চর কুকরী-মুকরী: সৈকতে হরিণের অভয়ারাণ্য।
চর কুকরি-মুকরি হচ্ছে ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার একটি ইউনিয়ন। এখানে শহরের কোলাহল, বিদ্যুতিক বাতি, এমনকি রিকশাও নেই, আছে নিসর্গের মাঝে কিছু মানুষের বসবাস। ভোলা জেলার মূল ভূ-খ- থেকে প্রায় দেড়শ কিলোমিটার দক্ষিণে এর অবস্থান। বঙ্গপোসাগরের কোল ঘেষে জেগে ওঠা এই চরটি স্থানীয়দের কাছে দ্বীপকন্যা নামে পরিচিত।
এখানকার ম্যান-গ্রোভ বনাঞ্চল, বন্যপ্রাণী আর সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে সৌন্দর্যের এক বর্ণিল উপস্থিতি প্রকৃতিপ্রেমি পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকে। ফলে এক সময়কার ওলন্দাজ-পর্তুগীজদের অভয়ারন্য বলে পরিচিত চর কুকরী-মুকরী এখন দেশি-বিদেশি পর্যটক আর ভ্রমণ বিলাসীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
জানা যায়, প্রায় ৪শ থেকে ৫শ বছর আগে পলির স্তর জমতে জমতে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে চর কুকরী-মুকরী নামের এ দ্বীপটি জেগে উঠে। কালের স্বাক্ষী পুরোনো এ চরে আজও আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়া লাগেনি। বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষে মেঘনা-তেতুলিয়ার মোহনায় প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা বিশাল বনাঞ্চল বেষ্টিত এ দ্বীপে বিচরণ করছে অসংখ্য হরিণ, অতিথি পাখি, লাল কাঁকড়া, বুনোমহিষ, বানর, বনবিড়াল, উদবিড়াল, শেয়াল, বনমোরগসহ নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী। শীত মৌসুমে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির আসে এখানে। ইতিমধ্যে আইইউসিএন (IUCN) চর কুকরী মুকরীকে বিশ্ব জীব বৈচিত্রের স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
বর্তমানে কুকরী-মুকরী ইউনিয়নটি বাবুগঞ্জ, নবীনগর, রসুলপুর, আমিনপুর,শাহবাজপুর, মুসলিম পাড়া, চর পাতিলা ও শরীফ পাড়া নিয়ে গঠিত। অনেক সুন্দর জায়গা, পর্যটকও আসে, কিন্তু এখানে বাণিজ্যিকভাবে এখনো কোনো পর্যটনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হয়নি। এর অবশ্য ভালো-মন্দ উভয় দিক রয়েছে।