বাংলাদেশে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ইকোসিস্টেম, পৃথিবীর দীর্ঘতম বিস্তৃত সমুদ্র সৈকত, চিত্তাকর্ষক পার্বত্য জেলা (খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি এবং বান্দরবান), সিলেটের টিলাসমৃদ্ধ চা বাগান, গারো পাহাড়, গ্রামীণ সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি, নদী-হাওড়-বিল ইত্যাদি। অত্যাবশ্যক এই ইকোসিস্টেমগুলো বাংলাদেশের ইকোট্যুরিজম সম্ভাবনায় ব্যাপক অবদান রাখতে পারে।
বর্তমান বিশ্বে দ্রুত বিকাশমান এবং বর্ধনশীল শিল্প হিসেবে পর্যটন সুপ্রতিষ্ঠিত। পৃথিবীতে পর্যটন শিল্পের অর্থনীতি এখন বিশাল। কভিডের আগে করা এক গবেষণায় দেখা যায় পৃথিবীর মোট অর্জিত সম্পদের ১০.৪% শতাংশ এখন পর্যটর শিল্পকে কেন্দ্র করে। ২০১৯ সালের হিসেবে এ সেক্টর সেক্টর থেকে বাংলাদেশের উপার্জন ছিলো জিডিপি-এর ৩ শতাংশ, যা গড় বৈশ্বিক উপার্জনের চেয়ে অনেক কম। ভারতের ক্ষেত্রে এটি ১০ শতাংশের কাছাকাছি। পাকিস্তানের জন্যও এটি বাংলাদেশের প্রায় দিগুণ। অথচ পর্যটন শিল্পের জন্য অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশ অনেক বেশি সম্ভাবনাময়। পৃথিবীতে যে দশটি দেশ ট্যুরিজম থেকে বেশি আয় করে তার মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশ নেই। ৮ নম্বরে রয়েছে তুরস্ক এবং ১০ নম্বরে রয়েছে থাইল্যান্ড। প্রতিবছর থাইল্যান্ড ভিজিট করে সাড়ে তিন কোটি লোক। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের তথ্যমতে ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ভিজিট করেছে সাড়ে ছয় লক্ষ পর্যটক, যার মধ্যে আসলে প্রবাসী বাংলাদেশীও থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
পৃথিবীজুড়ে পর্যটন শিল্পের প্রথাগত ধারণা পরিবর্তন হচ্ছে। এখন পর্যটন শিল্পের উপাদান হিসেবে নতুন নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে একটি দেশের ঐতিহ্য, খাদ্যাভাস, সংস্কৃতি এবং গ্রামীণ জীবন বিশেষভাবে অন্তর্ভুক্ত। ইকোট্যুরিজম বলতে পারিবেশ এবং প্রতিবেশের সংরক্ষণ নিশ্চিত করে স্থানীয় সম্প্রদায়ের আর্থিক এবং সামাজিকভাবে লাভবান হওয়ার বিষয়টিকে মাথায় রেখে পর্যটন শিল্প পরিচালনা করা বুঝায়। অন্য কথায় ইকোট্যুরিজম হলো একান্ত নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে থেকে ভ্রমণের মাধ্যমে আনন্দলাভ, নতুন অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞানার্জনের সুযোগ অনুসন্ধান করার প্রয়াস। ইকোট্যুরিস্টরা সুপরিচিত স্থানগুলোর পাশাপাশি নতুন নতুন পরিবেশ এবং পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চয়, তারা নিজেরা ভ্রমণ করার পাশাপাশি নতুন আবিষ্কৃত অভিজ্ঞতা এবং স্থানের সাথে অন্যদের পরিচয় করিয়ে দিতে চায়। এদের মধ্য থেকে কেউ কেউ এইসব স্থানে এমনভাবে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ করতে উদ্যোগী হয়, যাতে পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করে এবং স্থানীয় সম্প্রদায়কে সংযুক্ত করে মানুষকে একান্ত গ্রামীণ পরিবেশে ভ্রমণের সুযোগ করে দেওয়া যায়।
ইকোট্যুরিজমের ভাবনাটি এসেছে পরিবেশের যথাযথ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় দিকটির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে। পুরো পৃথিবীতে পরিবেশ এখন মানব সম্প্রদায়ের নানাবিধ কর্মকাণ্ডের ফলে হুমকির সম্মুখিন। গ্রিন হাউসের ধ্বংসাত্মক প্রভাব এখন দৃশ্যমান। প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশ এবং মানুষের জন্য ভয়াবহ হুমকিতে পরিণত হয়েছে। মূলত পরিবেশের মানবসৃষ্ট এই ভয়াবহ বিপর্যয় দেখে পৃথিবীর একদল সচেতন মানুষ পরিবেশ এবং প্রতিবেশ রক্ষার যে আন্দোলন শুরু করেছিলো সেখান থেকেই ইকোট্যুরিজম ধারণাটি বিকাশ লাভ করে। শুধুমাত্র বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে গণপর্যটনের বিকাশ পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। এর মাধ্যমে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। ইকোট্যুরিজমের মূল ভাবনাটিই হচ্ছে— পরিবেশের এই ধ্বংসসাধন না করেও পর্যটন শিল্পের বিস্তারলাভ সম্ভব। মানুষকে চিহ্নিত স্থানগুলোর পরিবর্তে নতুন নতুন স্থানের সাথে পরিচিত করিয়ে ইকোট্যুরিস্টরা পর্যটনের সীমানা যেমন বিস্তৃত করে, পাশাপাশি তারা পরিবেশ সুরক্ষায় নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে মানুষকে সচেতন করে। ইকোট্যুরিস্টরা সরকারি এবং বেসরকারি অংশিদারিত্বের সাথে যুক্ত হয়ে জনগণের কাছে এমন একটি বার্তা পৌঁছে দিতে সমর্থ হয়, যাতে জনগণ ভ্রমণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্ব যুগপৎভাবে বুঝতে পারে।
ইকোট্যুরিজম যে সকল গুরুত্বপূর্ণ ধারণা নিয়ে কাজ করে, তার মধ্যে একটি হলো টেকসই উন্নয়ন এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা। টেকসই উন্নয়ন হচ্ছে— এমনভাবে প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার করা, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষতিসাধন না করে বর্তমানের চাহিদা পূরণ করা যায়। ২০০২ সালকে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক ইকোট্যুরিজম ইয়ার হিসেব ঘোষণা করেছিলো। এই ঘোষণার অন্যতম প্রতিপাদ্য ছিলো— স্থানীয় জনসাধারণ এবং অন্যদেশ থেকে আগত আন্তর্জাতিক পর্যটকদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে ইকোট্যুরিজম সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
ইকোট্যুরিজমের উন্নয়ন, উপার্জন এবং বিকাশের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশে রয়েছে বিশ্বের একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন (৬,০১৭ বর্গমাইল), যেটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এই বনাঞ্চলের চারপাশে রয়েছে লোকালয়, বিশেষত প্রকৃতি নির্ভর বনজীবী গ্রামীণ মানুষের আবাসভূমি। সুন্দরবনকে রক্ষিত রেখে সুন্দরবন সংলগ্ন এই লোকালয়কে ঘিরে গড়ে উঠতে পারে ইকোট্যুরিজমের বিস্তৃত একটি ব্যবস্থা। সুন্দরবনের চারপাশে ইকোট্যুরিস্টদের আগমনে সুন্দরবন রক্ষায় সংলগ্ন মানুষের মধ্যে সচেতনতা যেমন বাড়বে, একইসাথে সংলগ্ন অঞ্চলে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর শিল্প-কলকারখানা যাতে গড়ে না ওঠে সেদিক থেকেও স্থানীয় জনগণ সজাগ থাকবে । গ্রামগুলোতে দেশী বিদেশী পর্যটক আসায় তারা তাদের কৃষিজাত পণ্য এবং হাঁস-মুরগীর ভালো মূল্য পাবে। ফলে বনের ওপর তাদের নির্ভরশীলতা কমবে। দেশী-বিদেশী পর্যটকদের সাথে তাদের তথ্যের বিনিময় হবে, প্রভাবে শিক্ষা এবং বিশ্বঐতিহ্যের প্রতি অত্র এলাকার তরুণ সমাজের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। তাদের জন্য সম্ভাবনার নতুন নতুন দ্বার উম্মোচিত হবে।
সুন্দরবনকে ঘিরে যান্ত্রিক নৌযাননির্ভর যে পর্যটন ব্যবস্থা বর্তমানে পরিচালিত হয়, সেটি পানিসম্পদ এবং সুন্দরবনের জন্য ক্ষতিকর। ভ্রমণকারীরা জাহাজে উচ্চশব্দে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে আনন্দ করে, জাহাজ থেকে তাদের ব্যবহৃত বর্জ্য সরাসরি পানিতে ফেলে পানি দূষিত করে, প্রচুর পরিমাণ জাহাজ সুন্দরবনের চারপাশে আসায় শব্দ দূষণ হয়, এর চেয়ে ভয়াবহ হচ্ছে— জাহাজ থেকে নির্গত ধোয়া এবং তৈল বর্জ্য দ্বারা সংগঠিত পানি দূষণ জীববৈচিত্রের ওপর মারাত্মভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর বিপরীতে সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয় ঘিরে পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে উঠলে অত্র এলাকার দরিদ্র মানুষ যেমন লাভবান হবে, এবং সুন্দরবনও অনেকাংশে দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
শুধু সুন্দরবন নয়, সমুদ্র সৈকত এবং পার্বত্য এলাকার জন্যও একই ধারণা প্রযোজ্য। এইসব এলাকায় শুধু বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কোনো বৃহৎ গোষ্ঠীকে বিচ্ছিন্নভাবে ব্যবসার সুযোগ না দিয়ে সরকারের উচিৎ ইকোট্যুরিস্টরা যাতে স্থানীয় জনসাধারণের সাথে মিশে গিয়ে টেকসই ধারণা মাথায় রেখে জীবীকা নির্বাহের পাশাপাশি স্থানীয় জীবনবৈচিত্র এবং পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারে সেই ব্যবস্থা করা। শুধু প্রকৃতি নয়, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের বহুমুখী জীবনধারাও এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী এবং বরগুনা জেলার অংশ নিয়ে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশ বিস্তৃত। ভারতের সুন্দরবন পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নিয়ে গঠিত। সুন্দরবনের ৬৬ শতাংশ পড়েছে বাংলাদেশে, বাকী ৩৪ শতাংশ ভারতে। বাংলাদেশ অংশে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে এবং সুন্দরবনকে ঘিরে ৫২টি নদী ও খাল রয়েছে। এগুলো বাগেরহাট, সাতক্ষীরা এবং খুলনা জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। এই ছয়টি উপজেলা হচ্ছে শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা, দাকোপ, কয়রা ও শ্যামনগর। এই নদী, খালগুলো বিলীন হয়ে যাওয়ার পথে। এগুলো পুনরুদ্ধার করতে পারলে সুন্দরবনের বিস্তৃতি যেমন বাড়বে, একইসাথে বাড়বে পানিসম্পদ। মূলত নদীতে বাঁধ দেওয়া এবং বনসংলগ্ন এলাকায় চিংড়ি ও কাঁকড়া চাষের মতো কার্যক্রমের ফলে এই নদী ও খালগুলোতে পানিপ্রবাহ কমে গেছে। কোথাও কোথাও পানিপ্রবাহ একেবারেই নেই। এ কারণে তীরবর্তী প্রাকৃতিক বন বিলীন হয়ে গেছে। ইকোট্যুরিস্টরা অঞ্চলভিত্তিকভাবে সুন্দরবন সংলগ্ন নদী এবং খালগুলো পুনরুদ্ধারে আগ্রহী হয়ে অত্র এলাকার মানুষের প্রকৃতি নির্ভর জীবনযাত্রায় যেমন সহযোগিতা করতে পারে, পাশাপাশি সুন্দরবন রক্ষায়ও ভূমিকা রাখতে পারে। ইকোট্যুরিস্টরাই ‘সুন্দরবন সুরক্ষা আন্দোলন’-এর সবচেয়ে বড় অংশীজন হতে পারে।
সুন্দরবন ৬ ডিসেম্বর ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান লাভ করে। একই নিরবিচ্ছিন্ন ভূমিখণ্ড হলেও বাংলাদেশ এবং ভারতের অংশ ভিন্ন ভিন্ন নামে তালিকাভূক্ত হয়— যথাক্রমে সুন্দরবন এবং সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান নামে। সুন্দরবনের মোট বনভূমির ৩১.১ শতাংশ জলাকীর্ণ অঞ্চল। ফলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র বহুমাত্রিক প্রজাতি দ্বারা সমৃদ্ধ। এ জীববৈচিত্রের পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব সীমাহীন।
সুন্দরবনকে রক্ষা করতে হলে সুন্দরবনকে ঘিরে প্রথাগত বাণিজ্যিক পর্যটন ব্যবস্থার বিপরীতে সংলগ্ন লোকালয় নির্ভর ইকোট্যুরিজমের কোনো বিকল্প নেই। সুন্দরবনকে ঘিরে দেশী বিদেশী মানুষের আগ্রহ রয়েছে, মানুষের সেই আগ্রহের জায়গাটিকে কাজে লাগিয়েই সুন্দরবন রক্ষার উদ্যোগ নিতে হবে। এতে করে সুন্দরবন সংলগ্ন সহস্রাধিক গ্রামের মানুষও লাভবান হবে। এ বিষয়ে ইকোট্যুরিস্ট এবং পরিবেশকর্মী আব্দুল্লা জুবায়ের হিরা বলেন, শুধু সুন্দরবন নয়, পুরো বাংলাদেশই হতে পারে ইকোট্যুরিজমের জন্য পৃথিবীর মধ্যে একটি মডেল। এজন্য আমাদের আগ্রহ এবং উদ্যোগ রয়েছে। বাংলাদেশ ছোট দেশ হলেও এখনো এখানে বিভিন্ন নৃতাত্বিক ঐতিহ্যের মানুষ বসবাস করে, সেদিক থেকেও বাংলাদেশ ইকো ট্যুরিজমের জন্য সম্ভাবনাময়। এ সম্ভবনা কাজে লাগাতে হলে শুধু আমরা উদ্যোগ নিলে হবে না, সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতাও প্রয়োজন।
বাংলাদেশের জন্য রক্ষাকবচ হচ্ছে সুন্দরবন। অসংখ্য প্রাণী এবং উদ্ভিদ প্রজাতির আবাসস্থল হচ্ছে এই সুন্দরবন। সুন্দরবনের গুরুত্ব যেভাবে জনগণ অনুভব করার সুযোগ পায়, প্রকৃতপক্ষে সুন্দরবনের গুরুত্ব তার চেয়েও অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে সুন্দরবনের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেটা নিশ্চিত করেই সুন্দরবনকেন্দ্রিক পরিবেশবান্ধব পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু বাস্তবে আমরা উল্টো চিত্র দেখতে পাই। সাম্প্রতিক বছরগুলো সুন্দরবনকেন্দ্রীক যে পর্যটন ব্যবস্থা বিকাশ লাভ করেছে, তার সিংহভাগই জীববৈচিত্র এবং পরিবেশের কথা মাথায় রাখছে না। পর্যটনের নামে ইঞ্জিনচালিত লঞ্চ অবাধে সুন্দরবনে প্রবেশ করছে। পানি ও পরিবেশ দূষণের সাথে শব্দ দূষণও ঘটছে। অনিয়ন্ত্রিত এসব কর্মকাণ্ডের কারণে সুন্দরবনে ইরাবতী ডলফিনসহ বিশ্বের অনেক বিপন্নপ্রায় প্রজাতির অস্তিত্ব বিলুপ্তির মুখে পড়েছে। ফলে এখনই সময় এ ধরনের পর্যটন ব্যবস্থার লাগাম টেনে ধরে সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয় নির্ভর ইকোট্যুরিজমের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলা।
এদিক থেকে উদাহরণ হিসেবে সরকারি উদ্যোগে দাকোপে অবস্থিত কালাবগী ইকোট্যুরিজমের কথা বলা যায়। খুলনা শহর থেকে সড়কপথে ৫০ কিলোমিটার দূরে সুন্দরবনের কালাবগী ফরেস্ট স্টেশনকে ঘিরে তৈরি হয়েছে ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রটি। এর আগে আমরা দেখেছি বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার করমজলে কুমির প্রজননকেন্দ্র ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠতে। কিন্তু এ পর্যটনকেন্দ্রটি প্রথাগত ট্যুরিজমের বাইরে গিয়ে সুন্দরবন রক্ষায় প্রকৃতপক্ষে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। বিপরীতে সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে লোকালয় নির্ভর ইকোট্যুরিস্ট এবং কমিউনিটি ট্যুরিস্টদের উদ্যোগগুলোকে প্রণোদনা দিলে প্রকৃতপক্ষেই সুন্দরবনের পরিবেশ, প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র রক্ষা পেতে পারে, আবার সুন্দরবনকে ঘিরে মানুষের আগ্রহ এবং বিনোদনের বিষয়টিও পরিপূর্ণতা পাবে।
দিব্যেন্দু দ্বীপ
সাহিত্যিক ও সাংবাদিক, পরিবেশ ও মানবাধিকারকর্মী
লেখাটি পড়ে লেখককে টাকা পাঠাতে পারেন।
যোগাযোগঃ ০১৮৪ ৬৯ ৭৩২৩২