পুস্তক বাঁধাই কারখানার বেশিরভাগ শ্রমিকই শিশু

শিশু শ্রমিক

শিশু শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো সহজ। কারণ, তাঁরা খেলার ছলে কাজ করে। কাজে ফাঁকি দিতে তাঁরা জানে না, পাওনা ঠিকমতো বুঝে নিতে জানে না। শিশুদের পিছুটানও কিছু থাকে না। শিশুদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে বটে কিন্তু তাঁদের ন্যূনতম কোনো সুযোগ সুবিধা নাই। খাওয়া-ঘুম, বাথরুম কোনোকিছুরই কোনো ঠিক নেই। খুব অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থেকে পুরনো ঢাকার বিভিন্ন বাঁধাই কারখানায় কাজ করে এসব শিশুরা। রাতদিন কাজ করে তাঁরা। পুস্তক প্রকাশরাও এই সুযোগটি নিয়ে থাকে, কারণ, বাঁধাই কারখানার মালিক তাকিয়ে থাকে প্রকাশকদের দিকে। প্রকাশক কাজ দিলে তবেই তাঁদের কারখানা চলে।

এ কারণে স্বস্তা এই শিশুশ্রমের দায় শুধু বাঁধাই কারখানার মালিকদের নয়, বরং প্রকাশকদেরই বেশি। একটি বই নির্মাণের শেষ ধাপ হচ্ছে–বাঁধাই, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এ সেক্টরটি প্রধানত চলছে শিশুশ্রমের উপর ভর করে।

বাঁধাই কারখানাগুলো বেশিরভাগ অবস্থিত পুরনো ঢাকার বিভিন্ন বাড়ির নিচে। বিভিন্ন বাসা বাড়িতে চলায় কারখানার পরিচালন ব্যয় তুলনামূলক কম, বিদ্যুৎ বিল বাসাবাড়ির হিসেবেই দেয়া হয়, শুধু মিটার রিডারদের কিছু টাকা দিলে হয়। বাসার মালিকও এক্ষেত্রে সুবিধা পায়, কারণ, বাসাবাড়ি দিয়ে যে টাকা তাঁদের উপার্জন হতো সে তুলনায় তাঁরা বেশি ভাড়া পায়।

কিন্তু এই সুযোগগুলো শেষ পর্যন্ত ভোগ করছে কারখানার মালিক এবং বিশেষত প্রকাশনার মালিক। তবে সুযোগের দায় এড়াতে পারে না লেখক এবং পাঠকরাও। 

নিচের ছবিগুলো স্বাক্ষ্য দেয় কতটা অমানবিক শ্রমে বই বাঁধাই কারখানায় নিয়োজিত রয়েছে শিশুরা।

বাঁধাই কারখানায় শিশুশ্রম
বই বহন করছে হাড়জিরজিরে এক শিশু শ্রমিক।

 

এরকম বইগুলো বাঁধাই হয় শিশুদের রক্তঘামে।

বই বাঁধাই কারখানায় শিশুশ্রম

 শিশু শ্রমিক
রাত সাড়ে এগারোটায় পুরো ঢাকায় কাগজিটোলা থেকে এই ছবিটি তোলা।