রেডিমেড দর্জি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে মিছিল-সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান

sel-2[1]

সদরঘাটস্থ ইষ্ট বেঙ্গল ও লেডিস মার্কেটের রেডিমেড দর্জি শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ঢাকা জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছে। গত ২৭ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের পাশে সাইকেল মাঠে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ফখরুদ্দিন কবির আতিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকনেতা উজ্জ্বল রায়, ছাত্র ফ্রন্ট নেতা মাসুদ রানা, দর্জি শ্রমিক নেতা আবীর মাহমুদ, আবুল কালাম বেপারী, আরিফ হোসেন, মো.আফজাল, মো. ইদ্রিস, ইউনুস আহমেদ, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। সমাবেশ শেষে কয়েক শত শ্রমিকের একটি মিছিল লঞ্চ টার্মিনালের সামনে দিয়ে কোতোয়ালী থানা, পাটুয়াটুলি, বাংলাবাজার হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে একটি প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি পেশ করতে যায়। জেলা প্রশাসকের অনুপস্থিতিতে তাঁর পক্ষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি গত ১৫ বছর ধরে সদরঘাট অঞ্চলে দর্জি শ্রমিকদের মজুরির রেট বাড়েনি। রেডিমেড দর্জি শ্রমিকরা বেশিরভাগ প্রোডাকশন ভিত্তিতে বা পিস রেটে কাজ করে। তারা প্রতি পিস প্লেন ফুল শার্ট সেলাই বাবদ মাত্র ১৩ টাকা আর হাফ শার্ট সেলাইয়ে মাত্র ১১ টাকা মজুরি পায়। অথচ এইসব শার্ট খুচরা বাজারে গড়ে ২০০-২৫০ টাকা দামে বিক্রি হয়। গত ১৫ বছরে দ্রব্যমূল্য-বাড়ী ভাড়া-গাড়ী ভাড়া-গ্যাস-বিদ্যুতের বিল বহুগুণ বেড়েছে। মালিকরাও বেশি দামে কিনছে কাপড়-সুতা-বকরমসহ সকল উপকরণ, কেবল ১৫ বছর আগের দামে কিনছে শ্রমিকের শ্রম। শ্রমিকদের দাবি, ফুল শার্ট সেলাই ৩০ টাকা এবং হাফ শার্ট সেলাই ২৫ টাকা মজুরি নির্ধারণ করতে হবে।”
বক্তারা বলেন, “সদরঘাট এলাকার রেডিমেড দর্জি শ্রমিকরা মজুরি হার বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের নেতৃত্বে গত তিন মাস ধরে আন্দোলন করে আসছে। এর অংশ হিসেবে গত ৬ মার্চ সদরঘাট এলাকায় মিছিল-সমাবেশ করে লেডিস মার্কেট দোকান মালিক সমিতি বরাবরে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। সমিতির সভাপতি সাহেব ইতিমধ্যে মালিকদের সাথে আলোচনা করেছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত মজুরি বৃদ্ধির কোন উদ্যোগ মালিকপক্ষ নিচ্ছে না, বারবার সময় নিয়ে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। উপরন্তু মজুরি বৃদ্ধির দাবি করায় শ্রমিক সংগঠকদের ছাঁটাই-মামলাসহ বিভিন্ন হুমকি প্রদান করা হচ্ছে। যা নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। এই অবস্থায় দাবি আদায়ে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া শ্রমিকদের সামনে বিকল্প নেই।”
সমাবেশ থেকে ঘোষণা করা হয়, আগামী ৫ মে-র মধ্যে মজুরি বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া না হলে শ্রমিকরা কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবে।