১
ঘৃণা হয় না কিছুতে আর,
দুঃখ লাগে না কিছুতে আর,
পৃথিবীর এক মহাবিস্ময় আজ আমায়
বিমূঢ় করেছে।
বিশ্বাস করতে পারব আর কখনও
কোনো কোকিলের ডাক?
বিরহ কাতর যে ডাহুক পাখিটাকে
বাঁচিয়ে ছিলাম একদিন ভালোবেসে
খুন করব না কেন
তাকে ডাইনি ভেবে এখন তবে?
[পারব না
তারে আমি ভালোবাসি যে!]
আমাকে ক্লান্ত করেছে,
আমাকে নিঃশ্বেষ করেছে,
এক অবিরত অভিলাষ;
নির্মোহ ভালোবাসার নামে।
২
ভুল ছিল না তার,
ভালোবাসা চেয়ে, ভালোবেসে
ভুল করেনি কেউ আজও
পৃথিবীতে কেউ কোনোদিন।
আমি পারিনি অখ্যাত এক
প্রেমিক হতে শুধু তার জন্য,
আমি পারিনি যেতে যেথায় শুধু
আমি এবং সে থাকে অগ্রগণ্য।
৩
ছিঁটকে পড়েছি এক মহাশূন্যে,
দুঃখও কি সয় সেখানে?
এখানে যে কাঁদতে মানা,
হেসে বলি-
ছিলাম কীসের জন্যে?
ভুল ছিল, ভুলের সাথে ফুল ছিল,
এখন শুধু ছায়া আছে,
নিষিদ্ধ সব মায়া আছে!
৪
প্রতিটা মিনিট এত দীর্ঘ হয়?
এ যেন এক মহা শতাব্দীর মত!
পৃথিবীতে মানুষ না জন্মালে কে কার হত?
স্ফিত হৃদয়টাকে ফুটো করে
পারি কি আমি সন্ন্যাস হতে কোনো?
ছায়া হয়ে সে আসে আমার চারপাশে,
আমি কি যেতে পারব ঘুমে
একদিনও তারে না চুমে।
যদি সে না আসে?
আমি কি দেখব তার ছায়া
শুধু যখন তা আকাশে ভাসে,
পাব কি তারে শুধু আমার বিভ্রমে?
বিস্মিত হই ভেবে–
আমি তারে
সত্যি এতটা ভালোবেসেছিলাম মনে মনে।
৫
একটা অতিকায় সমাজের সাথে যুদ্ধ,
বলতে গেলে একটা রাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধ
রাষ্ট্রের মধ্যে থেকে!
নিজের সাথে যুদ্ধ-
প্রায় সকলের বিরাগভাজন হওয়া,
প্রতিদিন জীবন ক্ষয়ে যাওয়া,
তবু আশার প্রদীপে সলতে জোড়া দিয়ে
বাঁচতে চাওয়া, বাঁচাতে চাওয়া।
দশ বছরের অবিরত সংগ্রাম,
বর্ণনাতীত, অবিশ্রাম।
দুঃখ দহন সবই ছিল,
তবু পিছপা হইনি কখনো,
দিনশেষে এক কদম হলেও
এগোতাম জীবনের পথে।
অন্তরটা পরিব্রাজক ঠিকই,
তাই বলে পরাভৃত হইনি কোনোদিন!
সব এমন বিফলে গেল!
মুহূর্তে সব শেষ করে দিল!
৬
কোনোদিন এভাবে আকাশটাকে দেখিনি,
শূন্যতার কথা শুনেছি শুধু।
তাকিয়ে আছি আজ দ্যুলোকে…
শিখে নিতে হবে
কীভাবে সে এমন শূন্যতা সয়।
জানতে হবে
মহাশূন্য কেন এমন বজ্রঘাতী হয়!
রক্তাক্ত রঙধনুতে আমি খুঁজতে চাই
ভিন্ন এক গোপন বিপ্লবের পরিচয়।
বুঝে নিতে হবে
কেন সে এমন খুনী হল!
আকাশটা তো শুধু নীলই ছিল।
অামাকে আরও বুঝতে হবে,
মাত্র তিনটা দিন,
তারপর আমায় কারণ খুঁজতে হবে
মানুষের হৃদয়ের জন্য লড়তে হবে।
নিগৃহীত এক পিতার দোহাই,
এভাবে
রক্তাক্ত এক ইতিহাসে
হবেই হবে একদিন মানবাত্মার জয়।