বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জে যেসব তাল দেখা যায় তার মধ্যে বড়গুলো সাধারণত ৩ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার সলঙ্গী গ্রামে রফিকুল ইসলামের বাড়ির একটি তালগাছের তাল নজর কেড়েছে সবার—এই গাছের তালের ওজন ছয় কেজি পর্যন্ত হয়েছে। তালগুলো স্বাদেও অতুলনীয়।
বলা চলে, তালগাছ একরকম দেশ থেকে বিলুপ্ত প্রায়। অথচ তালগাছের গুণের শেষ নেই, তালের রস-গুড় তো গ্রাম বাংলার আবহমানকালের এক ঐতিহ্য, সে ঐতিহ্য ধরে রাখা এখন বিশাল এক চ্যালেঞ্জ। তালগাছের চৌকাঠ কাঠ হিসেবে অসাধারণ, খুব সারি হলে তাল গাছের চৌকাঠ অক্ষয়।
তাল এমন একটি ফল যেটি কাঁচা অবস্থায় তালশাঁস হিসেবে খাওয়া হয়, পাকা অবস্থায় খাওয়া হয়, বীজগুলো শুকালে ভেতরের শাঁস খাওয়া হয়। এছাড়া পাকা তালের ছোবড়া গরু ছাগলের উৎকৃষ্ঠ খাবার।
তাই রফিকুল ইসলামের বাড়ির বিশাল তালের এই খবরটি নিঃসন্দেহে আশাব্যাঞ্জক, এতে তালগাছের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে। বীজগুলো সংরক্ষণ করে ছড়িয়ে দিতে পারলে উন্নত প্রজাতি পাওয়া যাবে।
রফিকুল ইসলামের গাছের প্রতিটি তাল বিক্রি হয়েছে ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায়। একেকটি তালের ওজন পাঁচ থেকে ছয় কেজি।
রফিকুল জানান, তার বাবার হাতে লাগানো তালগাছটি পাঁচ-ছয় বছর ধরে ফল দিচ্ছে। গাছে তাল ধরার পর থেকেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে এর সুনাম। প্রতি বছর ৬০ থেকে ৭০টি তাল হয়। একেকটি তাল ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করেন তিনি। তাল বিক্রি করার জন্য কখনোই বাজারে যেতে হয় না তাকে। আগ্রহীরা আগে থেকেই অনেক অনুরোধ করে তালের জন্য বায়না করে রাখেন। এর পরেও সবাইকে তা দিতে পারেন না। চলতি বছরেই এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক তাল বিক্রি করেছেন তিনি।
শুক্রবার তিনি বেড়া বাজারের দুজন স্বর্ণব্যবসায়ীর কাছে দুটি তাল বিক্রি করতে এসেছিলেন। ওই দুই ব্যবসায়ী সপ্তাহখানেক আগে তালের কথা বলে রেখেছিলেন। প্রতিটি ৩০০ টাকা হিসাবে দুটি তাল তিনি বিক্রি করেন ৬০০ টাকায়।
বেড়া বাজারের স্বর্ণব্যবসায়ী ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, রফিকুলের তালের সুনাম শুনে আসছি অনেক দিন ধরে। বার বার বলে রাখার পর আজ তিনি আমাকে একটি তাল দিতে এসেছেন। আমি যে তালটি তার কাছ থেকে নিয়েছি, কৌতুহলবশত ওজন করে দেখলাম সেটি সাড়ে পাঁচ কেজির একটু বেশি। এমন বড় আর সুস্বাদু তাল সত্যিই বিরল।