১৯৯০ সালে এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ ওঠে ধনঞ্জয়ের বিরুদ্ধে। ২০০৪ সালে ফাঁসি হয়। তখন থেকেই উঠেছে প্রশ্ন। এবার আরও জোরালো হচ্ছে সেই প্রশ্নই।
এই বইতে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসির ঘটনা, তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা চালিয়েছেন প্রবাল চৌধুরী, দেবাশিস সেনগুপ্ত, পরমেশ গোস্বামী। এবার তাঁরাই বইয়ের আদলে তুলে ধরছেন তাঁদের গবেষণালব্ধ বক্তব্য।
ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের নাম খবরের কাগজের শিরোনাম হয় ১৯৯০ সালে। সেই বছরের ৫ মার্চ কলকাতার পদ্মপুকুর এলাকার আনন্দ অ্যাপার্টমেন্টের চারতলার ফ্ল্যাটে ১৮ বছর বয়সের আইসিএসই পরীক্ষার্থিনী হেতাল পারেখ খুন হন। ধনঞ্জয় ছিল সেই অ্যাপার্টমেন্টের নিরাপত্তারক্ষী। গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। অভিযোগ ওঠে, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে ওই কিশোরীকে। চলে দীর্ঘ তদন্ত ও বিচারপর্ব। শেষে বাঁকুড়ার কুলুডিহি গ্রাম থেকে কলকাতায় কাজ করতে আসা ধনঞ্জয় দোষী সাব্যস্ত হন, এবং ২০০৪ সালের ১৪ অগস্ট তাঁর ফাঁসি হয়।
দীর্ঘ ১৪ বছরের বিচারপর্বে অনেক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রথমবার ফাঁসির নির্দেশ পিছিয়েও যায়। তবু শেষ রায় হয়— মৃত্যুদণ্ড। শোনা যায়, ফাঁসির আগে সেই সময়ের কারাকর্তার কাছে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় একটি আর্জি করছিলেন। বলেছিলন, ‘আপনি বড় অফিসার। দেখবেন, যে কোনও অভিযোগের তদন্ত যেন ঠিকঠাক হয়।’
ধনঞ্জয় বারবার বলেছিলেন তিনি নির্দোষ। যদিও আদালতে যাবতীয় সাক্ষী, প্রমাণ তাঁর বিরুদ্ধেই যায়। অনেকেই আরুশি হত্যা মামলার সঙ্গে এর তুলনা করেন। অনেকেই বলেন, ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় যে মামলায় অভিযুক্ত ‘প্রমাণিত’ হয়েছেন, তার বহু কিছুই ধোয়াঁশায় ভরা, বহু ‘প্রমাণ’ মূলত গোঁজামিল। এমনকি সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ জড়ো করে এগোলে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ঘটানো ‘অপরাধ’ আদৌ প্রমাণ করা যায় কিনা, এ নিয়েই সন্দেহ তৈরি হয়। এমনকি ওই সাক্ষ্যপ্রমাণ থেকে ভিন্নতর সিদ্ধান্তে পৌঁছনোও সম্ভব ছিল বলে দাবি ওঠে। এবার সেইসব নিয়েই দীর্ঘ সময়ের অনুসন্ধান বইয়ের আকারে প্রকাশিত হচ্ছে। হয়তো তৈরি হবে নতুন কোনও বিতর্ক।
সূত্র: এইবেলা.কম