রাজধানীর বনশ্রী এলাকার গৃহকর্মী লাইলি বেগম (২৫) বেতনের পাওনা টাকা আনতে গিয়েই হত্যার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে তাঁর দুলাভাই নুর ইসলাম।
আজ শুক্রবার সকালে বনশ্রীর ‘জি’ ব্লকের একটি বাসা থেকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় লাইলির লাশ উদ্ধার করা হয়।
নূর ইসলাম জানান, গত ১১ মাস ধরে গৃহকর্তা মঈনউদ্দিনের বাসায় কাজ করছেন লাইলি। সেখানে তাঁর চার মাসের বেতন বকেয়া ছিল। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে মঈনউদ্দিনের সঙ্গে ঝগড়া হচ্ছিল তাঁর। আজ সকাল ৭টার দিকে লাইলি পাওনা টাকা নিতে ওই বাসায় যান। এরপর বিবস্ত্র অবস্থায় তাঁর ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।
লাইলি বেগমের বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি থানার কাশিপুর ইউনিয়নে। তিনি খিলগাঁওয়ের হিন্দুপাড়া এলাকায় থাকতেন। লাইলির লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার পর বাসার গৃহকর্তা মঈনউদ্দিনকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লাইলির দুই সন্তান আছে। এদের একজনের নাম আতিকুর (৩), অন্যজনের নাম মরিয়ম (৫)।
লাইলির স্বামী নজরুল ইসলাম কুড়িগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আটক হন। বর্তমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লির একটি কারাগারে বন্দি আছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বর্ষা জানান, লাইলিকে হত্যা করে বিবস্ত্র অবস্থায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। বেতন নিয়ে লাইলি ও গৃহকর্তা মঈনউদ্দিনের মধ্যে ঝামেলা চলছিল।
বর্ষা আরো জানান, এর আগে আরো দুজন গৃহকর্মী এ বাসায় মারা যান। তবে তা প্রকাশ পায়নি। তিনি আরো জানান, প্রায় ছয় মাস আগে এক গর্ভবতী গৃহকর্মীকে মারধর করেন মঈনউদ্দিন।
এদিকে, লাইলির মৃত্যুর পর স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষুব্ধ হয়ে মঈনউদ্দিনের বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং একই সঙ্গে স্লোগান দিয়ে মঈনউদ্দিনের বিচার দাবি করে। তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় সংঘর্ষ চলছে। স্থানীয় বাসিন্দারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খিলগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার জুঁই ফারজানা জানান, এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে। ওই প্রতিবেদন এলে বোঝা যাবে তা হত্যা না আত্মহত্যা।