১৯৭১ সালের ২৪ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে ফজর আলীর পরিবারে চারজন শহীদ হন। বর্তমানে পেশায় রিক্সাচালক ফজর আলীর পরিবারে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন মান্দার শেখ, মানিক শেখ, সোনাউল্লাহ শেখ এবং রাবেয়া বেগম (বড়ু বিবি)। এদিন খানসেনাদের গুলিতে কাড়াপাড়া ইউনিয়নের আরও অনেক নিরীহ মানুষ শহীদ হন। শহীদদের স্মরণে গত একান্ন বছরে কিছুই করা হয়নি, শহীদ পরিবারগুলো স্বীকৃতি যেমন পায়নি, পায়নি কোনো ক্ষতিপূরণ। কালাতিক্রান্ত এবং দু:খ ভারাক্রান্ত ফজর আলী শোককে শক্তিতে পরিণত করে ২১ ফেব্রুয়ারি (২০২২) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষা শহীদসহ সকল শহীদদের স্মরণে আয়োজন করেন বিশেষ এ স্মরণসভা। স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন শহীদস্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক দিব্যেন্দু দ্বীপ, কাড়াপাড়া ইউনিয়নের সুযোগ্য চেয়ারম্যার মহিতুর রহমান পল্টন, কাড়াপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দিদারুল আলম দিদার এবং কাড়াপাড়া ইউনিয়নের শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমাজকর্মী অশোখ কুমার পাল। দিব্যেন্দু দ্বীপের কাছে শহীদ পরিবারের সদস্যরা তাদের দু:খ দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। সমাজকর্মী ফজর আলী বলেন, আমরা শহীদ পরিবারের সদস্যরা খুব দুরাবস্থার মধ্যে আছি, কিন্তু সরকারি কোনো সহযোগিতা আমাদের কাছে পৌঁছে না। সরকারি ঘর আমরা পাই না, করোনাকালে কোনো রিলিফও আমরা পাইনি। সভায় উপস্থিত কাড়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশ্বা:স দেন— তিনি সর্বাগ্রে শহীদ পরিবারগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে সরকারি সাহায্য সহযোগিতা বণ্টন করবেন। এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের দু:খ দুর্দশার কথা যথাসম্ভব উপরে জানাবেন। শহীদস্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির, বাগেরহাট জেলার আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়া নিপু বলেন, আমি একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বলব— শহীদ পরিবারগুলো অবহেলিত, আমরা ত্রিশ লক্ষ শহীদের কথা শুধু মুখে বললে হবে না, শহীদ পরিবারগুলো কী অবস্থায় আছে জানতে হবে, তাদের দাবী দাওয়ার প্রতি মনোনিবেশ করতে হবে।