আপনার রক্তমাংসে গড়া কন্যার বা কন্যা-প্রতিমার চেহারাটা সামনে রেখে পড়ুন— “মৃত্যুহীন স্পর্শদানে, কন্যা আমার” !! —ফতেমোল্লা
মাটির ভুবন পরে, মাটির জীবন ভরে, ছন্দে লয়ে খেলা করে – অমূল্যরতন,
নিসর্গের লক্ষ তারা, মুগ্ধ চোখে বাক্যহারা, দেখে দেখে হয় সারা – নিসর্গের ধন।
রংধনু রং যত, লক্ষ ফুলের মত, ছোট্ট অঙ্গে শত শত – খেলা করে তার,
কোথা রাখি কোথা রাখি ! অমিয় সুখের পাখী, বুকের পাঁজরে ঢাকি – কন্যা আমার!
সৃষ্টি-রহস্যরাশি, তারে ঘিরে ওঠে হাসি, বিপুল সুন্দর আসি’ – করে যেন মেলা,
এ যেন দণ্ডে-পলে, উছল জলধি জলে, শত পূর্ণিমা-ঢলে – অপরূপ খেলা!
তরঙ্গ ভঙ্গে উঠি’, অনঙ্গ অঙ্গে লুটি’, সহস্র রঙ্গে টুটি – নিমেষে নিমেষে,
লক্ষ কিরীট-চয়নে, অনির্বচন বয়নে, অপরিতৃপ্ত নয়নে – দেখি অনিমেষে !!
নীরব জলদমন্দ্র, নিথর জাগে অতন্দ্র, নিযুত সুর্য্যচন্দ্র – অসীমের গায়,
স্থবির, জীবনহীন, গভীর মরনে লীন, দেহটিরে চিরদিন – বহে বহে যায়।
এ ধরণী বন্ধ্যা নয়, শত বর্ণগন্ধময়, কত জন্ম কত লয় – নাহি জানি কার,
মোর প্রাণ এইখানে, নিত্য প্রভাত-গানে, স্বর্গসুধার স্নানে – কন্যা আমার!
মরন সহস্রধারে, দুর্ধর্ষ ছোবল মারে, উন্মাদের মত নাড়ে – ভিত্তি জীবনের,
তবু বসুন্ধরা পরে, দিক হতে দিগন্তরে, যুগ হতে যুগান্তরে – কি খেলা প্রাণের!
সে প্রাণ তীব্রস্রোতে, অনাদি-অনন্ত হতে, ছুটিয়া এল আলোতে – চোখের পলকে,
ঘন এ জীবন্ত নীড়ে, সায়াহ্নের সিন্ধুতীরে, ছোট্ট সুধা-বিন্দুটিরে – দেখি অপলকে!
এ জীবন মরূতৃষা, যন্ত্রণায় লুপ্তদিশা, মরণের অমানিশা – অঙ্গে অঙ্গে তার,
প্রাণ শুধু এইখানে, উষ্ণ ধমনী-টানে, মৃত্যুহীন স্পর্শদানে – কন্যা আমার !!!!