কিছু বই রয়েছে যা ইংরেজি সাহিত্য না হলেও ইংরেজি ভাষাতেই সারা পৃথিবীতে প্রধানত পঠিত হয়ে থাকে সে হিসেবে সেগুলোও ইংরেজি সাহিত্যের মর্যাদা পায়। তাই এখানে আলোচিত একশোটি বইয়ের মধ্যে মাঝে মাঝে এমন কিছু বইও আসবে যার মূল পাণ্ডুলিপিটি ইংরেজিতে লেখা হয়েছিল না। তাছাড়া আদীতে ইংরেজি ভাষাটি এতটা পোক্তও ছিল না, বরং সেখানে ল্যাটিনের প্রভাব ছিল অনেক বেশি। যে কারণে থমাস মুর ‘ইউটোপিয়া’ বইটি ইংরেজিতে না লিখে ল্যাটিন ভাষাতে লিখেছিলেন।
১. ইলিয়াড ও ওডেসি -গ্রিক মহাকবি হোমার
* গ্রিক মহাকাব্য;
* প্রাচীন গ্রিসের ইলিয়ন শহরের নামানুসারে মহাকাব্যটির নামকরণ করা হয়;
* মহাকাব্যটি ২৪টি স্বর্গে বিভক্ত;
* এতে ১৬০০০ পঙ্ক্তি কবিতা আছে;
* এটি মূলত একটি যুদ্ধের কাহিনী;
* যুদ্ধ শুরু হয়েছিল হেলেন নামে একজন নারীকে কেন্দ্র করে;
* যুদ্ধে গ্রিকদের সেরা বীর ছিলেন এথিলিস;
* এবং ট্রয়দের পক্ষের বীর ছিলেন হেক্টর;
* যুদ্ধে ট্রয়ানরা পরাজিত হয়, এবং হেক্টর এথিলিস কর্তৃক নিহত হন;
* গ্রিকরা ট্রয় নগরী জ্বালিয়ে দেয়।
হোমার
* হোমার মূলত ইলিয়াড এবং ওডসি ’র লেখক হিসেবে খ্যাত;
* তিনিই প্রথম মহাকাব্য (ইউরোপে) রচনা করেন;
* ইউরোপের প্রথম সাহিত্য রচয়িতা হিসেবেও তাকেই গণ্য করা হয়;
* ইলিয়াড পাশ্চাত্য সাহিত্যের প্রাচীনতম রচনা।
* হোমারের জন্ম-মৃত্যু জ্ঞাত নয়, তবে ধারণা করা হয় তিনি খ্রিস্টপূর্ব আটশো শতকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
২. ঔদিপাস (Oedipas the king) – সফোক্লিস
সফোক্লিসের বিখ্যাত নাটক ঔদিপাস মূলত ইংরেজি ভাষাতেই আধুনিক যুগে বিশ্বব্যাপী পঠিত হয়েছে এবং হয়ে থাকে। সফোক্লিসের বিখ্যাত এই নাটকটি থেকেই Oedipus complex নামে মনস্তাত্ত্বিক টার্মটির সূচনা হয়েছে।
সফোক্লিস
* সফোক্লিস (খ্রিস্টপূর্ব ৪৯৭/৪৯৬-৪০৬/৪০৫);
* তিনজন গ্রিক ট্রাজেডিয়ানদের মধ্যে তিনি একজন যাদের লেখা সংরক্ষিত (খুঁজে পাওয়া গেছে) হয়েছে;
* অন্য দুইজন হলেন এসকাইলাস এবং ইউরিপিদেস;
* ঔদিপাস ছাড়াও সফোক্লিসের লেখা আরো কয়েকটি বিখ্যাত নাটক রয়েছে। এর মধ্যে আন্তিগনে এবং ইলেক্ট্রা অন্যতম।
৩. ইউটোপিয়া -থমাস মুর
বইটিতে একটি আদর্শ সমাজ ব্যবস্থা কল্পনা করা হয়েছে। একটি দ্বীপ রাষ্ট্র কল্পনা করে, সেখানকাজ ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ১৫১৬ খ্রিস্টাব্দে ল্যাটিন ভাষায় গ্রন্থটি রচিত হয়। তবে ইংরেজি ভাষাতেই বইটি সর্বাধিক পঠিত হয়েছে।
‘ইউটোপিয়া’ অর্থ কোথাও না। উপন্যাসটিতে মুর এমন একটি দেশের কল্পনা করেছিলেন যেরকম দেশ কোথাও ছিল না। মূলত উপন্যাসটিতে দুটি ভাগ রয়েছে। প্রথম অংশ তখনকার চেনা-জানা রাষ্ট্রের (তৎকালীন ব্রিটেন, যেখানে মুর নিপীড়িত, নির্যাতিত, ভাগ্যহারা মানুষের চিত্র এঁকেছেন) বর্ণনা, এবং দ্বিতীয় অংশে আদর্শ সমাজের চিত্র অংকন করেছেন। যদিও ইউটোপিয় শব্দটি এখন অলিক কল্পনা বুঝাতে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু মুরের ইউটোপিয়া অলীক ছিল না, এটা ছিল একটি আদর্শ রাষ্ট্রের প্রত্যাশা। বলা যায়, কম্যুনিজমের ধারণা মুরের ‘ইউটোপিয়া’ উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে।
রেঁনেসা যুগের প্রথম মানবতাবাদী থমাস মুর (১৪৭৮–১৫৩৫) ছিলেন একজন আইনজীবী, দার্শনিক, লেখক এবং পুর্নজাগরণের (Renaissance) অন্যতম একজন যোদ্ধা। তিনি ল্যাটিন এবং ইংরেজি উভয় ভাষাতে সাহিত্য রচনা করেছেন।
ইংরেজি ভাষায় তিনি ডিসকাশন অন পলিটিক্যাল সাবজেক্ট এবং বায়োগ্রাফিকস রচনা করেছেন।
৪. ড. ফস্টাস -ক্রিস্টোফার মারলো
দ্য ট্র্যাজিকাল হিস্ট্রি অফ দ্য লাইফ অ্যান্ড ডেথ অফ ডক্টর ফস্টাস (The Tragical History of the Life and Death of Doctor Faustus); সংক্ষেপে ডক্টর ফস্টাস (Doctor Faustus) ক্রিস্টোফার মার্লোর লেখা একটি অনবদ্য ইংরেজি নাটক। ফাউস্টের শয়তানের কাছে আত্মবিক্রয়ের বিখ্যাত কাহিনিটি অবলম্বনে এই নাটক রচিত হয়েছে। ১৫৯৪ সালে নাটকটি প্রথম মঞ্চস্থ হয়। এবং মার্লোর মৃত্যুর ১১ বছর পর ১৬০৪ সালে নাটকটি পুস্তকাকারে প্রথম প্রকাশিত হয়। এটি এলিজাবেথান পিরিয়ডের অন্যতম একটি আলোচিত এবং বিতর্কিত ট্রাজেডি নাটক।
৫. স্প্যানিশ ট্রাজেডি -থমাস কিড
কিডের অনেক লেখা খুঁজে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয় শেকসপিয়ারের হেমলেট নাটকটি থমাস কিডের স্প্যানিশ ট্রাজেডি অনুসরণে রচিত।
থমাস কিড (১৫৫৮-১৫৯৪) ছিলেন একজন সফল নাট্যকার।
Spanish Tragedy ’র মধ্য দিয়ে tragic revenge play ’র সূত্রপাত হয়। যা পরবর্তীতে শেকসপিয়রের নাটকে দেখা যায়।
চলবে (প্রতি পর্বে পাঁচটি করে বই নিয়ে আলোচনা করা হবে) —দিব্যেন্দু দ্বীপ