Headlines

পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িকীকরণ এবং জাতীয় নাগরিক কমিশন

শাহরিয়ার কবির*

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা প্রায় দু’শ’ বছর শাসনের পর ১৯৪৭ সালে বিদায় নেয়ার আগে ভারত ভেঙ্গে ধর্মের নামে পাকিস্তান নামক একটি কৃত্রিম ও সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছিল। ব্রিটিশদের ঔপনিবেশিক শাসন-পীড়ন-শোষণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে খণ্ড খণ্ড বিদ্রোহ হয়েছে, আন্দোলন ও সংগ্রাম হয়েছেÑ যার ভেতর উল্লেখযোগ্য ছিল ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ, ঔপনিবেশিক শাসকরা যাকে আখ্যায়িত করেছিল ‘সিপাহী বিদ্রোহ’ হিসেবে, অন্যদিকে কার্ল মার্কস বলেছিলেন ভারতের প্রথম স্বাধীনতার যুদ্ধ।

ঔপনিবেশিক শাসকদের বিরুদ্ধে এসব বিদ্রোহ ও যুদ্ধ চরিত্রগতভাবে ছিল অসাম্প্রাদয়িক। ধর্ম-ভাষা-জাতিসত্তা-বিত্ত-লিঙ্গ নির্বিশেষে ভারতবর্ষের সর্বস্তরের মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেছে। নিজেদের শাসন-শোষণ-পীড়ন নির্বিঘ্ন করার জন্য ব্রিটিশরা সাম্প্রদায়িক বিভাজন নীতি গ্রহণের পাশাপাশি তল্পিবাহক ভারতীয় (ব্রাউন সাহিব) তৈরি করেছিল, যাদের মনোজগতে প্রোথিত ছিল দাসত্বের তৃপ্তি। ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ সফল না হলেও ঔপনিবেশিক শাসকরা বুঝেছিলেন, ভারতবর্ষে প্রধান দুই ধর্মীয় সম্প্রদায় ঐক্যবদ্ধ থাকলে তাদের পতন অনিবার্যÑ এ কারণেই তারা হিন্দুদের ভেতর হিন্দুত্ব এবং মুসলমানদের ভেতর ইসলামিত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। ১৮৫৭ সালের পর এই বিভাজন প্রকট হতে থাকে, সংঘটিত হতে থাকে সাম্প্রদায়িক সংঘাত এবং অনিবার্য হয়ে ওঠে ধর্মের নামে দেশ ভাগ।

পাকিস্তানের জনক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ব্যক্তি জীবনে কট্টর ধর্মনিরপেক্ষ ছিলেন। বিয়ে করেছেন অমুসলিম নারীকে এবং তার কন্যাও অমুসলিম বিয়ে করেছিলেন। লাল মদ ও হ্যাম সসেজ তার খাদ্য তালিকায় অপরিহার্য ছিল। নামাজ-রোজার তোয়াক্কা করেননি কখনও। রাজনীতিও আরম্ভ করেছিলেন ভারতের জাতীয় কংগ্রেস থেকে। রক্ষণশীল খিলাফত আন্দোলনের প্রতি গান্ধীর সমর্থন তিনি পছন্দ করেননি। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণেই জিন্নাহ পাকিস্তান রাষ্ট্রের জনক হয়েছেন। রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষী জিন্নাহ যখন দেখলেন কংগ্রেসে গান্ধী, নেহরু, প্যাটেলের মতো জাঁদরেল নেতারা থাকার কারণে স্বাধীন ভারতে তিনি কখনও রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারবেন না। সেজন্য তিনি কবি ইকবাল ও রহমত আলীর ধর্মীয় দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতের বিভাজন এবং মুসলমানদের জন্য সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আগ্রহী হয়েছিলেন। ভারতবর্ষের দশ লাখ নিরীহ মানুষকে জীবন দিয়ে দেশ ভাগের মাসুল দিতে হয়েছিল।

সৃষ্টির পর থেকেই পাকিস্তানী শাসকরা পূর্ব বাংলার বাঙালীদের সন্দেহের চোখে দেখেছে, যখন বাঙালীরা বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানিয়েছিল। যদিও আত্মপরিচয়ের সঙ্কটে বিভ্রান্ত বাঙালী মুসলমান পাকিস্তান আন্দোলন সমর্থন করেছে; কিন্তু এই কৃত্রিম, সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র সম্পর্কে তাদের মোহভঙ্গ হতে বেশি সময় লাগেনি। ’৪৮ সালে সূচিত ভাষা আন্দোলন থেকে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলন ও সংগ্রামের ভেতর দিয়ে অসাম্প্রদায়িক বাঙালিত্বের চেতনা এ দেশের মানুষের মনোজগতে বিস্তার লাভ করেছে এবং দুই যুগ অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বের রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটেছিল।

স্বাধীন বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর সহযোগী যাঁরা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাঁরা দায়বদ্ধ ছিলেন অসাম্প্রদায়িক বাঙালিত্বের চেতনার প্রতি। যে কারণে স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রের চার মূলনীতিতে বাঙালী জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতাও যুক্ত হয়েছিল।

‘গণতন্ত্র’, ‘সমাজতন্ত্র’, ‘জাতীয়তাবাদ’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’র আদর্শ সংবিধানে সীমাবদ্ধ না রেখে সর্বস্তরের পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেছিল বঙ্গবন্ধুর সরকার কর্তৃক গঠিত ‘কুদরাত-এ-খোদা শিক্ষা কমিশন’। দুর্ভাগ্যের বিষয় এই কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের আগেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর প্রধান সহযোগীÑ যাঁরা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং ’৭২-এর সংবিধান প্রণয়ন করেছেন তাঁদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল নেতৃত্বকে হত্যা করেছিল পরাজিত পাকিস্তানপন্থী মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি, স্বাধীন বাংলাদেশে যাদের রাজনীতি সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ১৯৭৫-এর পর থেকেই এই অপশক্তি বাংলাদেশের রাজনীতি, সমাজ, সংস্কৃতির পাশাপাশি শিক্ষানীতিরও ‘ইসলামীকরণ’ তথা পাকিস্তানীকরণ আরম্ভ করেÑ যার মাসুল এখনও আমাদের গুনতে হচ্ছে।

সংবিধানের মতো পাঠ্যপুস্তক থেকেও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা মুছে ফেলে পাকিস্তানী ভাবাদর্শে নতুন প্রজন্ম সৃষ্টির উদ্যোগ প্রথম নিয়েছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমান। এই উদ্যোগ আরও বিস্তৃত করেছেন তার রাজনৈতিক ও পারিবারিক উত্তরাধিকারী জেনারেল এরশাদ এবং খালেদা জিয়া। তাদের সম্মিলিত উদ্যোগে ’৭১-এ পরাজিত মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অবস্থান সুদৃঢ় করেছে, মুক্তিযুদ্ধের যাবতীয় অর্জন মুছে ফেলে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানের মতো মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানাতে চেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েও স্বাধীনতাবিরোধী, মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির নিয়ন্ত্রণ থেকে প্রশাসন মুক্ত করতে পারেননি।

আমরা জানি ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করে শেখ হাসিনা ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আরম্ভ করেছেন, সংবিধানের চার মূলনীতি পুনরুত্থাপন করেছেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কলঙ্কমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি নির্যাতিত নারীদের হৃত মর্যাদা ফিরিয়ে দিয়েছেন। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তাঁর সরকারের বিস্ময়কর অগ্রগতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও মনোযোগ ও প্রশংসা অর্জন করেছে। এর পরও যখন আমরা মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির হুমকি ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ কর্মকাণ্ডের সামনে মহাজোট সরকারের অসহায় আত্মসমর্পণ দেখি তখন স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হই।

২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিনই শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুলের সোয়া চার কোটি শিক্ষার্থীর ভেতর বিনামূল্যে ৩৬ কোটি ২১ লাখ বই বিতরণ করেছে অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে। এটি যে কোন দেশের সরকারের জন্য একটি বড় সাফল্য এতে কোন সন্দেহ নেই। জাতীয় গণমাধ্যমে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে সরকারের এই সাফল্যের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। অথচ তিনদিন পর থেকেই ভয়ঙ্কর সব খবর পত্রিকায় বের হতে লাগল। বিভিন্ন শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে বানান ভুল, বিভ্রান্তিকর ও বিকৃত তথ্যের পাশাপাশি বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বলতম লেখকদের রচনা বাদ দিয়ে সাম্প্রদায়িক রচনার অন্তর্ভুক্তির সংবাদ বিশালতম এক অর্জন এক মুহূর্তে নস্যাত করে দিল। পাঠ্যপুস্তকের সাম্প্রদায়িকীকরণ সম্পর্কে গণমাধ্যমে বলা হলো হেফাজতে ইসলাম এবং তাদের সহযোগী অপরাপর মৌলবাদী গোষ্ঠী গত কয়েক বছর ধরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বিভিন্ন শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘হিন্দুত্ববাদী’ ও ‘নাস্তিক্যবাদী’ আখ্যা দিয়ে আবহমান বাংলার খ্যাতিমান লেখকদের রচনা বাদ দিয়ে তাদের পছন্দের তথাকথিত ইসলামী ভাবধারার রচনা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আন্দোলন করছিল। হেফাজতীদের ধারাবাহিক আন্দোলনের কারণে ২০১৭ সালের পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ হয়ে গেছে মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য থেকে আরম্ভ করে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নিদর্শনসমূহ। লেখকদের এই তালিকায় জ্ঞানদাস, ভারতচন্দ্র, লালন ফকির থেকে আরম্ভ করে হুমায়ুন আজাদের মতো বরেণ্য লেখকরা রয়েছেন।

হিন্দু ও নাস্তিকদের বিরুদ্ধে জামায়াত-হেফাজতীদের জিহাদ নতুন কোন বিষয় নয়। পাকিস্তান আমলে ভাষা আন্দোলনের নায়ক থেকে আরম্ভ করে ’৭১-এর মুক্তিযোদ্ধারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ছিলেন পাকিস্তানীদের ভাষায় ‘হিন্দু’, ‘নাস্তিক’, ‘ভারতের চর’, ‘ইসলামের দুষমন’ ইত্যাদি। পাকিস্তান সৃষ্টির ছয় মাস অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই আইনসভার অধিবেশনে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত যখন পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ঘোষণার দাবি জানিয়েছিলেন তখন তাকে উপরোক্ত বিশেষণে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। একইভাবে ’৭১-এ মুক্তিযুদ্ধকালে জামায়াতের মুখপত্রে দেশের সূর্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধাদেরও একই বিশেষণে ভূষিত করা হয়েছে। পাকিস্তানী শাসকরা উত্তরাধিকার সূত্রেই ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকারের বিভাজন নীতি অর্জন করেছিল, যা প্রয়োগ করে তারা চব্বিশ বছরের প্রায় ঔপনিবেশিক শাসন বাংলাদেশে কায়েম রাখতে পেরেছিল।

বাংলাদেশে ’৭৫ পরবর্তী পাকিস্তানপন্থী সরকারগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে সাম্প্রদায়িক বিভাজন নীতি অনুসরণ করেছে। জামায়াত নেতা এবং ঘাতক আলবদর বাহিনীর অধিনায়ক আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ মুক্তিযুদ্ধের সময় আলবদরদের এক সমাবেশে ঘোষণা করেছিলেন, এ দেশের কোন পাঠাগারে বা বইয়ের দোকানে হিন্দু লেখকদের বই থাকতে পারবে না, পাঠ্যপুস্তক থেকেও হিন্দুদের লেখা বাদ দিতে হবে। এটি ছিল পাকিস্তানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মুজাহিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে আমি এই বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেছিলাম এভাবে জামায়াত নেতারা মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশে গণহত্যার আদর্শিক ক্ষেত্র তৈরি করেছে। ট্রাইব্যুনালে মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল। অথচ যে হেফাজত এখন ’৭১-এর জামায়াতের ভাষায় পাঠ্যপুস্তক থেকে হিন্দু লেখকদের লেখা বাদ দিতে বলছে এর জন্য দণ্ড দেয়ার বদলে তাদের দাবি মেনে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। পাকিস্তান আমলে ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক ছিল না। ’৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশে প্রাথমিক স্তর থেকে ধর্ম শিক্ষা বাধ্যতামূলক হয়েছে। পাকিস্তান আমলে স্কুলে আমরা বিবর্তনবাদ পড়েছি। বাংলাদেশে স্কুলের বিজ্ঞান বইয়েও ডারউইন নিষিদ্ধ হয়ে গেছে।

হেফাজত যাদের লেখা ইসলামবিরোধী বলে বাদ দিতে বলেছে এবং সরকারের শিক্ষা বিভাগ তা অনুমোদন করেছে এদের অন্যতম বরেণ্য কবি, কথাশিল্পী ও গবেষক অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ। তার ‘বই’ কবিতাটি হেফাজতের পরামর্শে বাদ দেয়া হয়েছে। এই কবিতার যে অংশ নিয়ে হেফাজতের আপত্তি সেটি হচ্ছে ‘যে বই তোমায় দেখায় ভয় / সেগুলো কোনো বই-ই নয় / সে বই তুমি পড়বে না। / যে বই তোমায় অন্ধ করে / যে বই তোমায় বন্ধ করে / সে বই তুমি ধরবে না।’ হেফাজতের দাবি হচ্ছে ‘এখানে ধর্ম ও কোরানকে আক্রমণ করা হয়েছে।’ যদিও হুমায়ুন আজাদ এই কবিতায় কোথাও বলেননি কোরান ভয় দেখানো কিংবা অন্ধ বানাবার বই।

চলবে…

* সভাপতি : ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি