আপনি কিছুই করছেন না, দীর্ঘদিন আপনি কিছুই করছেন না। শুধু দোষ দিচ্ছেন, একে ওকে সবকিছুকে দোষ দিচ্ছেন। অনেকের দোষ আছে, সিস্টেমের দোষ সবচেয়ে বেশি, কিন্তু এই সিস্টেমটা তো আপনার এবং আমারই তৈরি, দায় তো আমাদেরই, নাকি? দোষ দেওয়া বন্ধ করুন, দায় নিতে হবে। বয়স ত্রিশ পার হয়ে গেল, এখনও যদি আপনার হুঁশ না হয়, তাহলে কবে হবে? কই, এখনো তো আপনি কিছুই করছেন না! চাকরি হল না বলে আর কত চিৎকার করবেন? সব ভাবনা বাদ দিন, ভুলে যান আপনার স্টাটাসের কথা, কিছু না করাটাই সবচেয়ে বাজে স্টাটাস। খুব দামি শার্ট-প্যান্ট পরে, গায়ে পারফিউম মেখে ঘুরে বেড়িয়ে দেখেন তো আপনার দাম বাড়ে নাকি? বরং লোকে জিজ্ঞেস করবে— ‘ও করে কী?’
কিছু করতে হবে। একেবারে হাতের কাছে যা পান —এই মুহূর্তে তাই করুন। যদি ঢাকায় থেকে থাকেন, তাহলে কাওরান বাজার বা শ্যাম বাজার থেকে পাইকাড়ি দরে তরকারি কিনে নিয়ে যেকোন এক কলোনিতে বসে বিক্রী করুন। যেহেতু আপনি শিক্ষিত, খুব সহজেই কাজটি করতে পারবেন, হিসেব বুঝবেন দ্রুত। আপনি অনার্স/মাস্টার্স করা ছেলে/মেয়ে, এতে জনগণের কিচ্ছু যায় আসে না। জনগণ বোঝে— আপনি তাদের জন্য কিছু করছেন কিনা, পরোক্ষভাবে হলেও তারা এটি বোঝে। কলোনিতে তরকারি বেঁচলেও তাদের জন্য কিছু করা হয়, তরকারিটা তারা হাতের কাছে পায়, আপনারও উপার্জন হয়। যদি আপনি গ্রামে থেকে থাকেন, তাহলে এক বিঘা কৃষি জমি বরগা নিয়ে নেমে পড়ুন, হাতে মোটেও টাকা না থাকলে, হাজার পাঁচেক টাকা কারো কাছ থেকে ধার নেন, এই সুযোগটুকু আপনার এখনো আছে নিশ্চয়ই, আছে না? নিজেদেরই তো কিছু জায়গা থাকার কথা। বসে আছেন কেন তাহলে? আজ থেকে মাঠে নেমে পড়ুন।
অবস্থা খুব খারাপ হলে শহরে গিয়ে কোনো একটা দোকানের কর্মচারী হয়ে যান। জাস্ট চোখটা নামান আগে, দেখবেন পেশার অভাব হবে না। অফিসার হওয়ার চিন্তা বাদ দেন, ভেতরে মুরোদ থাকলে তরকারির দোকান করেও নিজের কাজটি করে যেতে পারবেন। আর উপার্জনই যদি আপনার একমাত্র লক্ষ্য হয়, তাহলে তো কোন কথাই নেই, যে কোনো পেশায় থেকে বুদ্ধিমত্তা, শিক্ষা এবং পরিশ্রম কাজে লাগিয়ে ভালো উপার্জন করা যায়। তাহলে শুরু করুন আজই।