কচুয়ায় ছেলেটা আজকে আবার সামনে পড়লো। সিদ্ধান্ত নিলাম, কিছু করা দরকার।
আশেপাশে অনেক লোক জড়ো, উন্মুক্ত আহ্বান করলাম—কে আমার সাথে ভলান্টিয়ার করতে রাজি আছেন।
কেউ আগালো না, এগিয়ে আসলেন একজন নারী অবশেষে।
জনৈক ঐ নারীর (ছবিতে ডানে) সহযোগিতায় সাকিলকে বাড়িতে নিয়ে গেলাম। বাড়িতে ঢোকার মুখে পাওয়া গেলো সাকিলে মাকে (ছবিতে বামে)।
ছেলেটার ওয়ারিশ খুঁজতে গিয়ে দেখলাম, ওর মা ছেড়ে গেছে ছোটোবেলায়, পিতা আবার বিয়ে করেছে, সৎ মা যে খুব অসুবিধা তা মনে হলো না, কিন্তু বাস্তবতা ঐ পরিবারে এমনই যে আসলে চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া তেমন কিছু করার নেই তাদের। মন মস্তিষ্ক হৃদয় সবই তাদের অকেজো, শুধু শরীরটা নিয়মে মেনে চলে।
আমি ঘণ্টাখানেক ঐ বাড়ির উঠানে বসলাম, শেষ পর্যন্ত দেখলাম ও এটাসমেন্ট ফিল করে ওর দাদির সাথে, বুঝলাম, ওর দাদি ওকে যা পারে আদর দেয়, দেখাশুনা করে। ওরা দাদীকে আর পাওয়া গেলো না, তখন দূরে কোথায় গেছে।
কী করা যায় ভাবতে ভাবতে, প্রতিবেশীদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে ডাকতে চাইলাম, এবার এগিয়ো আসল দুটো মেয়ে। ওদের বললাম, তোমরা ওর চিকিৎসার দায়িত্ব নাও, আমি পিছনে আছি।
আমি নিজেই ফান্ড কালেকশন করে চিকিৎসার চেষ্টা করতে পারি, কিন্তু তাতে সমস্যা আছে। যেহেতু আমার নিজের কোটি কোটি টাকা নেই, তাই এ কাজটি নিজে করা যাবে না।
ফান্ড স্থানীয় লোকে কালেক্ট করুক, আমি বরং ওদের ফান্ডে পারলে কিছু দিই, এবং নির্দেশনা এবং সময় দিই। এক্ষেত্রে সময় দেওয়াটা খুব জরুরী। যারা সাকিলের চিকিৎসার জন্য সময় দিতে চান বা এ ধরনের রোগীদের চিকিৎসার জন্য অবদান রাখতে চান তারা আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
যোগাযোগ: ০১৮৪৬৯৭৩২৩২
https://youtu.be/Kpw6s8E7oOE?t=58
সাকিলের চিকিৎসায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেনঃ
যেটা বুঝলাম, ছেলেটি মোটেও মানসিক প্রতিবন্ধী নয়, ও মূলত অটিস্টিক। পরিবার ও লোকজন টরচার করে করে ওকে এই লেভেলে এনেছে।
যাইহোক, ব্যবস্থা একটা হচ্ছেই। আমি এ পর্যন্ত যাদের কাছে সময় চেয়েছি সবাই সময় দিতে রাজি হয়েছেন। টাকা দিলে হবে না, সাথে থেকে টাকা খরচ করতে হবে। সময় দেয়াটাই আসল কথা। শুধু টাকার কোনো বেল নাই। অাগে আপনাকে মানসিকভাবে জড়িত হতে হবে। না পারলে আপনার টাকা লাগবে না।
ছেলেটির ওয়ার্ড মেম্বার আমার বয়সী একজন, মামুনকে ডেকে আজকে দায়িত্ব দিয়েছি, বলেছি, টাকা জমা হবে মামুনের কাছে, টাকা খরচও হবে মামুনের হাত দিয়ে। মামুনকে আমি কর্মনিষ্ঠ, সৎ এবং সজ্জন মনে করেছি।
এ পর্যন্ত যাদেরকে যুক্ত করতে পেরেছি-
কচুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এস.এম. মাহফুজুর রহমান, কচুয়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিকদার হাদিউজ্জামান, কচুয়া সদর হাসপাতালের ডাক্তার দীপাঞ্জয় মিরবর, কচুয়া ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার মামুন …
সবাই খুব অানন্দের সাথে আমার প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। ওনাদের তত্ত্বাবধানে সাকিলের চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে। কেউ যুক্ত হতে চাইলে আমার সাথে যোগাযোগ করুন। সাকিলের চিকিৎসা দিয়ে শুরু, লক্ষটা হচ্ছে, একদিন কেউ এভাবে বিনা চিকিৎসায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে না, কচুয়াতে না, বাংলাদেশের কোথাও না।