১৯৭১ সালে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার খলিসাখালী গ্রামের মানদা রায়ের উপর অত্যাচার চালায় রাজাকাররা। প্রতিরোধ করতে গিয়ে শহীদ হন তার স্বামী নির্মল রায়। ঐদিন (২১ জুন ১৯৭১ ) সাথে ছিল মানদা রায়ের দুই মেয়ে দেড় বছরের লিপিকা রায় এবং নয় বছরের নিলিমা রায়।
লেখক সাংবাদিক দিব্যেন্দু দ্বীপ বাগেরহাট জেলায় সংগঠিত গণহত্যা নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে সন্ধান পান মানদা রায়ের। দিব্যেন্দু দ্বীপ তার সাক্ষাতকার নেন এবং বক্তব্য সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করেন। দিব্যেন্দু দ্বীপ একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে বীরঙ্গনা মানদা রায়ের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
ঐদিনের ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়, অন্যান্য গ্রামবাসীর মতো মানদা রায়ের পরিবারও জীবন বাঁচাতে পাটক্ষেতে গিয়ে লুকিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও রক্ষা হয়নি। রাজাকারেররা পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যদের সাথে নিয়ে মানদা রায়ের ওপর বর্বর নির্যাতন চালায়, কোল থেকে ছুড়ে ফেলে দেয় দেড় বছরের কন্যা শিশু লিপিকা রায়কে। নয় বছরের শিশু কন্যা নিলিমা রায়ের সামনে এ অত্যাচার চালানো হয়। এ সময় বাধা দিতে গিয়ে শহীদ হন মানদা রায়ের স্বামী নির্মল রায়।
মানদা রায় এখনো সংকটে আছেন, মন থেকে ১৯৭১ সালে রাজাকার এবং পাকিস্তানি বাহিনী দ্বারা সংগঠিত অত্যাচারের ক্ষত যেমন শুকায়নি, পাশাপাশি আর্থিকভাবেও তিনি কখনো স্বচ্ছল হতে পারেননি। এখন পর্যন্ত তিনি কোনো সংস্থা বা সংগঠনের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাননি। প্রতিরোধ করতে গিয়ে শহীদ হলেও স্বামী নির্মল রায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাননি, মানদা রায়েরও মেলেনি বীরঙ্গনা খেতাব।