ভাড়টিয়া হিসেবে যে বিষয়গুলো আপনার অধিকার

follow-upnews
0 0

কোনো বাড়ি ভাড়া নিতে চাইলে বাড়িওয়ালা এক মাসের ভাড়ার বেশি ভাড়া অগ্রিম হিসেবে নিতে পারবেন না।

বাড়িভাড়া আইন সম্পর্কিত


ভাড়াটিয়াদের অধিকার সংরক্ষণ করা হয়েছে ১৯৯১ সালের বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনে। এই অধিকার কোনো বাড়িওয়ালা লঙ্ঘন করলে তার শাস্তি পাওয়ার কথা। আইন অনুযায়ী বাড়িভাড়া-সংক্রান্ত সমস্যা নিষ্পত্তির জন্য ভাড়ানিয়ন্ত্রক রয়েছেন। সাধারণত জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালতগুলো এ দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

বাসা বা অফিস ভাড়া নেওয়ার আগে বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে কিছু করণীয় কাজ রয়েছে, যা ভাড়া নেওয়ার আগে সেরে রাখলে পরে কোন সমস্যায়পড়তে হয় না । একইসাথে আইনি সুরক্ষা পাওয়া যায়। ১৯৯১ সালেবাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনে বেশ কিছু সুরক্ষার কথা বলা আছে।

ভাড়ার ব্যাপারে লিখিত চুক্তি করুন

বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে একটি চুক্তি নামা সই হবে। যাতে থাকবে-চুক্তির মেয়াদ, বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ার নাম, ঠিকানা, উভয় পক্ষের মোবাইল নাম্বার ।

ভাড়ার পরিমাণ, মাসে কত তারিখের মধ্যে তা পরিশোধযোগ্য, পানি সরবরাহ, বিদ্যুত বিল, অন্যান্য সেবা থাকলে তার চার্জ ইত্যাদিও চুক্তিতে অন্তর্ভূক্ত থাকবে।

জামানত থাকলে তা কি প্রতি মাসে ভাড়ার সঙ্গে সমন্বয় হবে, না-কি বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার সময় এককালীন ফেরতযোগ্য সে বিষয়টিও স্পষ্ট থাকতে হবে।

বাড়িওয়ালা এবং ভাড়াটিয়ার মধ্যে যে চুক্তিই হোক না কেন, তা ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়ালস্ট্যাম্পে লিখিতভাবে করতে হবে।

নেবেন ভাড়ার রসিদ
সব বাড়ির মালিক ভাড়াটিয়াকে ভাড়ার বিপরীতে লিখিত রসিদ দিতে বাধ্য। এ রসিদ নির্ধারিত ফরমে সই করে ভাড়াটিয়াকে দিতে হবে। বাড়ির মালিক ভাড়ার রসিদের একটি অংশ (মুড়ি) সংরক্ষণ করবেন। এ রসিদ সম্পন্ন করার দায়দায়িত্ব বাড়িওয়ালার। রসিদ দিতে ব্যর্থ হলে ভাড়াটিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে বাড়িওয়ালা আদায়কৃত টাকার দ্বিগুণ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

একমাসের বেশি অগ্রিম ভাড়া নিতে পারবে না
কোনো বাড়ি ভাড়া নিতে চাইলে বাড়িওয়ালা এক মাসের ভাড়ার বেশি ভাড়া অগ্রিম হিসেবে নিতে পারবেন না।

প্রয়োজনে বাড়ি মেরামত করবে মালিক
বাড়িওয়ালা বাড়ি মেরামত করতে বাধ্য। শর্তানুসারে বাড়িওয়ালা যদি বাড়ির মেরামত না করেন, তাহলে ভাড়াটে ভাড়ানিয়ন্ত্রকের কাছে আবেদন করতে পারেন। ভাড়ানিয়ন্ত্রক নির্ধারিত পদ্ধতিতে নোটিশের মাধ্যমে মেরামতের জন্য নির্দেশ দিতে পারেন বাড়িওয়ালাকে। নিয়ন্ত্রক প্রয়োজন মনে করলে ভাড়াটেকেও তদন্ত সাপেক্ষে ওই খরচের মধ্যে মেরামতের জন্য নির্দেশ দিতে পারেন। ওই খরচ করা টাকা ভাড়ার টাকা থেকে কেটে রাখতে পারবেন ভাড়াটে।

যদি এমন পরিস্থিতি হয় যে বাড়ি মেরামত করা খুব জরুরি, যা না করলে বড় ক্ষতি হবে, তখন ভাড়াটে নিজেই বাড়িওয়ালাকে নোটিশ দিতে পারেন। এই নোটিশ জারির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সময় বেঁধে দিয়ে বাড়িওয়ালাকে অনুরোধ করতে পারবেন। এর সঙ্গে আনুমানিক খরচের একটি হিসাব ভাড়ানিয়ন্ত্রকের কাছে পাঠাতে হবে। যদি এ সময়ের মধ্যে বাড়িওয়ালা মেরামত করতে ব্যর্থ হন, তাহলে ভাড়াটে নিজেই খরচ করতে পারবেন এবং খরচের হিসাব ভাড়ানিয়ন্ত্রকের কাছে পাঠাতে পারবেন।

বাড়িওয়ালা চাইলেই উচ্ছেদ করতে পারবে না
চুক্তি অনুযায়ী ভাড়া পরিশোধ করে থাকলে ভাড়াটিয়াকে হঠাৎ করে উচ্ছেদ করা যায় না। চুক্তিপত্র না থাকলে যদি কোনো ভাড়াটিয়া প্রতি মাসের ভাড়া পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করেন, তাহলেও ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করা যাবে না। যুক্তিসংগত কারণে ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করতে চাইলে যদি মাসিক ভাড়ায় কেউ থাকে, সে ক্ষেত্রে ১৫ দিন আগে নোটিশ দিতে হবে। চুক্তি যদি বার্ষিক ইজারা হয় বা শিল্পকারখানা হয়, তবে ছয় মাস আগে নোটিশ দিতে হবে। চুক্তিপত্রের মেয়াদ শেষ হলেও বাড়িওয়ালা যদি ভাড়া নিয়ে থাকেন, তাহলে ধরে নেওয়া হবে যে বাড়িওয়ালা চুক্তিপত্রটি নবায়ন করেছেন।

মূল গেটের চাবি 

বাড়ির মালিকের কাছ থেকে মূল গেটের চাবি বুঝে নিন।

বিদ্যুতের মিটার রিডিং 

নতুন বাসা বা অফিসে উঠার আগে প্রতি ভাড়াটিয়ার জন্য আলাদা আলাদা যে বৈদ্যতিক মিটার থাকে তার বর্তমান রিড়িং এর পরিমাণ বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়া উভয়কে লিখে রাখুন পরবর্তী মাসের বিদ্যুৎ বিল হিসেবের জন্য।

গিজার, পানির মিটার, ইলেক্ট্রিক লাইন, গ্যাস,ময়লা ফেলা বা দারোয়ান রাখা ইত্যাদি সম্পর্কে বাড়িওয়ালার কাছ থেকে আগেই জেনে নিন।

আশেপাশের পরিবেশ সম্পর্কে বাড়িওয়ালা আপনাকে অবহিত করবেন। এটা তার দায়িত্ব।

এসব বিষয় মেনে চললে আপনার বাড়ি ভাড়া আতংক কিছুটা হলেও কমবে।

সূত্র: অর্থসূচক

ঢাকা শহরে ভাড়াটিয়াদের সমস্যা নিয়ে একটি প্রয়োজনীয় বক্তব্য …

ঢাকা শহরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যের কথা আমরা সকলেই জানি। যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন বাড়ির মালিকরা। যেকোনো সময় তারা বাসা ছেড়ে দিতে বলতে পারেন। কোনো অভিযোগ বা দাবীর কথা তাদের জানালে বলেন, “ভালো না লাগলে চলে যান।” কিন্তু একটা বাসা থেকে ইচ্ছে করলেই চলে যাওয়া যায় না। বিষয়টি বাড়ির মালিকরা ভালোভাবে বোঝেন বলেই এই সুযোগটি তারা কাজে লাগান। কিন্তু বাড়ি ভাড়া আইনে স্পষ্ট করা আছে কী কী সুযোগ সুবিধা ভাড়াটিয়ারা পাবেন। আইনানুযায়ী একজন ভাড়াটিয়া নিয়মানুযায়ী সে তার ভাড়া পরিশোধ করে গেলে বাড়ির মালিক কোনোভাবেই তাকে বাসা ছেড়ে দিতে বলতে পারেন না, যদি না অন্য কোনো গুরুতর সামাজিক অভিযোগ তার বিরুদ্ধে না থাকে।বাড়িতে নিরবিচ্ছিন্ন পানি পাওয়া ভাড়াটিয়ার অধিকার, পানির অধিকার থেকে ভাড়াটিয়াকে বাড়ির মালিক বঞ্চিত করতে পারেন না। প্রতিবছর বাসা সংস্কার করার কথা আইনে বলা আছে। এক মাসের বেশি অগ্রীম নেওয়া যাবে না। বছর বছর ভাড়া বাড়ানো যাবে না, ভাড়া কী হারে কখন বাড়ানো যাবে সেটিও উল্লেখ আছে আইনে। এরকম বেশ কিছু আইন এবং নিয়ম দ্বারা বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটিয়াদের সম্পর্ক নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু আইনের চর্চা এবং প্রয়োগ নেই বলেই বাড়ির মালিকরা যাচ্ছেতাই করার সুযোগ পান। আবার বাড়ির মালিকদের পক্ষ থেকেও অভিযোগ রয়েছে। সরকারি যেসকল প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের সুযোগ সুবোধগুলো নিতে হয় সেখানে তারা ভয়ানক হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। অর্থাৎ গোড়ায় গলদ আছে বলে ধারণা করার যথেষ্ট কারণ আছে। আবার “বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯১” তেও যথেষ্ট সমস্যা আছে। আইনটি অনেক পুরনো বলে অনেক কিছু এখন আর বর্তমান সময়ের সাথে খাপ খায় না। তাই আইনটিকে সংস্কার করে যুগপযোগী করা প্রয়োজন। সর্বোপরি এই ঢাকা শহরে যেহেতু আশি থেকে নব্বই ভাগ মানুষ ভাড়া বাড়িতে থাকে তাই বিষয়টি নিয়ে হেলাফেলার কোনো সুযোগ নেই। অবশ্যই এটিকে একটি নীতিমালার আওতায় আনতে হবে। এবং বাড়ির মালিকেরা যাতে ভাড়া নির্ধারণ সহ অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে আইন মেনে চলে সেদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে মাঝে মাঝে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।

Posted by ফলোআপ নিউজ on Tuesday, January 21, 2020

Next Post

বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

দশ হাজার ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। উক্ত পদে নেয়া হবে সাড়ে আট হাজার পুরুষ এবং দেড় হাজার নারী সদস্য নেয়া। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে। আগ্রহী প্রার্থীদের শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষাসহ লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নিজ নিজ জেলাস্থ পুলিশ […]

এগুলো পড়তে পারেন