ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুপল্লিতে চালানো হামলার ঘটনায় গ্রেফতার জাহাঙ্গীর আলম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
তৃতীয় দফায় ৩ দিনের রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালতে জাহাঙ্গীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. ইশতিয়াক আহমেদ এসব তথ্য জানান।
জাহাঙ্গীর তার জবানবন্দিতে জানায়, গত ২৯ অক্টোবর সকালে হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় বাজার থেকে শংকরাদহ গ্রামের জুয়েল মিয়া নামের এক যুবকের কাছ থেকে ধর্মীয় অবমাননাকর ছবিটি ’শেয়ারইট’-এর মাধ্যমে নিজের মোবাইল ফোনে নেয়। এরপর ছবিটি প্রিন্ট করে ওইদিন সন্ধ্যায় লিফলেট বানিয়ে সেটি বিলি করে।
হরিপুরের ফারুক মিয়া, হাজী বিল্লাল ও কাপ্তান মিয়া রসরাজকে ধরে আনার জন্য জাহাঙ্গীরকে নির্দেশ দেন। পরে রসরাজকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
জাহাঙ্গীর আদালতকে আরও জানায়, ২৯ অক্টোবর সকালে হরিণবেড় বাজারে রসরাজের ফেসবুকের পোস্টটি নিয়ে স্থানীয় খালেদ, মোবারক, ফারুক মিয়া, নয়ন মিয়া, ইউপি সদস্য প্রফুল্ল চন্দ্র দাস রসরাজের প্রতিবেশী অনুকুল চন্দ্র দাসের ছেলে আশুতোষ চন্দ্র দাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। সে সময় আশুতোষ বলেছিল ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় কে বা কারা রসরাজের ফেসবুক আইডি থেকে ওই ছবিটি পোস্ট করে।
পরদিন বিদেশ থেকে এক লোক বিষয়টি আশুতোষকে জানায়। এরপর আশুতোষ রসরাজের ফেসবুক থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করে আরেকটি পোস্ট দেন। রসরাজের ফেসবুক আইডি ও পাসওয়ার্ড আশুতোষ জানতো বলেও জানায় জাহাঙ্গীর।
ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরীফকে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র পোস্ট দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৩০ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুপল্লিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ মামলায় ২৮ নভেম্বর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরের কালাইশ্রীপাড়া থেকে জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তাকে তিন দফায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।