“আমার বোরখার নিচে লিপস্টিক” কী আছে এ ছবিতে?

পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় নারীদের, বিশেষত মুসলিম নারীদের যৌনেচ্ছা নিয়ে তৈরি একটি নারীবাদী ফিল্ম এটি। তবে চলচ্চিত্রটি এখনো ছাড়পত্র পায়নি।

ভারতের একটি ছোট শহর ভোপালে চারজন নারীর যৌন কল্পনা ও চলাফেরাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ছবিটি সেন্সর বোর্ড কর্তৃক প্রত্যাখাত হয়েছে, বিষয়টিকে অনেকে বলছেন, ছবিটি অতিমাত্রায় ‘লেডি ওরিয়েন্টেড’, হয়ত বিষয়টি সেন্সর বোর্ড নিতে পারেনি৷ অলঙ্কৃতা শ্রীবাস্তবের ছবিতে নাকি মহিলাদের (যৌন) কল্পনাকে ‘জীবনের উপর’ স্থান দেওয়া হয়েছে, এরকম অভিযোগ এসেছে সেন্সর বোর্ড থেকে৷ এছাড়া এই ছবিতে রয়েছে নানা ‘বিতর্কিত যৌন দৃশ্য’, গালিগালাজ, এমনকি অডিও পর্নোগ্রাফি রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ‘‘সমাজের একটি বিশেষ অংশের স্পর্শকাতর চিত্রণ” – তাদের চিঠিতে লিখেছে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন সিবিএফসি এবং সেই সঙ্গে সরকারি নির্দেশাবলীর নম্বরও দিয়ে দিয়েছে৷

“আমার বোরকার নীচে লিপস্টিক” ছবিটির প্রযোজক প্রকাশ ঝা আর ছবির পরিচালক অলঙ্কৃতা এখন রিভাইজিং কমিটির সরকারি চিঠির অপেক্ষায় আছেন, যার পরে তাঁরা ফিল্ম সার্টিফিকেশন অ্যাপেলেট ট্রাইবুনাল এফসিএটি-তে আপিল করবেন৷ অন্যদিকে সামাজিক গণমাধ্যমে ও গণমাধ্যমে সেন্সর বোর্ডের এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ঝড় বয়ে যাচ্ছে৷

মজার কথা হলো, ছবিটি ইতিমধ্যেই মুম্বই চলচ্চিত্র উৎসবে বিপুল প্রশংসা কুড়িয়েছে৷ বিদেশেও ব্যাপক সাফল্য পাচ্ছে ‘লিপস্টিক আন্ডার মাই বুরখা’: ‘মামি’-তে জেন্ডার ইকোয়ালিটি সংক্রান্ত সেরা ফিল্ম হিসেবে অক্সফ্যামের অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ছবিটি; এছাড়া টোকিও ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে স্পিরিট অফ এশিয়া অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে৷

ছবির ট্রেলারটাই এখন একটা ‘ইন্টারনেট সেন্সেশন’৷ ট্রেলার শুরু হচ্ছে এই মন্তব্যটি দিয়ে: ‘‘প্রতিটি কিশোরীর জীবনে একটা মুহূর্ত আসে, যখন তার একজন নারী হবার ইচ্ছা জাগে৷”

পশ্চিমে যা সহজ সত্য, ভারতের পিতৃতান্ত্রিক সমাজকে তা মেনে নিতে বাধ্য করাটা দৃশ্যত ততটা সহজ হবে না বলে অনেক সমালোচক মনে করছেন৷