একাত্তরের দুর্ধর্ষ খুনি রামপাল-মোংলার রাজাকার আব্দুস সালাম এখনো দুর্বার!

follow-upnews
0 0

নিজস্ব প্রতিবেদক

যথেষ্ট তথ্য হাতে থাকার পরও গত ১০ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে খুনী রাজাকার আব্দুস সালাম সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য নিতে আমরা দু’জন মুক্তিযোদ্ধার সাথে কথা বলেছি। তাদের বয়ানেও উঠে এসেছে একাত্তরে রামপাল উপজেলার ডাকরা নামক স্থানে সংগঠিত গণহত্যার অন্যতম হোতা বর্তমানে মোংলায় বসবাসরত শেখ আব্দুস সালামের কথা। এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোংলা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ ইদ্রিস আলী ইজারাদার বলেন, “আব্দুস সালাম, পিতাঃ মৃত আফসার উদ্দিন শেখ, রাজাকার ছিলো। ও একা না, ওরা দুই ভাই— শেখ সালাম এবং শেখ কালাম রাজাকার ছিলো। ডাকরা গণহত্যার সঙ্গে শেখ আব্দুস সালাম জড়িত ছিলো বলে আমি জানতে পারি। রামপালের মুজিব বাহিনীর কমান্ডার শেখ জলির আমাকে বলেছিলেন যে, শেখ আব্দুস সালাম এবং কালাম ছিলো বাগেরহাটের ষোলো এবং সতেরো নম্বর তালিকাভুক্ত রাজাকার। এবং আমি যেটা জানি— শেখ সালাম সশস্ত্র রাজাকার ছিলো।তার পিতা ছিলো রামপাল থানা পিস কমিটির চেয়ারম্যান। তাহলে সে কতবড় রাজাকার ছিলো!” রাজাকার শেখ আব্দুস সালাম এখন কোনো রাজনীতির সাথে জড়িত আছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বর্ষীয়ান এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, “বর্তমানে সে থানা আওয়ামী লীগের চার নম্বর সদস্য হিসেবে আছে।” এ প্রসঙ্গে স্থানীয় আরেকজন মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইস্রাফিল হোসেন ইজারাদার বলেন, “মোংলার বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদারের পিতা মজিদ হাওলাদারও পেড়িখালী ইউনিয়ন পিস কমিটির সভাপতি ছিলেন। আবু তাহের হাওলাদারের দুই ভাই— নূর মোহাম্মদ হাওলাদার এবং নওশের আলী হাওলাদার ভয়ঙ্কর রাজাকার ছিলো। এর মধ্যে একজন ছিলো আল বদর বাহিনীতে, আরেকজন ছিলো রাজাকার বাহিনীতে।” শেখ আব্দুস সালাম সম্পর্কে তিনি বলেন, “ও রাজাকার ছিলো। ডাকরা গণহত্যায় তার বড় ভূমিকা ছিলো। এমন প্রমাণ পাওয়া যায়— স্ত্রীর হাত থেকে স্বামীকে কেড়ে নিয়ে হত্যা করেছে। সশস্ত্র রাজাকার ছিলেন। লক্ষ্মীখালী সাধুর বাড়ি গণহত্যায় শেখ সালাম এবং শেখ কালাম, দুই ভাই সম্পৃক্ত ছিলো। তাদের পিতা রামপাল থানা পিস কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন, পাশাপাশি বাগেরহাট জেলায় যে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট পিচ কমিটি ছিলো, তার একজন ছিলেন।” এইসব রাজাকারেরা কীভাবে মোংলাতে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসলেন এ প্রসঙ্গে হতাশা প্রকাশ করে মুক্তিযোদ্ধা ইস্রাফিল ইজারাদার বলেন, “এরা আওয়ামী লীগের বড় বড় ডালে বসে আছে এখন। এদের আঘাত করলে পাল্টা আঘাত আওয়ামী লীগের মধ্য থেকেই দিয়ে বসলো! এজন্য চুপচাপ থাকি, আর করবো কী? রাজাকারের আঘাতের ভয় আমরা পাই না, আওয়ামী লীগ আঘাত করে কিনা … আওয়ামী লীগ অভয় দিক— রাজাকারের বংশ আমরা একদিনি পুঁতে ফ্যালাবো।”

খুলনা অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম প্রধান সংগঠন, মুজিব বাহিনীর প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামরুজ্জামান টুকু এ প্রসঙ্গে বলেন, মুসলিম লীগার আফসারউদ্দিন ছিলো রাজাকারদের অন্যতম প্রধান সংগঠক। তার ছেলে রাজাকার সালামের দর্ধর্ষতার কাহিনী এবং ডাকরা গণহত্যার কথা আমি জানতাম। যেহেতু তারা সবসময় ক্ষমতাসীনদের পৃষ্ঠপোষকতা পায়, এ কারণে স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। মোংলা

রাজাকার আব্দুস সালাম ।। ফাইল ফটো।

আব্দুস সালাম সহ বাগেরহাটের আরো নয় জন রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিলো ২০০৯ সালে। বাগেরহাটের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আব্দুস সালাম খানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন মোরেলগঞ্জ উপজেলার গাবতলা গ্রামের আলেয়া বেগম। এই মামলা সম্পর্কে কিছু জানা সম্ভব হয়নি। মামলা সংক্রান্ত খবরটি বিডিনিউজে প্রকাশিত হয়েছিলো।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম  ।। ৪ আগস্ট ২০০৯

বাগেরহাটে দশ ‘রাজাকারের’ বিরুদ্ধে মামলা

মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যার অভিযোগে বাগেরহাটে ১০ ‘রাজাকারের’ বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে আদালতে। বুধবার দুপুরে বাগেরহাটের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আব্দুস সালাম খানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন মোরেলগঞ্জ উপজেলার গাবতলা গ্রামের আলেয়া বেগম। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য মোরেলগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার আসামিরা হলেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলার খাউলিয়া গ্রামের মোসলেম উদ্দিন (৮০), শরিফুল ইসলাম (৬০), সদর উপজেলার মোহম্মদ আলী (৫৫), আব্দুস সালাম (৫০), গোয়ালবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুস সালাম শরীফ (৬০), পূর্ব সরালিয়া চৌদ্দঘর গ্রামের আমির আলী তালুকদার (৫৫), শাহ আলম তালুকদার (৫৫) ও আব্দুল আজিজ তালুকদার (৬০), খারইখালি গ্রামের আব্দুল মান্নান শরীফ (৬৫) এবং মোরেলগঞ্জের আবু হুরাইয়াহ মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল আলিম খান (৫৫)। মামলার এজাহারে আসামিদের ‘রাজাকার’ বলে উল্লেখ করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় (১৯৭১ সাল) বাংলা সনের ৩ ভাদ্র সকাল ৯টায় আসামিরা বাদীর বাড়ি থেকে তার স্বামী মনোহর তালুকদারকে ধরে নিয়ে যায়। এ সময় তারা মনোহর তালুকদারকে মারধর করে এবং ঘরের মালামাল লুট করে। পরে মোরেলগঞ্জ থানার সামনে পানগুছি নদীর পাড়ে নিয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল কবীর চৌধুরী জানান, আদালত থেকে মামলার কপি থানায় আসার পর নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজাকার আব্দুস সালাম সম্পর্কে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে ৭ ফ্রেবুয়ারি ২০০১ তারিখে দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি এখানে উদ্ধৃত হলো।

রামপালের ডাকরা বধ্যভূমি শেখ আব্দুস সালামের নৃশংসতার সাক্ষী                                                                                    

একাত্তরে সে ছিল খুবই দুর্ধর্ষ। বয়সে কম হলেও নৃশংসতায় অন্য অনেককে সে ছাড়িয়ে যায়। বহু হত্যা, লুণ্ঠনের সঙ্গে সে জড়িত ছিল। আজও সে সমান দুর্ধর্ষ বহু অপকর্মের নায়ক। তার নাম শুনলে ভয়ে সবাই আঁতকে ওঠে। কেউ নিজের পরিচয় প্রকাশ করে কিছুই বলতে চায় না। একাত্তরে সে ছিল রাজাকার। বর্তমানে সে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় অবস্থান করছে। অথচ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এই ব্যক্তিটি ১৯৮৬ সালে জাতীয় পতাকায় গুলিবর্ষণ করে। পুলিশ এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল। কিন্তু তার কিছুই হয়নি। এই দুর্ধর্ষ রাজাকারের নাম শেখ আব্দুস সালাম। বাড়ি বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলাধীন বাঁশবাড়িয়া গ্রামে। বর্তমানে থাকে মংলায়। একাত্তরে বহু অপকর্ম, হত্যা, লুণ্ঠনের হোতা হিসাবে নিজে পরিচিতি পাওয়ায় দেশ স্বাধীনের সঙ্গে সঙ্গে সে আত্মগোপন করে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে সে লুকিয়ে ছিল। ১৯৭৫ সালের পর সে আবার আবির্ভূত হয়। তবে নিজ গ্রামে নয়, ঘাটি গড়ে তোলে মংলায়। আজ সে মংলায় বিশাল এক ক্ষমতাধর মানুষ। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে অন্যান্য এলাকার মতো বাগেরহাটেও শান্তি কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটির নেতৃস্থানীয় সদস্যদের মধ্যে ছিল তার পিতা আফসারউদ্দিন; সে রামপাল থানা ‘পিস কমিটি’র সভাপতি ছিল। পিতার অনুপ্রেরণায় ও উৎসাহে ভাই শেখ কামাল ও সে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেয়। বয়সে কম এই সাহসী রাজাকার অল্পদিনেই রাজাকার নেতাদের প্রিয়পাত্র হয় এবং মুক্তিকামী মানুষের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক হিসাবে দেখা দেয়। তার নৃশংসতার অন্যতম সাক্ষী রামপালের ডাকরা বধ্যভূমি। ডাকরা একটি গ্রামের নাম। এখানে একটি মন্দির আছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রায় সাত শ’র মতো নরনারী এখানে সমবেত হয়েছিল। একাত্তরের মে মাসের মাঝামাঝি সময়। রাজাকার-আলবদরদের ছোবল থেকে মুক্তি পেতে তারা দেশত্যাগের সিদ্ধান্ত নেয়। এ কারণে মন্দির প্রাঙ্গণে ডাকরাসহ আশপাশের কালিগঞ্জ, কাশিপুর, বেতকাশী, ফতেপুর প্রভৃতি গ্রাম থেকে এরা এসে জড়ো হয় প্রার্থনার উদ্দেশ্যে। খবর পেয়েছিল রাজাকাররাও। কমান্ডার রজব আলীর নেতৃত্বে ২৩ জন রাজাকার লঞ্চযোগে ডাকরা এসে পৌঁছায়। এই দলে দুর্ধর্ষ রাজাকার শেখ আব্দুস সালামও ছিল। রাজাকার দলটি সেদিন সমবেত জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এক জন মানুষও তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। রাজাকার সালাম সেদিন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষকে হত্যা করে। যা সেখানকার মানুষের মুখে মুখে বলে ফেরে। ভয়ে-আতঙ্কে তাদের গা আজও শিউরে ওঠে। কারণ রাজাকার সালাম রামপালে না থাকলেও নিকটবর্তী মংলায় থাকে। তার চাচাত ভাইয়েরা রামপালেই থাকে। তারা আওয়ামী লীগের নেতা। মংলায় ডেরা বাঁধবার পর ধীরে ধীরে রাজাকার সালাম তার খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসে। ১৯৮৬ সালে সে ছিল এরশাদের দল জাতীয় পার্টির অঙ্গসংগঠন জাতীয় যুব সংহতির মংলা থানা সভাপতি। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিনে সে মংলা শ্রমিক সংঘের কার্যালয়ের সামনে উড়তে থাকা জাতীয় পতাকায় গুলি করে ছিন্নভিন্ন করে দেয়। জনতার ওপরও সে গুলি চালায়। তার অত্যাচারের চিহ্ন নিয়ে আজও এক নরসুন্দর বেঁচে আছে। ১৯৮৮ সালের পৌর নির্বাচনে নিজের ভাই শেখ আব্দুল হাইকে জয়ী করানোর জন্য নিজ কর্মচারী মনাকে গুলি করে হত্যা করে বলে ব্যাপকভাবে প্রচারিত।
১৯৯০-এর এরশাদবিরোধী গণআন্দোলনের সময় স্কুপের ধর্মঘট চলাকালে মিছিলের ওপর সে গুলি ছোড়ে। বিগত বিএনপি আমলে সে দ্রুত তার অবস্থান পরিবর্তন করে মংলা থানা যুবদলের সভাপতি নির্বাচিত হয়। ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে সে জামায়াত প্রার্থী মাওলানা গাজী আবু বকরের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে। বর্তমানে সে আওয়ামী লীগার। মংলা শহরের নিকটবর্তী কাইনমারী গ্রামের অন্যের জমি দখল করে সে চিংড়ি চাষ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। উপরন্তু সে স্টিভেডরিংয়ের ব্যবসায় যুক্ত। খুলনা অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম প্রধান সংগঠক, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামরুজ্জামান টুকু বলেন, মুসলিম লীগার আফসারউদ্দিন ছিল রাজাকারদের অত্যতম প্রধান সংগঠক। তার ছেলে রাজাকারদের অন্যতম প্রধান সংগঠক। তার ছেলে রাজাকার সালামের দুর্ধর্ষতার কাহিনী এবং ডাকরার গণহত্যার কথা তিনি শুনেছেন। যেহেতু তারা সবসময় ক্ষমতাসীনদের পৃষ্ঠপোষকতা পায়; এ কারণে কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না।
জনকণ্ঠ: ০৭-০২-২০০১
সূত্র: সেই রাজাকার— জনকণ্ঠে প্রকাশিত রিপোর্টের সংকলন

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির মোংলা শাখা রাজাকার আব্দুস সালামের ফাঁসি দাবী করে একটি মানববন্ধন আয়োজন করে। সংবাদটি বিভিন্ন পতপত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সারাবাংলা.নেট থেকে নিচের সংবাদটি নেওয়া হয়েছে। সংবাদটি এ পত্রিকায় ৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে প্রকাশিত হয়।

আব্দুস সালামকে রাজাকার আখ্যা দিয়ে ফাঁসি দাবি

মোংলার সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শেখ আব্দুস সালামকে রাজাকার আখ্যা দিয়ে তার বিচার দাবি করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তার অপরাধ সংক্রান্ত ফাইল প্রধানমন্ত্রীর দফতরে রয়েছে বলে দাবি করেছে সংগঠনটি। সংগঠনের মোংলা শাখা সোমবার (৩ জানুয়ারি) সকালে আব্দুস সালামের বিচার চেয়ে মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. জাহাঙ্গির হোসেন খাঁন বলেন, ‘শেখ আব্দুস সালাম স্বীকৃত রাজাকার। তিনি সুবিধাবাদী। মুক্তিযুদ্ধের পর যে দল ক্ষমতায় এসেছে তিনি সুবিধা আদায়ের জন্য সেই দলে ভিড়েছেন। সবশেষে তিনি এখন আওয়ামী লীগে।’ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আব্দুস সালামের কারণে মোংলার ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আজ কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।’ শেখ সালাম রামপালের ডাকরা বধ্যভূমিতে গণহত্যা, অসংখ্য নারীর ইজ্জত লুণ্ঠনকারী দাবী করে তিনি আরও বলেন, ‘সালাম রাজাকার। তার অপরাধ সংক্রান্ত ফাইল প্রধানমন্ত্রীর দফতরে তেলাপোকায় খাচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’ মানববন্ধনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি মোংলা শাখার আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ইজারাদার বলেন ‘রামপালের ডাকরায় মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা হয়েছে। শেখ আব্দুস সালাম নৃশংস ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। আমরা তার ফাঁসি চাই।’ সকাল ১১টার অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে প্রায় দুই হাজার নারী পুরুষ অংশ নেন। এ সময় অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা সালাম মৃধা, বীর মুক্তিযোদ্ধা কুদ্দুস ইজারাদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইস্রাফিল ইজারাদার, উপজেলা মহিলা লীগের সভাপতি কাবেরী হক, যুব লীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ। মোংলা পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শেখ আব্দুস সালাম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আমি ডাকরা স্কুলে ৮ম শ্রেণির ছাত্র ছিলাম। আমি কোনোভাবেই হত্যা ও ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত নই। রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

মোংলা
রাজাকার আব্দুস সালামের ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন। ছবিঃ সময়ের খবর

মোংলা বন্দর যন্ত্রচালিত মাঝিমাল্লা সংঘের নবনির্বাচিত নেতাদের অভিষেক অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন রাজাকার আব্দুস সালাম, প্রধান অতিথি ছিলেন কেসিসি’র মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

মোংলা বন্দর যন্ত্র চালিত মাঝি মাল্লা সংঘের (রেজিঃ নং- ১১৬০) নির্বাচন সম্পূর্ণ হয়েছে ১৩ ফেব্রুয়ারি। বৃহৎ এ সংগঠনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন মোংলা পোর্ট পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও পৌর আ’লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব শেখ আঃ সালাম। এছাড়া আরো দায়িত্বে ছিলেন মোংলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, ১নং চাঁদপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্যা মোঃ তারিকুল ইসলাম। এই আব্দুস সালামই রাজাকার আব্দুস সালাম। পাশাপাশি উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদারের দুই ভাই ছিলেন রাজাকার এবং পিতা ছিলেন পেড়িখালি ইউনিয়ন পিচ কমিটির সভাপতি। এ মাঝি মাল্লা সংঘের নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান হয় ১৩ মার্চ ২০২৩ তারিখে। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজাকার আব্দুস সালাম।

রাজাকার আব্দুস সালাম
মোংলা বন্দর যন্ত্র চালিত মাঝি মাল্লা সংঘের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। ছবিঃ দৈনিক প্রত্যয়

 


সংবাদের সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন, দৈনিক প্রত্যয়, জনকণ্ঠ, বিডিনিউজ২৪, সময়ের খবর

Next Post

সমস্যা যদি হয় বৈশাখী মঙ্গলে ... // লুৎফর রহমান রিটন

সমস্যা যদি হয় বৈশাখী মঙ্গলে তুমি চলে যেতে পারো প্রিয় কোনো জঙ্গলে। তুমি চলে যেতে পারো দূর মরু সাহারায় বাঙালি রইলো তার সংস্কৃতি পাহারায়। সংস্কৃতিসনে তুমি মিশিও না ধর্ম মেশাতে চাইলে সেটা হবে অপকর্ম। ধর্ম ও সংস্কৃতি চিরকালই ভিন্ন সভ্যতা-ইতিহাসে তারই দ্যুতি-চিহ্ন। (না মানুক অন্ধরা না জানুক উকিলে বসন্ত আসিবেই […]
বাংলা নববর্ষ

এগুলো পড়তে পারেন