Headlines

নিজ পুত্রকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ভিসি মোহীত উল আলম, উত্তাল ক্যাম্পাস

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহীত উল আলমের পুত্রের নিয়োগ নিয়ে প্রতিবাদে উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা  ছাত্রকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই মুখে মুখে এবং ফেসবুকসহ নানা  সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনার ঝড় চলছিল।

এই বিক্ষোভের জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী  রেজিস্টার এহসান হাবীব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গরু বলে আখ্যায়িত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। তার এই মন্তব্যে শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, সহকারী রেজিস্টার এহসান হাবীব ৩১ জানুয়ারী সকাল ৮ টায় তিনি তার ফেসবুক টাইমলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে “পাবলিকের অনেক গরু প্রতিদিন আমি আমার বাড়ির মাঠে ঘাস খেতে দেখেছি” এমন স্ট্যাটাস দেন।

উল্লেখ্য কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ছেলেকে নিয়োগ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতেই তিনি এমন্তব্য করেছেন বলে দাবি ওঠে।

তবে সহকারী রেজিস্টার এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সকালে অফিস যাওয়ার পথে একটা কবিতার লাইন মনে এল, সেটিকে ভিত্তি করেই আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক টাইমলাইনে লিখেছি।

তবে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, তিনি এ বিষয়ে আরও একটি স্ট্যাটাস দেন তাতে লেখা ছিল,  “বিষয়টা প্রাইভেট পাবলিক না। বিষয়টা হলো মেধার। যোগ্যতার। আপনি পাবলিকের গরু নিবেন নাকি প্রাইভেটের মেধা নিবেন?

সহকারী রেজিস্ট্রারের এই আচরণের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা বুধবার ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ সভা ডাকে।  ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ মিছিলও করে শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রাজ্জাক অনিক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদ বলেন, আগামীকাল উপাচার্য প্রফেস বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে ছাত্রলীগ পাশে আছে বলে উল্লেখ করে তিনি শান্ত থেকে আন্দোলনকে সফল করার জন্য অনুরোধ জানান। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রাজ্জাক অনিক জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

অন্যদিকে সাধারণ  শিক্ষার্থীরা সহকারী রেজিষ্ট্রারের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সোহেল রানা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এ বিষয়টি নিয়ে রেজিষ্ট্রারের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিষয়টিকে খুব দ্রুত সমাধান করা হবে। তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধ্বংসাত্মক কোনও কার্যক্রমে না জড়াতে বলেছেন।

এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকগণ ও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে সহযোগী অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তিনি এই ঘটনায় অত্যন্ত মর্মাহত , লজ্জিত ও অপমানিত। ভবিষ্যতে কেউ যেন এধরণের মন্তব্য করার সাহস না পায় সেজন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য হিসেবে ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করার অহবান জানান।

এদিকে উপাচার্যের পুত্রের নিয়োগ ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘নো টিচার ফ্রম প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি’ শীর্ষক একটি গ্রুপ খুলে ফেসবুকে প্রতিবাদ করে যাচ্ছে।

সংবাদ : বাংলা ট্রিবিউন