সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক দেশেই এখন চিকিৎসা নিচ্ছেন

ডাক্তারদের মন খারাপ করা ঘোষণা- মাত্র ছ’মাস বাঁচবেন কবি। জীবনের এ অন্তিমকাল কবি কাটাতে চান নিজ বাসভূমে। জল-কাদায় নিমগ্ন বাংলাদেশে। বন্ধু-স্বজন সান্নিধ্যে।

সৈয়দ শামসুল হক

ফুসফুসে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে গত এপ্রিল মাস থেকে লন্ডনে চিকিৎসার জন্য অবস্থান করছিলেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। ১৫ এপ্রিল সৈয়দ হক চিকিৎসার জন্য তার স্ত্রী কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হককে নিয়ে লন্ডনে যান। লন্ডনে বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার পর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান। লন্ডনের রয়্যাল মার্সডেন হাসপাতালে তার ক্যান্সারের চিকিৎসা পর্বে শরীরে ৬টি কেমোথেরাপি দেওয়া হয়।

চিকিৎসার পর গত বৃহস্পতি বার সকালে ঢাকা এসে পৌঁছেছেন তিনি। লন্ডনের হিরো বিমানবন্দর হয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন এই সব্যসাচী লেখক। সেখানকার চিকিৎসক তাকে দেশে ফিরে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর পরামর্শ দিয়েছেন। পারিবারিক আবহে হাসি-খুশি ও আনন্দে সময় কাটাতে বলেছেন। দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে ফুসফুসের ক্যানসারের চিকিৎসা চলছিল তার।

লন্ডনের ওই বিমানবন্দরে সৈয়দ শামসুল হককে বিদায় জানাতে এসেছিলেন বিশিষ্ট নাট্যজন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, “সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক লন্ডন এসেছিলেন ফুসফুসে কর্কট রোগের চিকিৎসার জন্য। প্রায় তিন মাস (প্রকৃতপক্ষে সাড়ে চার মাস) অসফল চিকিৎসার পর ফিরে যাচ্ছেন প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে। ডাক্তারদের মন খারাপ করা ঘোষণা- মাত্র ছ’মাস বাঁচবেন কবি। জীবনের এ অন্তিমকাল কবি কাটাতে চান নিজ বাসভূমে। জল-কাদায় নিমগ্ন বাংলাদেশে। বন্ধু-স্বজন সান্নিধ্যে। বাংলা শিল্প সাহিত্য সাংস্কৃতিক ইতিহাসের প্রধানতম এ কবি নাট্যকার বিজয়ীর মতো ফিরে গেলেন মৃত্যু পরোয়ানা মাথায় নিয়ে। চোখে অশ্র, মুখে নতুন নাটক লেখার প্রত্যয় নিয়ে ধীরে অপেক্ষমাণ বিমানে আরোহণ লক্ষ্যে অদৃশ্য হলেন প্রিয় হক ভাই। পেছনে আমরা মন খারাপ করে হিথরো বিমানবন্দরে পড়ে থাকলাম।”

লন্ডন থেকে দেশে ফেরার পর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ইউনাইটেড হাসপাতালের ভারতীয় বিশেষজ্ঞ ডা. শান্তনু চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে শনিবার তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে।

লন্ডনে চার মাস চিকিৎসার পর বৃহস্পতিবার সৈয়দ শামসুল হক দেশে ফিরে চিকিৎসার পরবর্তী ধাপ শুরু হয়েছে। যেহেতু তার শরীরের ক্যান্সার পুরো বিলুপ্ত হয়নি, তাই সৈয়দ হকের শরীরে আবারও কেমোথেরাপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে চলবে ইমুইনোথেরাপি।