এক-অদ্বিতীয়
জীবনের গাণিতিক পাঠে গরমিলে জিওমেট্রি—
সম্পাদ্য-উপপাদ্যের উপমেয় মেলাই।
চোখ বন্ধ করলে ঈশ্বর হয়ে উঠি
মাতৃগর্ভের মতো গভীর অন্ধকার-প্রতিবেশ—
এককে এক দেখি; আলোর বিভ্রম স্পর্শ করে না
শাগালের চিত্রের সমস্ত চরিত্র কথা বলে ওঠে,
‘হে মহামান্য! আমিই আপনি।’
রঙে রঙ মিশে হারায় বর্ণ
ভাবালু বাতাস রেখাগুলো মুছে দেয়
শূন্য ক্যানভাস— যা খুশি আঁকা যায়!
সিংহের শরীরে মানুষের মুখ কিংবা তিন স্তনের নারী
এখানে এক— এক ও অদ্বিতীয়।
পুনরাবৃত্তি
আতর
আর্দ্র জল।।
ছায়া
উপছায়া।।
ভুল
নীলিমা।।
এ ওর শরীরের উত্তাপে উষ্ণ হতে থাকা।
উপেক্ষার দুই গোলার্ধের মাঝে ইচ্ছা-বাঞ্ছারা
মৃত সাপের মতো ঠাণ্ডা হয়ে আসে।
সোহাগ ছোঁয়ালেই সব যজ্ঞে আগুন জ্বলে না;
উষ্কে দেওয়ার অপেক্ষায় থাকে মন্ত্রপূত আয়োজন
ইথার তরঙ্গে ভাসা ঔপনিবেশিক মন সাম্রাজ্যবিস্তারী—
সুষুম্না-সাগরে ঋতুমোকামের শেষ বাস্তুবসন্ত;
ঢেউয়ের আশ্রয়-সীমা তো তীরই!
কোথাও কি আছে যাওয়ার এই পুনরাবৃত্তি ছাড়া?
মেটামরফোসিস
স্পর্শময়তা মুছে সন্ধ্যার মতো একাকিত্বের পাড়ে দাঁড়িয়ে—
স্বেচ্ছামৃত্য আয়োজনে রাত। একবার লাশ হই, একবার ডোম
ব্যবচ্ছেদের বিকল ছুরি চিনে নেয় চেনা সীমা-পরিসীমার ভাষা
মঙ্গল ঘট থেকে গঙ্গা ঘাট পুরাটাই সাজানো শরীরী বেদী
পুঁজারী! কপালে এঁকে দাও স্বস্তিকা চিহ্ন!
জলছায়ার শালুক-সঙ্গমে ভিজছে আর্দ্র আলিঙ্গন
গোপন ব্রত ভেঙে বিরামহীন চিতার আগুন হও, পুড়ে যাই
ব্যাথার বাঁ-পাঁজরে আদমের আদিম পাপ;
গন্ধমের গন্ধে ভেঙে পরে প্রিয় প্রান্তর! ঘরময় ঘুমময় জেগে থাকা—
সর্বস্ব নিয়ে জল মিলে যায় জলের গভীর ঢেউয়ে
নগ্নতার মতো এমন নির্মলতা নেই কোন বিশুদ্ধ বিস্ময়ে
আয়নাছবিতে মৃত পেলিকানের রক্তিম মেটামরফোসিস
রোদের স্বপ্নে নিজেকে এভাবে দেখতে চেয়েছি হয়তো!
দ্বিধার ত্রিবেণী খুলে, নারী! হয়ে ওঠো করুণার দেবী…
এস এম কাইয়ুম, কবি ও চিত্র পরিচালক