ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গো-মাংস নিয়ে আজ নতুন রায় দিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, ‘দেশের কোন নাগরিক কী খাবে, কোন পোশাক পরবে, রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যক্তিগত জীবনে কার সঙ্গে মিশবে, চলবে তা নিয়ে রাষ্ট্র কিছু বলতে পারে না। এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়।’
আদালতের এই রায়ের পর ভারতে গো-মাংস নিয়ে যাবতীয় বিতর্কে নতুন মাত্রা যুক্ত হলো। শুক্রবার শীর্ষ আদালতে রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি জে চেলামেশ্বর বলেছেন, ‘নতুন নতুন মামলা নতুন সব বিষয়কে সামনে নিয়ে আসছে, ব্যক্তিপরিসরের ক্ষেত্র বিস্তৃত হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে পশু হত্যা ও খাবার নিয়ে নাগরিকদের পছন্দ-অপছন্দের প্রসঙ্গ।’
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গো-মাংস ভক্ষণ নিষিদ্ধ রয়েছে। আদালতের এই রায়ের পর এখন ব্যক্তিপরিসরের অধিকার মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি পেয়েছে। তাই খাদ্যাভ্যাসে এই অধিকার রক্ষার দাবি নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের নিষেধকে চাইলে ভারতীয় নাগরিকরা এবার কোর্টে চ্যালেঞ্জ করতে পারে।
আদালতের এই রায়কে ইতিবাচকভাবে দেখছেন লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার ও আইনজীবী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘কে কী খাবে, তা রাষ্ট্র ঠিক করে দিতে পারে না। আশা করি মোদি সরকার এবার আর কারো রান্নাঘরে প্রবেশ করতে চাইবে না।’
উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, গুজরাত, হরিয়ানাসহ ভারতের অধিকাংশ রাজ্যে গোহত্যা নিষিদ্ধ। এছাড়া কিছু রাজ্যে অকেজো গরুকে হত্যা করার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও গোহত্যা নিষিদ্ধ হলেও গোমাংস খাওয়ায় বিধিনিষেধ নেই। রাজ্যভেদে আইনের এই ভিন্নতার মধ্যেই প্রায়ই জবাই করার জন্য গরু বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠী গোরক্ষার নামে নির্ভাবনায় তাণ্ডব চালানোর সুযোগ পাচ্ছিলো। আদালতের এই রায়ে সবকিছুর অবসান ঘটবে বলে ধারনা করছেন সংশ্লিষ্ট সবাই।