আমি টকশোতে যা বলেছি: সুলতানা কামাল

follow-upnews
0 0

গত সপ্তাহে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে মৃণাল হকের তৈরি দেবী থেমিসের ভাস্কর্য স্থানান্তরের বিষয়ে টকশো প্রচারিত হয়। ওই টকশোতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের  সাবেক  উপদেষ্টা সুলতানা কামাল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার জের ধরে শুক্রবার হেফাজত নেতারা তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দিয়েছেন। তারা বলেছেন, ‘সুলতানা কামালের পরিণতি নির্বাসিত সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিনের মতো হবে।’ এ বিষয়ে শুক্রবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, ‘হেফাজতের সঙ্গে কোনও সুষ্ঠু বিতর্ক সম্ভব না। তারা কোনও যৌক্তিক তর্ক মানেন না। সাধারণ নাগরিকদের এভাবে শারীরিক আক্রমণের হুমকি বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’ শুক্রবার বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

উল্লেখ্য, বেসরকারি টিভি চ্যানেলে টকশো’র উপস্থাপক ছিলেন রুবায়েত ফেরদৌস। অনুষ্ঠানে সুলতানা কামাল ছাড়াও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য অপু উকিল,  গণজাগারণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার ও হেফাজত প্রতিনিধি মুফতি সাখাওয়াত হোসেন।

টকশোর আলোচনার প্রসঙ্গে সুলতানা কামাল বলেন, ‘‘সে দিনের টকশোতে হেফাজতের একজন ছিলেন। সেখানে প্রশ্ন উঠেছিল, সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় ভাস্কর্য থাকলে আপত্তিটা কিসের? তিনি (হেফাজতের প্রতিনিধি) বলেছিলেন, ‘এটা মূর্তি, ধর্মীয় স্থাপনা। কোর্ট এলাকায় কেন ধর্মীয় স্থাপনা থাকবে?’ এটি ছিল তার কথা। তখন তার জবাবে বলেছি, ‘আমিও আপনার কথায় একমত। আমিও মনে করি, কোর্ট এলাকায় কোনও ধর্মীয় স্থাপনা থাকা উচিত না। মূর্তি যেমন ধর্মীয় স্থাপনা, তেমনি মসজিদও। আপনার কথা অনুযায়ী সেখানে মসজিদও তো থাকা উচিত না। এটা আমি বলেছি তার এই কথার পরিপ্রেক্ষিতেই। কথাটা এভাবেই হয়েছে।’’

এই টকশোকে কেন্দ্র করে হেফাজতের হুমকির বিষয়ে সুলতানা কামাল বলেন, ‘এই দেশে কোনও কথাবার্তাই বলা যাবে না। কোনও যৌক্তিক তর্ক বা ডিবেট সম্ভব না। আমরা বরাবরই বলে এসেছি, এসব মানুষের (হেফাজত নেতাদের) সঙ্গে কোনও সুষ্ঠু ডিবেট সম্ভব না।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের দুঃখটা হলো, তাদের সঙ্গে কোনও সুষ্ঠু বিতর্কই সম্ভব না। যৌক্তিক কোনও আলোচনাই সম্ভব না।’

এ ধরনের হুমকির বিষয়ে সরকারের কাছে কোনও দাবি আছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, সরকার দেখুক, তারা (হেফাজত) প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছেন। তারা (সরকার) এত লোককে গ্রেফতার করছে, এত কিছুতে। যারা শারীরিক আক্রমণের হুমকি দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কে কিছু বললে তো তাকে ধরে নেয়। তারা প্রধান বিচারপতি সম্পর্কেও বলছে। তারা (হেফাজত) সবাইকেই হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। এখন প্রশাসনের  উচিত সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’

তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি, তিনি একজন সম্মানীত ব্যক্তি। তার বিষয়ে বিরূপ কিছু বলা আইনগত নিষিদ্ধ। যারা একটি বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে এভাবে সাধারণ মানুষকে শারীরিক আক্রমণের হুমকি দেন। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’

আপনি কোনও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন কিনা? এর উত্তরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি এখনও এ রকম কিছু চিন্তা করিনি। কারণ আমাকে তো সরাসরি কিছু বলেনি।’


সংবাদটি বাংলা ট্রিবিউনের

Next Post

লংগদুর কয়েকটি গ্রামে পাহাড়িদের ঘরে অগ্নিসংযোগ, বৃদ্ধা নিহত

রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার ৪টি গ্রামে পাহাড়িদের ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এতে ২ শতাধিক বাড়ি পুড়ে গেছে। আগুনে পুড়ে মারা গেছেন গুণাবালা চাকমা (৭০) নামে এক বৃদ্ধা। নিখোঁজ রয়েছেন আরো ৩ জন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার সময় অগ্নিসংযোগ শুরু হয়। চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে উপজেলা প্রশাসন […]
পাহাড়ীরা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে