রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন নড়বড়ে প্রশাসন // আলী আকবর টাবী

মাদ্রসার অধ্যক্ষ ঘাতক সিরাজ

এক নির্ভীক কন্যার নাম নুসরাত। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সে আপোষ করেনি। একটি মানবিক সমাজ গড়ার জন্য অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে কীভাবে জীবন দিতে হয় তা সে শিখিয়ে গেল। নুসরাত যাবার আগে এই সমাজকে একটি তীব্র চপেটাঘাত করে গেছে। চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেছে সমাজের দগদগে ঘাঁ। রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন কত গভীরে প্রোথিত তা আমাদের দৃষ্টিগোচর হলো।আলী আকবর টাবী

আদালতে মামলা উঠলে দেখা গেল, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে সব ব্যবধান ঘুচে গেছে। ধর্ষকের পক্ষে দাঁড়িয়ে গেছে জামায়াতের অ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন, বিএনপির অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলমগীর ও অ্যাডভোকেট ফরিদউদ্দিন নয়ন এবং কাজীরবাগ আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বুলবুল আহমেদ সোহাগ। (তবে আশার কথা দেরিতে হলেও আওয়ামী লীগ বিতর্কিত আইনজীবী বুলবুলকে বহিষ্কার করেছে)

২৭ মার্চ যৌন নির্যাতনের মামলায় অধ্যক্ষ জেলে গেলে, ২৮ মার্চ পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমান ধর্ষক অধ্যক্ষকে রক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের একাংশকে দিয়ে মিছিল বের করেন এবং মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেন।

সোনাগাজীর ওসিও ধর্ষকের পক্ষ নিয়েছেন। ওসি ধর্ষণকে জায়েজ করার জন্য ধর্ষণকে বলেছেন নাটক। পরবর্তীতে নুসরাত অগ্নিদগ্ধ হলে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওসি বলেছেন, ‘এটা আত্মহত্যাও হতে পারে’।

ছাত্রীর নিরাপত্তার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেননি কেন সাংবাদিকদের এমন একটি প্রশ্নের জবাবে মাদ্রাসার গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক টি. কে. এনামুল করিম বলেছেন, “আমরা তো আসি যাই, আমাদের কাছে এত খোঁজ খবর থাকে না।” জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন নেন অথচ ওনারা আসেন আর যান। ওনাদের কোনো দায় দায়িত্ব নেই। জেলা প্রশাসকের কন্যা যদি যৌন নির্যাতনের স্বীকার হতেন তাহলে তিনি কি এ ধরনেরর দায়সাড়া কথা বলতে পারতেন?

এ সমাজ জীর্ণ সমাজ, এ সমাজ ভাঙতে হবে, নতুন সমাজ গড়তে হবে। চাই ’৭১-এর মতো আরেকটি গণজাগরণ।


আলী আকবর টাবী ফেনি