পিএসটিসি-“নগরাঞ্চলের দুর্যোগ সহনশীলতা বৃদ্ধি প্রকল্প” এর সভা অনুষ্ঠিত

প্রাণোতোষ তালুকদার

প্রাণতোষ তালুকদার

প্রাণোতোষ তালুকদার

৩০ নভেম্বর ২০১৭ রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা, অঞ্চল-৫, ঢাকা সিটি করপোরেশন-এর সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে “নগরাঞ্চলের দুর্যোগ সহনশীলতা বৃদ্ধি প্রকল্প” এর অবহিতকরনণ সভা। উপস্থিত ছিলেন, প্লান ইন্টারন্যাশনাল-এর একদল অভিজ্ঞ কর্মী, যারা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় পারদর্শী এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, নির্বাহী অফিসার, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অফিসার, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও ৪৯ ও ৪৭ নং ওয়ার্ডের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

সভায় প্লান ইন্টারন্যাশনাল-এর অভিজ্ঞ কর্মকর্তা কর্মীদল তাদের মতামত প্রকাশ করে। তারা বলেন, “বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম একটি দুর্যোগপ্রবন দেশ। তাই এ দেশের মানুষকে কীভাবে দুর্যোগ কবলিত এলাকাগুলো থেকে বাঁচানো যায়, সেজন্য ঢাকা শহরের ৪টি ওয়ার্ড নিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। ভূমিকম্প, বন্যা, অগ্নিসংযোগ থেকে কীভাবে যথাসম্ভব নিরপদ থাকা যায়, কীভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা যায় -সেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব ওয়ার্ডগুলোতে নানান রকম ঝুঁকি রয়েছে, বিপদাপন্ন পরিস্থিতিতে বসবাস করছে বেশিরভাগ মানুষ।

ওয়ার্ড পর্যায়ে দুর্যোগের ঝুঁজি নিরূপণ এবং পরিকল্পনা প্রণয়ন করার জন্য একটি দুর্যোগ সহনশীল নগর নির্মাণে প্রয়োজন রয়েছে সমন্বিত উদ্যোগ, বিদ্যমান আইন ও নীতি কাঠামোর আলোকে নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সমূহের মধ্যে সমন্বয়-এর কথা বলেছেন অালোচকবৃন্দ।

ভূমিকম্পসহ নগরাঞ্চলের অন্যান্য দুর্যোগ, যথা- অগ্নিকাণ্ড, জলাবদ্ধতা ইত্যাদির দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাঁস, প্রতিষ্ঠান ও জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কার্যকর সমন্বয়ের মাধ্যমে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পপুলেশন সার্ভিসেস এন্ড ট্রেনিং সেন্টার (পিএসটিসি)–প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন আওতাভুক্ত ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে সাথে নিয়ে  একসাথে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে।

৩৩, ৩৮, ৪৭ এবং ৪৯ নং ওয়ার্ড-এর জনগণকে সচতেন করে এবং কর্মীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের দিয়ে ভূমিকম্প, অগ্নিসংযোগ এর মত দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে ওয়ার্ডগুলোকে এদিক থেকে মডেল হিসেবে দাঁড় করানোর কথা বলেছেন কাউন্সিলরবৃন্দ।

বক্তারা বলেন, নারী, শিশু, বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ভূমিকম্পকালীন প্রস্তুতি বিষয়ে নিয়মিত সভার আয়োজন করতে হবে। এফএসসিডির সহযোগিতায় প্রাইভেট সেক্টরের কর্মীদের ভূমিকম্প ও আগুন প্রতিরোধমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করার কথা বলেছেন তারা।

বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থাকবেই, এজন্য দক্ষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার বলে অাগ্রহ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। প্রতিটি ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য সেবার জন্য একটি মেডিকেল টিম থাকা দরকার বলে মনে করছেন তারা।

প্রত্যেক ওয়ার্ডের আঞ্চলিক কমিটি পরস্পরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবেলা করার কথা বলেছেন।

পুলিশ অফিসার রফিকুল হক বলেন, “আমি এই কমিটিকে যথাসম্ভব সহযোগিতা করব এবং পুলিশ সব সময় জনগণের কাজের পাশে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।”

৪৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল ও আওয়ামীলীগ সভাপতি বলেন, “ফায়ার সার্ভিস-এর ট্রেনিং আপনাদের দরকার। দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় কমিটির লোকদের হাতে আমরা যাতে একটি আই.ডি.কার্ড দিতে পারি “ পাশাপাশি তিনি নাগরিকদের সচেতন হওয়ার কথা বলেছেন।

ফায়ার সার্ভিস ডিফেন্সের অফিসার সায়েদুল বলেন, দুর্যোগ লতানো গাছের মত, একটির সাথে আরেকটি জড়িত। দুযোর্গ সম্পর্কে জানাশোনা থাকতে হবে বলে তিনি উপস্থিত সবাইকে বলেন।

সভায় বক্তব্য রাখেন এবং ‍উপস্থিত ছিলেন, আলহাজ্জ্ব নাসির আহমেদ ভূঁইয়া (৪৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামীলীগ সভাপতি), মোঃ মিজানুর রহমান সেন্টু (৪৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক), নির্বাহী কর্মকর্তা এ.কে.এম মামুনুর রশীদ, পুলিশ অফিসার রফিকুল হক, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অফিসার সায়েদুল হক, লাভলী চৌধুরী (মহিলা কাউন্সিলর), হেলেনা আক্তার (মহিলা কাউন্সিলর), এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনে পপুলেশন সার্ভিসেস এন্ড ট্রেনিং সেন্টার (পিএসটিসি) এর প্রকল্প সমন্বকারী মোঃ ইকবাল হাসান, প্রজেক্ট অফিসার তাহমিনা আক্তার, মনিটরিং অফিসার উর্মিলা নখরেট, ও প্রকল্প সমন্বয়কারী জনাব সুবোধ বিশ্বাস, শাহিদুন নাহার, সুবর্ণা রাণী ভৌমিক, মেহেদী, নাজমুল হক খান প্রমূখ।