১ নভেম্বর শুক্রবার বিকালে কলেজ ক্যাম্পাসে কিশোর আলোর একটি অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত হয় নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরার রাহাত। এ ঘটনায় আয়োজকদের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে শিক্ষার্থীরা বলছে, সংশ্লিষ্টদের অবহেলার কারণেই আবরারের মৃত্যু হয়েছে। তারা বলছে, ঘটনা চেপে রেখে আবরারকে কলেজের পাশের কোনো হাসপাতালে না নিয়ে মহাখালীর একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নাইমুল আবরার ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির দিবা শাখার শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী। ঢাকার আগারগাঁওয়ে পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন তিনি। (যুগান্তর)
মৃত্যুর এ ঘটনায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন নিহতের পিতা মো. মুজিবুর রহমান। পরে বিচারক আবরারের লাশ উত্তোলন ও ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন।
আবরার রাহাতের মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে তখন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এবং কারওয়ান বাজারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানব বন্ধন থেকে বলা হয়, নাইমুল আবরারের মৃত্যুর তথ্য গোপন, উদ্দেশ্যমূলক বিলম্বিত চিকিৎসা মানবাধিকার ও তথ্য অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং ফৌজদারি অপরাধ।
সময় টিভির সাথে বক্তব্যে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা অভিযোগ করেছে, এবং ঘটনার বিস্তারিত বলেছে। একজন অভিভাবক বলেছেন, কিআ’র প্রোগ্রামে আসতে শিক্ষার্থীদের প্রকারন্তরে বাধ্য করা হয়।
ধরুণ, আয়োজনটা প্রথম আলোর ছিল না, ছিল ছোটোখাটো কোনো একটি পত্রিকার বা কোনো সংগঠনের। সেরকম কোনো আয়োজনে যদি স্কুলের কোনো ছাত্র মারা যেত, তারপরেও কি অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হত, বা অনুষ্ঠান তারা চালিয়ে যেত? আইনগত এবং মানবিক কোনো বিবেচনায়ই কি সেটি করা যায়? সেক্ষেত্রে কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবেই আয়োজক এবং যে ব্যানারে অনুষ্ঠানটা সেই মালিককে গ্রেফতার করা হত। হত কিনা? তাহলে আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, প্রথম আলোর সম্পাদক এবং লেখক আনিসুল হককে এতদিনেও গ্রেফতার করা হল না কেন? তারা স্বার্থান্ধ, সম্রাজ্যবাদীদের দালাল, মৌলবাদ তোষণকারী -সেসব বলার তো দরকার নেই; অপরাধ তো অপরাধই, একজন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তার বিচার হবে না? মৃত্যুর জন্য তারা দায়ী যদি নাও হয়, যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা না করা এবং মৃত্যুর ঘটনা উন্মোচিত না করে অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ার জন্য তো তারা অবশ্যই অপরাধী। –দিব্যেন্দু দ্বীপ
সুস্পষ্টভাবে এটা ফৌজদারী অপরাধের কারণে তদন্তের নিরিখে গ্রেফতারি পরোয়ানা। এখন প্রথম আলো এবং কিশোর আলোর সম্পাদক আগাম জামিন নিতে পারেন, পালিয়ে থাকতে পারেন বা গ্রেফতার হতে পারেন। ধরে নিচ্ছি, তারা গ্রেফতার হবেন। ওনারা গ্রেফতার হলে এবং বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাতির সামনে যদি উন্মোচিত হয় যে এটা আসলেই ছিল অবহেলা, আসলেই আবরারের মৃত্যুকে অগ্রাহ্য করে অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়া হয়েছে, আসলেই আবরারকে কাছের কোনো হাসপাতালে না নিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মহাখালি একটা হাসপাতালে। কাছেই ছিল সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সেখানে নিয়ে যাওয়াটাই তো স্বাভাবিক ছিল।
আইন সবার জন্য সমান এই সত্যটি প্রতিষ্ঠিত হওয়া জন্যও এই গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রয়োজন ছিল।