প্রাণতোষ তালুকদার
কোচিং বাণিজ্য বেড়েই চলছে। কোচিং বাণিজ্য কিছু কিছু বিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলক চলছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলক প্রতি ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে ১০০০টাকা করে নিচ্ছেন শিক্ষকরা। আবার ছাত্র-ছাত্রীদের মুখে শোনা যাচ্ছে কিছু কিছু বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন যে কোচিং না পড়লে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দিবেন।
এজন্য অভিভাবকরাও মনে মনে ক্ষুব্ধ এবং অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীদের মুখে শোনা যাচ্ছে বিদ্যালয় ছুটির পর কোচিং বসে। গরীব/দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে ১০০০টাকা করে দেয়া খুবই কষ্টকর। একদিকে প্রাইভেট শিক্ষক দিয়ে পড়ানোর টাকা আর একদিকে কোচিং সেন্টারের শিক্ষকদের টাকা দিতে গিয়ে দরিদ্র পরিবারগুলো খুবই হিমসিম খাচ্ছে।
আবার বিদ্যালয়গুলোর বাহিরেও কোচিং সেন্টার বেড়ে যাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে সাইনবোর্ডবিহীন গোপনে কিছু কিছু ফ্ল্যাট বাড়িতে কোচিং-বাণিজ্য চলছে। অনেক অভিভাবকও বাধ্যতামূলক কোচিং সেন্টারের প্রতি ঝুঁকে পড়ছেন ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানোর জন্য। বলছেন যে বিদ্যালয়গুলোতে আগের মতো লেখাপড়া হয় না। তাই বাধ্য হয়ে কোচিংয়ে দিতে হচ্ছে। কারণ কোচিং সেন্টারগুলো বিদ্যালয়ের শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত। কোচিংয়ে না দিলে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দিবে বলে অভিভাবকরা মনে করেন এবং কিছু কিছু বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছেন এমন বক্তব্য শিক্ষার্থীদেরও।
অভিভাবকরা বলছে, বিদ্যালয়ে ঠিকমতো লেখাপড়া হলে কোচিং সেন্টারের দরকার হয় না। কিন্তু শিক্ষকরা এখন ভালো বেতন পাওয়া সত্ত্বেও অধিক টাকা উপার্জনের আশায় কোচিং সেন্টারের রমারমা ব্যবসা খুলে কোচিং-বাণিজ্য করছে এবং গরীব/দরিদ্রদের মাথায় একটা বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে।
ষষ্ঠ আরডিএ জাতীয় বিতর্ক উৎসবের উদ্বোধনী বক্তব্যে মাননীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী (মাদ্রাসা ও কারিগরি) কাজী কেরামত আলী বলেছিলেন কোচিং-বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়া হবে। কোচিং-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। এ বিষয়ে শিক্ষক-সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন।
সে আশায় ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা তাকিয়ে আছেন কখন কবে নাগাদ কোচিং-বাণিজ্য বন্ধ হবে। কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ হলেই অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীরা একটু স্বস্তি পাবে। এবং বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকরা মনোযোগের সহিত ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া করাবেন বলে তাঁদের প্রত্যাশা।