস মশা এবং ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে একটি সাধারণ জ্ঞানের বই, কোনোভাবেই এটি রোগনির্ণয় বা চিকিৎসা পদ্ধতি বাতলে দেওয়ার মতো কিছু নয়। এটি মৌলিক কোনো বইও নয়, এটি মূলত একটি সংকলন গ্রন্থ।

পত্রিকার পাতা থেকে এ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ লেখাগুলো সংগ্রহ করে, আংশিক সম্পাদনা সাপেক্ষে বইটি প্রণয়ন করা হয়েছে। যেহেতু প্রথম সংস্করণ, তাই ভুল-ত্রুটি মার্জণীয়। নিশ্চয়ই বইটি উত্তোরত্তোর আরো সমৃদ্ধ হবে। পরিশেষে সকলের রোগমুক্ত জীবন কামনা করছি, এবং অবশ্যই ঘুমানোর আগে মশারী টানিয়ে ঘুমাবেন এই অনুরোধ রাখছি।