প্রশ্ন: চালের মূল্য ২৫% বৃদ্ধি পেলে চালের ব্যবহার শতকরা কত শতাংশ কমালে চাল বাবদ খরচ বৃদ্ধি পাবে না?
কীভাবে করবেন?
আচ্ছা, আমি করে দেখাই-
ধরেন, আপনি আগে ১০০ কেজি চাল ব্যবহার করতেন। এবং ১০০ কেজির দাম হচ্ছে ১০০ টাকা।
[শতকরা অংকে সবসময় সব ১০০ ধরবেন। যেহেতু এখানে হিসেবটা টাকারও এবং পরিমাণেরও তাই দুটোই ধরা হয়েছে।]
তাহলে খরচ একই রেখে বর্তমানে আপনি চাল ব্যবহার করবেন = ১০০/১.২৫ = ৮০ কেজি।
আগে ব্যবহার করতেন ১০০ কেজি, এখন ব্যবহার করছেন ৮০ কেজি। অর্থাৎ ব্যবহার কমিয়েছেন ২০%, তাই না?
প্রশ্ন হতে পারে ১০০ কেজি কে ১.২৫ দিয়ে কেন ভাগ করলাম? কারণ, প্রতি কেজি চালের বর্তমান মূল্য দিয়ে মোট পরিমাণকে ভাগ করে বর্তমান দরে কয় কেজি চাল পাওয়া যাবে তা বের করা হয়েছে।
যেটা করেন আপনারা অনেকে-
১.২৫ টাকায় পাওয়া যায় ১ কেজি
১ টাকায় পাওয়া যায় ১/১.২৫ কেজি
∴ ১০০ টাকায় পাওয়া যায় ১০০/১.২৫ কেজি = ৮০ কেজি।
কিন্তু এরকম ঐকিক তো করার প্রয়োজন নেই। ১.২৫ টাকা দরে ১০০ টাকায় বর্তমানে যে ১০০/১.২৫ কেজি চাল পাবেন এটা বুঝতে পারতে হবে।
প্রতি কেজির দাম ২ টাকা হলে ১০ টাকায় কয় কেজি পাবেন তা কি ঐকিক করে বের করেন? করেন না। তখন কী করেন? ১০ কে ২ দিয়ে ভাগ করেন, তাই না? এখানেও তদ্রুপ করা হয়েছে।
১.২৫ কোথায় পেলাম তা কি বুঝতে পেরেছেন?
২৫% দাম বাড়া মানে প্রতি কেজিতে ০.২৫ টাকা বেড়েছে। অর্থাৎ ১ কেজির দাম ০.২৫ টাকা বেড়েছে। এটা একটু বুঝে রাখবেন, অনেক ক্ষেত্রে কাজে লাগবে। যদি বলে ৩০% দাম বেড়েছে তাহলে ১-এ বৃদ্ধি পাবে ০.৩। ১০% বৃদ্ধি পেলে ১ এ বৃদ্ধি পাবে ০.১ টাকা। তাহলে ১ কেজির বর্তমান দাম পেতে হলে আগের ১ টাকা যোগ করে নিতে হবে না?
অতএব, ১০০ টাকায় ১০০ কেজি হিসেবে পূর্বে এক কেজি চালের দাম ছিল ১ টাকা। ২৫% বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন দাম হয়েছে ১.২৫ টাকা।
প্রতি কেজির বর্তমান দাম (এই অংকটির ক্ষেত্রে ১.২৫) দিয়ে ১০০ কেজি কে ভাগ করলে বর্তমান পরিমাণ পাওয়া গেল। আর যেহেতু ধরেছি ১০০, তাই এখান থেকে উত্তর বোঝা যাচ্ছে সাথে সাথে।
♣ যদি হ্রাস পায় তাহলে কী হবে?
অসুবিধা নেই। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। একই নিয়মে করা যাবে। যেমন-
প্রশ্ন: চালের মূল্য যদি ২৫% হ্রাস পায় তাহলে ব্যবহার কী পরিমাণ বৃদ্ধি করলে চাল বাবদ খরচ অপরিবর্তীত থাকবে?
সমাধান: বর্তমানে একই টাকায় আপনি ব্যবহার করতে পারবেন = ০০/০.৭৫ = ১৩৩.৩৩ কেজি।
অতএব, চালের ব্যবহার ৩৩.৩৩% বাড়াতে হবে।
প্রশ্ন হচ্ছে, কেন ০.৭৫ দিয়ে ভাগ করলাম। বিষয়টি খুবই পরিষ্কার। আগে এক কেজির দাম ছিল ১ টাকা। ২৫% কমে যাওয়ায় এখন এক কেজির দাম হবে ০.৭৫ টাকা। কারণ, ১ টাকা থেকে ২৫ পয়শা বিয়োগ করা হয়েছে, বৃদ্ধির সময় যেমন ১ টাকার সাথে ২৫ পয়শা যোগ করেছিলাম। ঠিক আছে না?
এখন র্যানডমলি করুন। আর বোঝার দরকার নেই। না বুঝলে না বুঝেছেন, পরীক্ষার সময় পারবেন। চাকরি পাওয়াটাই বড় কথা। সঠিক উত্তর দিতে পারলেই হল।
প্রশ্ন: চালের মূল্য ১০% বৃদ্ধি পেলে ব্যবহার কত পার্সেন্ট কমাতে হবে?
সমাধান: পূর্বে ১০০ টাকায় ১০০ কেজি ব্যবহার করলে বর্তমানে ব্যবহার করব = ১০০/১.১ = ৯০.৯ কেজি।
আপনার আসলে পরীক্ষার সময় কিছু লেখার দরকারই নেই, যদি প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়। একবারে ১০০/১.১ দিয়ে হিসেব করতে হবে। নিচের দশমিক তুলে দিলে ১০০০/১১ হবে। এরপর তো হিসেবটি খুব কঠিন নয়।
অতএব, ব্যবহার কমাতে হবে = (১০০-৯০.৯) = ৯.১ কেজি বা ৯.১%।
পরীক্ষার সময় সাধারণত হিসেব খুব কঠিন হয় এমন অংক প্রিলিমিনারি ওপরীক্ষায় দেওয়া হয় না। এজন্য দেখবেন এই মূল্য বৃদ্ধির অংকটা সবসময় ২৫% বৃদ্ধি দেখিয়েই পরীক্ষায় আসে। কখনও কখনও একটু পরিবর্তন করে দেয়।
♣ একজন পরীক্ষার্থী আমাকে প্রশ্ন করেছিল, যদি মূল্য ৮০% হ্রাস পায় তাহলেও কি এভাবে করা যাবে?
কেন যাবে না? সবক্ষেত্রেই করা যাবে।
প্রশ্ন: চালের মূল্য যদি ৮০% হ্রাস পায় তাহলে খরচ অপরিবর্তীত রাখতে চালের ব্যবহার কত পার্সেন্ট বাড়াতে হবে?
সমাধান: বর্তমানে ব্যবহার করবে = ১০০/০.২ কেজি = ৫০০ কেজি।
আগে ব্যবহার করত ১০০ কেজি। একই দামে এখন ব্যবহার করতে পারবে ৫০০ কেজি।
বেশি ব্যবহার করছে = (৫০০-১০০) = ৪০০ কেজি। ১০০ কেজিতে ৪০০ কেজি বেশি ব্যবহার করছে। অর্থাৎ ৪০০% ব্যবহার বৃদ্ধি করতে পারবে।
প্রশ্ন: চালের মূল্য যদি ৮০% বৃদ্ধি পায় তাহলে খরচ অপরিবর্তীত রাখতে হলে চালের ব্যবহার কত পার্সেন্ট কমাতে হবে?
সমাধান: বর্তমানে ব্যবহার করবে = ১০০/১.৮ কেজি = ৫৫.৫৬ কেজি।
অতএব, ব্যবহার কমাতে হবে = (১০০-৫৫.৫৬) কেজি = ৪৪.৪৪ কেজি বা ৪৪.৪৪%।