শাহরিয়ার কবিরের ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে বীরাঙ্গনা চারু বালাকে নির্মূল কমিটির অর্থ সহায়তা প্রদান

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বরেণ্য লেখক, সাংবাদিক ও প্রমাণ্যচিত্র নির্মাতা শাহরিয়ার কবিরের উপস্থিতিতে বীরাঙ্গনা চারু বালার হাতে পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থ সাহায্য তুলে দিচ্ছেন নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা সাহিত্যিক ও সাংবাদিক দিব্যেন্দু দ্বীপ। উপস্থিত রয়েছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির চরভদ্রাসন উপজেলার আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক সাজ্জাদ, শহীদস্মৃতি সংরক্ষণ কমিটি, ফরিদপুরের সদস্য সচিব উতপল সরকার সাগর এবং সমাজকর্মী অ্যড. বীনা লক্ষ্মী সাজ্জাদ।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুলের ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে বীরাঙ্গনা চার বালা-কে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। ৯ মে (২০২১) বিকাল ৩ টায় ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কনফারেন্স রুমে বীরাঙ্গনা ও শহীদজায়াদের নিয়ে এ অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। সভা থেকে বীরাঙ্গনা এবং একাত্তরের নির্যাতীত নারীরা লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের কাছে তাদের দু:খ দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরেও বীরাঙ্গনাদের স্বীকৃতি না পাওয়ার বিষয়টি দু:খজনক। বীরাঙ্গনারা তাদের উপর নিপীড়ণ নির্যাতনের কথা যাতে নির্ভয়ে বলতে পারে এজন্য নির্মূল কমিটি গতম ত্রিশ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে আপনাদের স্বীকৃতির এবং সহযোগিতার জন্য নির্মূল কমিটি সাধ্যমতো চেষ্টা করবে। এসময় তিনি চরভদ্রাসনের বীরাঙ্গনা ভূমিহীন চারু বালা এবং ফরিদপুর সদরে ভাড়া করা একটি রুমে বসবাসরত বীরাঙ্গনা মনোয়ারা বেগমের সাথে কথা বলেন। অন্যান্য বীরাঙ্গনা এবং শহীদ জায়ারা বরেণ্য এ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক এবং সাংবাদিককে পেয়ে তাদের অতীত স্মরণ করে দু:খভারাক্রান্ত হয়ে পড়েন এবং তাদের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা সাহিত্যিক ও সাংবাদিক দিব্যেন্দু দ্বীপের মাধ্যমে শাহরিয়ার কবিরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সভা শেষে নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা দিব্যেন্দু দ্বীপ চারু বালার হাতে পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থ সাহায্য তুলে দেন। এ সময় সামাজিকভাবে স্বীকৃত এবং আত্মস্বীকৃত অন্য আরও আটজন বীরাঙ্গনাকে শাড়ী উপহার দেওয়া হয়। তাদের বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির বহুভাষিক মুখপত্র জাগরণে প্রকাশ করা হবে। উল্লেখ্য, শহীদ জায়া, শহীদ মাতা বীরাঙ্গনা চারু বলা বাস করতেন পদ্মার চরে একটি খুপড়ি ঘরে। সাহিত্যিক ও সাংবাদিক দিব্যেন্দু দ্বীপ চরভদ্রাসনে গণহত্যা নিয়ে গবেষণা করতে গেলে তিনি চারু বালার খোঁজ পান। এরপর চারুবালাকে নিয়ে একটি মর্মস্পর্শী লেখা দিব্যেন্দু দ্বীপ-এর লেখনিতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অনলাইন বহুভাষিক মুখপত্র ‘জাগরণে’ প্রকাশিত হলে এ বিষয়ে বরেণ্য লেখক, সাংবাদিক ও প্রমাণ্যচিত্র নির্মাতা শাহরিয়ার কবির সহ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষিত হয় এবং চারু বালার ভাগ্য বদলাতে শুরু করে। চারু বালা প্রশ্ন করেন, এবং কৈফিয়ত চান যে, কেন তাকে এভাবে অজ্ঞাত স্থানে দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর বসবাস করতে হলো এবং এক রকম ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবীকা নির্বাহ করতে হলো। চারু বালার পাশাপাশি বেঁচে আছেন এমন আরও আটজন বীরাঙ্গনাকে ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে খুঁজে পাওয়া যায়, যাদের অবস্থাও খুব শোচনীয়। চারু বালাকে অর্থ সাহায্য প্রদানের এ অনুষ্ঠানে এরকম আরও সাতজন বীরাঙ্গনা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন শহীদজায়া এবং শহীদ পরিবারের কয়েকজন সদস্য।
অনুষ্ঠানটি নির্মূল কমিটির চরভদ্রাসন উপজেলার আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক সাজ্জাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সঞ্চালনা করেন শহীদস্মৃতি সংরক্ষণ কমিটি, ফরিদপুরের সদস্য সচিব উতপল সরকার সাগর।
 অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সমাজকর্মী অ্যাড. বীনা লক্ষ্মী সাজ্জাদ,  স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নূর মোহাম্মদ এবং সমাজকর্মী জাকারিয়া মাতুব্বর। বাবলু গোস্বামী এবং শেখ দিদারুজ্জামান অনুষ্ঠানটি সমন্বয় করেন।

শাহরিয়ার কবির
মোবাইলে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক, সাংবাদিক ও প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা শাহরিয়ার কবিরের সাথে কথা বলছেন বীরাঙ্গনা মনোয়ারা বেগম।
ফরিদপুর
এ সময় অন্যান্যদের বক্তব্য সীমিত করে উপস্থিত বীরাঙ্গনাদের বক্তব্য শোনা হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি
এ সময় উপস্থিত অন্যান্য বীরাঙ্গনাদের শাড়ী উপহার দেওয়া হয় এবং তাদের বিষয়ে জাগরণে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়।