দুই বছরের ছোট শিশু, কেবল ছোট ছোট বাক্য দিয়ে কথা বলতে পারে। ওর নাম যিশু। মায়ের নাম তাহমিনা আক্তার, পিতার নাম সৌমেন চট্টোপাধ্যায়। বিয়ের পর থেকে তাহমিনার পিতা-মাতার সাথে সম্পর্ক নেই। এদিকে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ছোট ছোট কলহ-বিবাদ থাকলেও বড় কোনো সমস্যা নেই। তবে অর্থনৈতিক সমস্যা রয়েছে। হঠাৎ একদিন এরকম একটি ছোটখাটো কলহের জেরে তাহমিনা পিতার বাসায় চলে যায়। তাহমিনার পিতা সুযোগ পেয়ে মেয়েকে দিয়ে সৌমেনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলা করায়। যিশু জীবনে এই প্রথম পিতার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। ফলে তার শিশু মনোজগৎ ভয়ংকরভাবে বিষন্ন হয়ে পড়ে। পাশাপাশি আরো কিছু ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়। যিশু যখন বলে, ‘জন খাবো’। ওর নানা সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে ধমকে ওঠে— ‘জন’ কী আবার, ‘পানি’ বল। শিশুটি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে থাকে। যিশু যখন ‘বাবা’ ‘বাবা’ বলে ডাকতে থাকে তখনও ওর নানা চিৎকার করে ‘আব্বা’ বলতে বলে। শিশুটি কিছুই বুঝে উঠতে পারে না, এ যেন তার কাছে পুরোপুরি একটা অচেনা জগৎ। শিশুটির সামনে থেকে একদিন মাংস কেড়ে নেওয়া হয়, এবং ও ‘গোস্ত’ বলতে না পারায় শেষ পর্যন্ত যিশুকে মাংস খেতে দেওয়া হয় না। এইদিন শিশুটি চরমভাবে আঘাত পায়। ভয় এবং বিস্ময়ে যিশু কথা বলা বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে যিশু আর কোনোদিন কথা বলেনি।