২৫ শে মার্চ// শেখ বাতেন

আমরা যখন সর্বশেষ সমঝোতা উন্মুক্ত রেখেছিলাম,
ওরা নতুন করে সৈন্য সমাবেশ করছিল
আমরা যখন শেষবারের মত ইনসাফ চেয়েছিলাম
ওরা ট্যাংকের চাকায় রাবার লাগাচ্ছিল
নি:শব্দে শহরে প্রবেশ কবার জন্য,
নেতারা ভেবেছিল বিষয়টি রাজনৈতিক
ফলে এমন ভয়ংকর ঘটনার পূর্ব সতর্কতা ছিল না,
নিজ রাষ্ট্রের ঘুমন্ত নাগরিকের ওপর
পুর্ণাঙ্গ সামরিক হামলার এমন দৃষ্টান্তও ছিল না পৃথিবীতে।

প্রথম রাতে রাজধানীতে সাত হাজার
প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় তিরিশ হাজার
এ ছিল হত্যাযজ্ঞের প্রাথমিক উদবোধন,
এরপর, যশোরে পচাত্তর হাজার, কুমিল্লায় পচানব্বই
চট্টলায় এক লক্ষ, খুলনায় এক লক্ষ পঞ্চাশ
গড়ে প্রতি পচিশ জনে একজন বাঙালি নিধন
প্রতিদিন ছয় থেকে বার হাজার খুন
চার লাখ ধর্ষন, চল্লিশ হাজার যুদ্ধশিশু–
আর্মেনিযা থেকে নানজিং গনহত্যার ইতিহাসে
স্বল্পসময়ে সর্ব্বোচ মানুষ নিধনের
এটাই ছিল বিশ্বে প্রথম দৃষ্টান্ত।

এই পরিসংখান পাশবিকতা বোঝাবার জন্য নয়
নতুন করে আবেগের আবহ নির্মাণের জন্য নয়
জলে, প্রান্তরে, শকুনের ঠোটে, কুকুরের চোয়ালে
মানবদেহের চিত্রকল্পে শিহরণ তোলার প্রয়োজন নেই
আমি বরং কাজের কথা বলতে চাইঃ
পচানব্বই হাজার পশু ও দেশীয় কুলাঙ্গারসহ
শত্রুরা কত জন ছিল? পরাজয়ে কতটা পালিয়েছে?
আর কতটা এখনও এই ভুখন্ডেই সক্রিয় আছে?
আমি জানতে চাই–
নৃসংশতায় আমারও কিছু অধিকার মূলতবি হয়ে আছে কি না ?
স্মরন করিয়ে দিতে চাই–
এখনো ত্রিসীমানায় থাকা ক্ষমার অযোগ্য ঘাতক
মধ্যরাতের স্যাটেলাইটে কলরব-করা নব্য কলাবরেটর
এবং সেসব নিরপেক্ষ চর্চাবিদ, যাদের সন্দেহ করি,
মার্চের সেই দিনে কোথায় ছিলেন?
যুদ্ধের ভয়ংকর সময় কীসে নিবিষ্ট ছিলেন?
অখণ্ড পাকিস্তানে গোপনে কতভাগ সম্মত ছিলেন ?

আমি বহুমুখী সীমালংঘনে অতিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা
জরুরি দু:সংবাদ দিতে চাই–
যারা পূর্ণবার আক্রমন উদবোধন করেছেন,
এখানে সেখানে নির্দোষ জনতার রক্ত ঝরাচ্ছেন
তাদের সর্তক সংকেত দিতে চাই–
রাজনৈতিক ও সামরিক যুদ্ধের পার্থক্য মাত্র এক রাতের,
এবার পথ শুধু একদিকেই খোলা, -সংক্ষুব্ধ বঙ্গোপসাগর।

শেখ বাতেন