কবি,
কবিত্ব লুকাও,
লুকাও তোমার মুঠো মুঠো আদ্র হৃদয়;
ওদের চেয়ে দিগুণ জোরে
কষে লাথি মারো ভৃত্যের কাছায়।
হাবভাবে অবিকল কিছু মূর্তি বানাও,
পিছে পিছে, বাহন হয়ে; চলতে থাকো।
অভিশপ্ত ভাবো দুনিয়ার মজদুর যতো।
এভাবে, প্রকারে আকারে,
হাসি ঠাট্টায়, আড়ম্বরে
ভিড়ে যাও ওদের দলে।
হয়ে যাও একদম ওদের মতো।
ভাব আর ভোগের দুনিয়ায়
তুমিও প্রতিদ্বন্দ্বী হও,
ভণিতা করো ওদের সাথে পাল্লা দেবার,
পড়ে যাও, হেরে যাও, কাঁদো;
নিজেকে পরাজিত করো,
হাহাকার করো ওদের কাছে পাবার।
ওরা তোমার কান্না দেখতে চায়,
ওরা তোমার পরাজয় দেখতে চায়।
চাঁদের মতো নির্বোধ নিষ্ঠুর ওরা,
ওদের হায় হ্যালো, ওদের পরিচয়,
ওদের কিছু আজানুলম্বিত হায় হায়।
ওদের গর্বিত করো,
ওদের হাতে পাতে, প্রিয়তে
পণ্যের হুলুস্থুল দেখে
হাত তালি দাও, বাহবা দাও,
ওদের হোহো করে হাসতে দাও
ওদের অহংকারের শীর্ষে চড়তে দাও।
এরপর একদিন; ওরা;
ওরা নড়বড় করে নড়বে,
ধপাস ধপাস করে পড়বে;
ওরা পড়বে শূন্য হতে,
শূন্য হাতে, পিঠে জগদ্দল পাথর চাপিয়ে।
তখন; তুমি, শুধু তুমি,
মহাশূন্যের সমান ভাসমান তুমি,
ওদের বাঁচাতে পারো, মারতেও পারো,
ছুড়ে দিতে পারো ডাস্টবিনে
যেখানে ওদের চেয়েও কিঞ্চিত
কিছু স্বহৃদয় কীট কিলবিল করে।
ওদের মাপটা তো আগেই জানো।
তবু আবার মেপে দেখো,
দেখবে প্রতি বছর কমপক্ষে
দুই ইঞ্চি করে ওরা কমেছে!
খর্বকায়, অতি খর্বকায় এখন,
কেউ কেউ ওরা আনুবিক্ষণিক হয়েছে।
এখন তুমি ওদের আঙ্গুলের ডগায় পাবে,
হাতের মুঠোতে পাবে,
খুব দেখে দেখে পথ না চললে
ওরা তোমার পায়ের তলে পিষ্ঠ হবে।
নাড়বে চাড়বে,
এতদিনের ক্লান্তি কাটাতে
কিছুক্ষণ ঠিকই ওদের নিয়ে খেলবে;
তাই বলে সত্যিই কি তুমি ওদের মারবে?
মেরো না, বাঁচাও, ওদের বাঁচিয়ে দাও।
মানুষ করো, অবশেষে ওদের মানুষ করো।
প্রতি মিনিটে মাইল মাইল করে লম্বা করো,
ওদের মহাকাশের সমান মহান করো।
বিশালত্বের বৈভব জানতে পেরে ওরা বিহ্বল হবে,
এভাবে পৃথিবীটা সত্যি স্বর্গ হবে।
কবি, এখন কবিত্ব লুকাও,